এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল? ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি সম্পর্কে আলোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল? ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি সম্পর্কে আলোচনা করো।“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের ষষ্ট অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?
1928 খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ‘ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি’ গড়ে উঠেছিল শ্রমিকদের কাজের সময়সীমা হ্রাস, সর্বনিম্ন মজুরির হার নির্ধারণ, জমিদারি প্রথার অবসান ঘটানো, শ্রমিক শ্রেণির আর্থ-সামাজিক উন্নতি সাধন, তাদের মধ্যে সমাজতান্ত্রিক ভাবধারার জাগরন ঘটানো প্রভৃতির উদ্দেশ্যে। কাজী নজরুল ইসলাম, মুজাফ্ফর আহমেদ প্রমুখের উদ্যোগে ‘লাঙল’ ও ‘গণবাণী’ পত্রিকাকে মুখপত্র করে প্রাথমিকভাবে কংগ্রেসের মধ্যে থেকে ও পরবর্তীতে কমিউনিস্ট আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত থেকে শ্রমিক-কৃষক শ্রেণির স্বার্থরক্ষা করতে চেয়েছিল এই প্রতিষ্ঠান।
ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি সম্পর্কে আলোচনা করো।
ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টির ভূমিকা –
ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনকে শক্তিশালী করার ব্যাপারে ‘ওয়ার্কস অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি’ শ্রমিক ও কৃষকদের সংঘবদ্ধ করে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতে ব্যাপক হারে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। এবং সরাসরিভাবে কাজ করার ব্যাপারে কমিউনিস্ট পার্টির নানা অসুবিধা থাকায় তারা শ্রমিক ও কৃষকদের স্বার্থে 1926 খ্রিঃ 1 নভেম্বর ‘দি লেবার স্বরাজ পার্টি অব দি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস’ নামে কলকাতায় একটি সংগঠন গড়ে তোলা হয় পরে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ওয়ার্কস অ্যান্ড পেজেন্টস পাটি।
ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টির সর্বভারতীয় দল –
ওয়ার্কস অ্যান্ড পেজেন্টস পাটির অনুরূপ বোম্বাই, পাঞ্জাব প্রভৃতি স্থানেও গড়ে ওঠে। এইভাবে ভারতের বিভিন্ন জায়গার শ্রমিক ও কৃষকদের দল গড়ে উঠতে থাকলে নেতারা এর জন্য কলকাতার একটি সর্বভারতীয় দল সম্মেলন আহ্বান করেন।
ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টির দাবি –
এই দলের দাবিসমুহ হল –
- জমিদারি প্রথার অবসান,
শ্রমিক ও কৃষকদের স্বার্থরক্ষা করা, - পূর্ণ স্বাধীনতা প্রভৃতি।
ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টির নারী নেতৃত্ব –
এই আন্দোলনে যেসব নারীরা নেতৃত্ব দেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেন তারা হলেন মনিবেন প্যাটেল, সারদা মেহতা, মিঠুরেন প্যাটেল প্রমুখরা।
ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টির উপসংহার –
আন্দোলনের ব্যাপকতায় বিচলিত সরকার একটি তদন্ত কমিশন বসালে সেই কমিশন খাজনা বৃদ্ধিকে 6.03 শতাংশ বৃদ্ধি করে। অবশেষে কৃষকরাও খাজনা দিতে সম্মত হলে বারদৌলি সত্যাগ্রহের পরিসমাপ্তি ঘটে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি কখন এবং কোথায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?
1928 সালে কলকাতায় ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?
ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল –
1. শ্রমিকদের কাজের সময়সীমা হ্রাস করা।
2. সর্বনিম্ন মজুরির হার নির্ধারণ।
3. জমিদারি প্রথার অবসান।
4. শ্রমিক-কৃষকদের আর্থ-সামাজিক উন্নতি।
5. সমাজতান্ত্রিক চেতনার প্রসার।
ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি প্রতিষ্ঠায় কারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন?
কাজী নজরুল ইসলাম, মুজাফ্ফর আহমেদ প্রমুখ নেতারা এই দল গঠনে অগ্রণী ভূমিকা নেন।
ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টির মুখপত্র হিসেবে কোন পত্রিকাগুলো কাজ করত?
‘লাঙল’ ও ‘গণবাণী’ পত্রিকা এই দলের মুখপত্র হিসেবে কাজ করত।
ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টির পূর্ব নাম কী ছিল?
1926 সালের 1 নভেম্বর এটি ‘দি লেবার স্বরাজ পার্টি অব দি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস’ নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, পরে নাম পরিবর্তন করে ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি রাখা হয়।
ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টির প্রধান দাবিগুলো কী ছিল?
ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টির প্রধান দাবিগুলো ছিল –
1. জমিদারি প্রথার উচ্ছেদ।
2. শ্রমিক-কৃষকদের স্বার্থরক্ষা।
3. ভারতে পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন।
ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টির নারী নেতৃত্বে কারা ছিলেন?
মনিবেন প্যাটেল, সারদা মেহতা, মিঠুরেন প্যাটেল প্রমুখ নারী নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টির ভূমিকা কী ছিল?
এটি শ্রমিক ও কৃষকদের সংঘবদ্ধ করে ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনকে শক্তিশালী করেছিল।
ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি কি সর্বভারতীয় সংগঠন ছিল?
হ্যাঁ, কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হলেও পরে বোম্বাই, পাঞ্জাব প্রভৃতি অঞ্চলে এর শাখা গড়ে উঠে এবং একটি সর্বভারতীয় সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টির শেষ পরিণতি কী হয়েছিল?
সরকারের দমননীতির মুখে এবং কৃষকদের আপসের কারণে এটি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল? ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি সম্পর্কে আলোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল? ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি সম্পর্কে আলোচনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের ষষ্ঠ অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন