তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার কী কী উদ্যোগ নিয়েছিল?

Rahul

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার কী? তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার কী কী উদ্যোগ নিয়েছিল?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার কী? তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার কী কী উদ্যোগ নিয়েছিল?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের ষষ্ট অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার কী? তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার কী কী উদ্যোগ নিয়েছিল?

তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার কী?

ভারত ছাড়ো আন্দোলন চলাকালে 1942 খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে মেদিনীপুরের তমলুক অঞ্চলে সতীশচন্দ্র সামন্তের নেতৃত্বে ব্রিটিশের কর্তৃত্বমুক্ত যে স্বাধীন জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়, তা ইতিহাসে ‘তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার’ নামে পরিচিত। এই সরকারের নেতৃত্বে স্থানীয় যুবকদের নিয়ে গড়ে ওঠে ‘বিদ্যুৎ বাহিনী’ নামক স্বেচ্ছাসেবক সেনাদল আর নারীদের নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘ভগিনী সেনা’। শেষপর্যন্ত ব্রিটিশের প্রত্যাঘাত এবং ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে 1944 খ্রিস্টাব্দ নাগাদ এই সরকারের পতন ঘটে।

তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার কী কী উদ্যোগ নিয়েছিল?

ভারত ছাড়ো অন্দোলনের সময় সতীশচন্দ্র সামন্তের নেতৃত্বে মেদিনীপুরে গড়ে ওঠা তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার ব্রিটিশ বিরোধী সর্বাত্মক আন্দোলনে শামিল হয়েছিল। পাশাপাশি 1942 খ্রিস্টাব্দে ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত মেদিনীপুরে ত্রাণসংগ্রহ ও বণ্টনের কাজে তার জোর দিয়েছিল। সালিশি সভার আয়োজন করে গ্রাম্য বিবাদের নিস্পত্তিতেও তারা উদ্যোগ নিয়েছিল।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

তাম্রলিপ্ত সরকারের নেতৃত্বে কারা ছিলেন?

এই সরকারের প্রধান নেতা ছিলেন সতীশচন্দ্র সামন্ত। এছাড়াও স্থানীয় নেতা, যুবক ও মহিলারা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

বিদ্যুৎ বাহিনী ও ভগিনী সেনা কী?

1. বিদ্যুৎ বাহিনী – তাম্রলিপ্ত সরকারের অধীনে গঠিত একটি স্বেচ্ছাসেবক যুব সেনাদল, যা ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামে অংশ নেয়।
2. ভগিনী সেনা – নারীদের নিয়ে গঠিত একটি সংগঠন, যা স্বাধীনতা আন্দোলন ও সমাজসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ করেছিল।

তাম্রলিপ্ত সরকার কী ধরনের কাজ করেছিল?

1. ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন সংগঠিত করা।
2. 1942 সালের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ বিতরণ।
3. গ্রামীণ সালিশি ব্যবস্থার মাধ্যমে স্থানীয় বিবাদের নিষ্পত্তি করা।
4. স্বশাসন ও জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি চালু করা।

তাম্রলিপ্ত সরকারের পতন কীভাবে হয়?

1944 সালের মধ্যে ব্রিটিশ সরকারের দমননীতি ও ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ব্যর্থতার ফলে তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের পতন ঘটে।

তাম্রলিপ্ত সরকারের ঐতিহাসিক গুরুত্ব কী?

এটি ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে একটি স্বাধীন সমান্তরাল সরকার গঠনের সাহসী উদ্যোগ, যা স্থানীয় জনগণের স্বাধীনতা সংগ্রামে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল।

তাম্রলিপ্ত নামটি কোথা থেকে এসেছে?

প্রাচীন বাংলার তাম্রলিপ্ত (তমলুক অঞ্চল) সভ্যতার নামানুসারে এই সরকারের নামকরণ করা হয়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার কী? তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার কী কী উদ্যোগ নিয়েছিল?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার কী? তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার কী কী উদ্যোগ নিয়েছিল?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের ষষ্ঠ অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে ছাত্রদের অবদান আলোচনা করো।

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে ছাত্রদের অবদান আলোচনা করো।

রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন (1953 খ্রিস্টাব্দ) কেন গঠিত হয়েছিল? ভারতের রাজ্য পুনর্গঠন এর ভিত্তিগুলি লেখো।

রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন (1953 খ্রিস্টাব্দ) কেন গঠিত হয়েছিল? ভারতের রাজ্য পুনর্গঠন এর ভিত্তিগুলি লেখো।

দার কমিশন কী? দার কমিশন (1948 খ্রিস্টাব্দ) কেন গঠিত হয়েছিল?

দার কমিশন কী? দার কমিশন (1948 খ্রিস্টাব্দ) কেন গঠিত হয়েছিল?

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

সময়ের মূল্য – প্রবন্ধ রচনা

ঘন মাধ্যম থেকে লঘু মাধ্যমে আলোকরশ্মির প্রতিসরণের চিত্র অঙ্কন করো এবং কৌণিক চ্যুতি নির্ণয় করো।

লঘু মাধ্যম থেকে ঘন মাধ্যমে আলোকরশ্মির প্রতিসরণের চিত্র অঙ্কন করো এবং কৌণিক চ্যুতি নির্ণয় করো।

অবতল দর্পণ কাকে বলে? দন্ত চিকিৎসকগণ অবতল দর্পণ ব্যবহার করেন কেন?

গোলীয় দর্পণের মেরু, বক্রতা কেন্দ্র, বক্রতা ব্যাসার্ধ ও প্রধান অক্ষ কাকে বলে?