তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কী?

Souvick

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কী?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কী?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কী?
Contents Show

তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কী?

তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিম্নলিখিত সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত –

  • তেজস্ক্রিয় পদার্থগুলি পুরু দেয়ালযুক্ত সিসার পাত্রে রাখা উচিত।
  • তেজস্ক্রিয় পদার্থের কাছাকাছি কাজ করার সময় সিসার তৈরি পোশাক ও গ্লাভস ব্যবহার করা উচিত।
  • তেজস্ক্রিয় পদার্থের পরিবেশে কাজ করার সময় একটি বিশেষ ধরনের পোশাক ব্যবহার করা হয়। এই পোশাকটিতে এমন এক পদার্থ থাকে যা তেজস্ক্রিয় বিকিরণের দ্বারা প্রভাবিত হয়। যদি কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, তেজস্ক্রিয় বিকিরণের একটি নির্দিষ্ট সীমার বেশি বিকিরণ তার দেহে পড়েছে তাহলে সেই ব্যক্তিকে বিশ্রামের জন্য উপদেশ দেওয়া হয়।
  • বর্তমানে দূরনিয়ন্ত্রক যন্ত্রের সাহায্যে সমস্ত তেজস্ক্রিয় পদার্থকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়, যাতে কোনো ব্যক্তিকে ওই পদার্থের কাছাকাছি না যেতে হয়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

তেজস্ক্রিয় বিকিরণ কী এবং এটি কেন ক্ষতিকর?

তেজস্ক্রিয় বিকিরণ হলো শক্তির একটি রূপ যা অস্থিতিশীল পরমাণু থেকে নির্গত হয়। এটি মানবদেহের টিস্যু এবং DNA -র ক্ষতি করতে পারে, যা ক্যান্সার, বিকিরণজনিত অসুস্থতা এবং দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে।

তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে সুরক্ষার মূল নীতিগুলো কী কী?

সুরক্ষার মূল নীতিগুলো হলো—
1. সময় (Time) – বিকিরণের উৎসের কাছে থাকার সময় সীমিত করুন।
2. দূরত্ব (Distance) – উৎস থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকুন। দূরত্ব বাড়লে বিকিরণের মাত্রা দ্রুত হ্রাস পায়।
3. আড়াল (Shielding) – সিসা, কংক্রিট বা জল এর মতো ঘন পদার্থ দ্বারা নিজেকে আড়াল করুন।

তেজস্ক্রিয় পদার্থ সংরক্ষণের জন্য সিসার পাত্রই কি একমাত্র বিকল্প?

না, সিসা একটি জনপ্রিয় এবং কার্যকর বিকল্প তার উচ্চ ঘনত্বের কারণে, তবে বিকিরণের ধরণ ও শক্তি অনুযায়ী পুরু কংক্রিট, ইস্পাত, বা সিসাযুক্ত কাঁচের মতো অন্যান্য ঘন পদার্থও ব্যবহার করা হয়।

সাধারণ কাপড়ের বদলে বিশেষ পোশাক (সিসার এপ্রন) ব্যবহার করা কেন জরুরি?

সাধারণ কাপড় আলফা এবং কিছু বিটা কণা আটকাতে পারে না। সিসার তৈরি বিশেষ পোশাক (যেমন – এপ্রন বা গ্লাভস) গামা রশ্মির মতো অনুপ্রবেশকারী বিকিরণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোকে আড়াল করতে সাহায্য করে।

বিকিরণমাপক যন্ত্র (Dosimeter) কী এবং এটি কীভাবে কাজ করে?

বিকিরণমাপক যন্ত্র হলো একটি ছোট বহনযোগ্য ডিভাইস যা কর্মীরা তাদের পোশাকে পরে। এটি ব্যক্তির প্রাপ্ত মোট বিকিরণের মাত্রা পরিমাপ করে ও রেকর্ড করে। এটি একটি প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা হিসেবেও কাজ করে, যাতে নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করার আগেই কর্মীকে সতর্ক করা যায়।

যদি কেউ বেশি মাত্রার তেজস্ক্রিয় বিকিরণের সংস্পর্শে আসে, তাহলে তার কী করা উচিত?

তাকে অবিলম্বে কাজ বন্ধ করে সেই পরিবেশ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তারপর দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। চিকিৎসক কিছু ওষুধ (যেমন – Potassium Iodide, যা থাইরয়েড গ্রন্থিকে তেজস্ক্রিয় আয়োডিন থেকে রক্ষা করে) বা অন্যান্য চিকিৎসা প্রদান করতে পারেন।

দূরনিয়ন্ত্রক যন্ত্র (Remote Handling Tools) ব্যবহার করা কেন গুরুত্বপূর্ণ?

এই যন্ত্রগুলো (যেমন রোবোটিক আর্ম, ম্যানিপুলেটর) অপারেটরকে উৎস থেকে নিরাপদ দূরত্বে থেকে কাজ করার সুযোগ দেয়। এর ফলে “দূরত্ব” এবং “আড়াল”—দুটি সুরক্ষা নীতিই একসাথে প্রয়োগ করা যায়, যা বিকিরণের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমায়।

সাধারণ মানুষ কি কখনো তেজস্ক্রিয় বিকিরণের সম্মুখীন হতে পারে?

হ্যাঁ, আমরা সবাই প্রাকৃতিক উৎস (যেমন সূর্য, মাটি, খাদ্য) থেকে প্রতিদিন সামান্য মাত্রার পটভূমি বিকিরণের সম্মুখীন হই। তবে এটি সাধারণত ক্ষতিকর নয়। উপরিউক্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা মূলত পেশাদারদের জন্য প্রযোজ্য, যেমন – পারমাণবিক কেন্দ্র, চিকিৎসা (রেডিওলজি), বা গবেষণাগারে কাজ করা মানুষদের জন্য, যেখানে বিকিরণের মাত্রা অনেক বেশি হয়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কী?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কী?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসকে শনাক্ত করবে কীভাবে?

হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসকে শনাক্ত করবে কীভাবে?

দেখাও যে H₂S গ্যাস অম্লধর্মী। অথবা, দেখাও যে H₂S দ্বি ক্ষারীয় অ্যাসিড?

দেখাও যে H₂S গ্যাস অম্লধর্মী। অথবা, দেখাও যে H₂S দ্বি ক্ষারীয় অ্যাসিড?

হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসকে শুষ্ক করতে গাঢ় H₂SO₄ বা অনার্দ্র ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড ব্যবহার করা হয় না কেন?

হাইড্রোজেন সালফাইড শুষ্ক করতে কেন গাঢ় H₂SO₄ বা অনার্দ্র CaCl₂ ব্যবহার করা হয় না?

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসকে শনাক্ত করবে কীভাবে?

দেখাও যে H₂S গ্যাস অম্লধর্মী। অথবা, দেখাও যে H₂S দ্বি ক্ষারীয় অ্যাসিড?

হাইড্রোজেন সালফাইড শুষ্ক করতে কেন গাঢ় H₂SO₄ বা অনার্দ্র CaCl₂ ব্যবহার করা হয় না?

হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস প্রস্তুতিতে গাঢ় HNO₃ ব্যবহার করা হয় না কেন?

হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস প্রস্তুতিতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ব্যবহার করা হয় না কেন?