অলিন্দ যুদ্ধ সম্পর্কে যা জানো লেখো।

Rahul

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “অলিন্দ যুদ্ধ সম্পর্কে যা জানো লেখো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “অলিন্দ যুদ্ধ সম্পর্কে যা জানো লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

অলিন্দ যুদ্ধ সম্পর্কে যা জানো লেখো।
Contents Show

অলিন্দ যুদ্ধ সম্পর্কে যা জানো লেখো।

অলিন্দ যুদ্ধ

1930 খ্রিস্টাব্দের 8 ডিসেম্বর বিনয় বসু, বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিং অভিযান করেন এবং সেখানে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে তাঁদের গুলির লড়াই চলে, এই ঘটনাই ভারতীয় স্বাধীনতার ইতিহাসে অলিন্দ যুদ্ধ নামে পরিচিত। এই অভিযানের ঘটনা ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের এক বিশেষ উল্লেখযোগ্য ঘটনা।

অলিন্দ যুদ্ধের অভিযান ও আক্রমণ –

1930 খ্রিস্টাব্দেই বিনয় বসু পুলিশ ইন্সপেক্টর লেম্যানকে হত্যা করেন এবং তার কয়েকদিন পরে বিনয় বসু, বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্তের সঙ্গে রাইটার্স বিল্ডিংয়ে আক্রমণ করেন এবং কারাধ্যক্ষ সিম্পসনকে হত্যা করেন 1930 খ্রিস্টাব্দের 8 ডিসেম্বর।

অলিন্দ যুদ্ধ –

রাইটার্স বিল্ডিংয়ে আক্রমণের খবর পেয়ে ব্রিটিশ পুলিশ বাহিনী বিপ্লবীদের ঘিরে ফেলে এবং রাইটার্স বিল্ডিংয়ের বারান্দায় দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র গুলির লড়াই চলে।

অলিন্দ যুদ্ধের ফলাফল –

বিপুল পরিমাণ ব্রিটিশ বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করার মতো পর্যাপ্ত গুলি বিনয়, বাদল, দীনেশের ছিল না তবুও তারা দুর্দান্ত বীরত্বের সঙ্গেই যুদ্ধ চালায় কিন্তু পরাজয় হবে জেনে পুলিশের থেকে বাঁচবার জন্য বাদলগুপ্ত পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যা করেন এবং বিনয় বসু ও দীনেশ গুপ্ত গুলি করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিনয় বসু হাসপাতালেই মারা যান।

অলিন্দ যুদ্ধের বিচার –

হাসপাতালে চিকিৎসার পর দীনেশ গুপ্ত সুস্থ হয়ে উঠলে তার বিচার হয় এবং তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, 1931 খ্রিস্টাব্দে দীনেশ গুপ্তের ফাঁসি হয়।

অলিন্দ যুদ্ধের মন্তব্য –

পূর্ববঙ্গের ঢাকা জেলার বাসিন্দা বিনয় বসু, বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে আত্মত্যাগের এবং আমৃত্যু সংগ্রামের যে বিরল নিদর্শন রেখেছেন তা এক কথায় অতুলনীয়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

অলিন্দ যুদ্ধ কী?

1930 সালের 8 ডিসেম্বর বিনয় বসু, বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিং-এ ব্রিটিশ পুলিশের বিরুদ্ধে একটি সশস্ত্র অভিযান চালান। এই ঘটনাই ইতিহাসে “অলিন্দ যুদ্ধ” নামে পরিচিত।

অলিন্দ যুদ্ধের উদ্দেশ্য কী ছিল?

এই অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল রাইটার্স বিল্ডিং-এ অবস্থিত ব্রিটিশ শাসনের প্রতীক কারাধ্যক্ষ সিম্পসনকে হত্যা করা এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিপ্লবী আন্দোলনকে জোরদার করা।

অলিন্দ যুদ্ধে কারা অংশগ্রহণ করেছিলেন?

বিনয় বসু, বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত—এই তিন বিপ্লবী অলিন্দ যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।

অলিন্দ যুদ্ধের সময় কী ঘটেছিল?

1. বিপ্লবীরা রাইটার্স বিল্ডিং-এ প্রবেশ করে সিম্পসনকে গুলি করে হত্যা করেন।
2. ব্রিটিশ পুলিশের সঙ্গে তাদের তীব্র গুলিবিনিময় হয়।
3. গোলাবারুদ ফুরিয়ে গেলে বাদল গুপ্ত পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যা করেন।
4. বিনয় বসু ও দীনেশ গুপ্ত গুলি করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন, কিন্তু বিনয় বসু হাসপাতালে মারা যান এবং দীনেশ গুপ্ত বেঁচে যান।

অলিন্দ যুদ্ধের পরিণতি কী ছিল?

1. বাদল গুপ্ত ও বিনয় বসু মারা যান।
2. দীনেশ গুপ্তকে গ্রেফতার করে বিচার করা হয় এবং 1931 সালে তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়।

অলিন্দ যুদ্ধের ঐতিহাসিক গুরুত্ব কী?

এটি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, যা বিপ্লবী আন্দোলনকে নতুন গতি দেয় এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে যুবসমাজকে অনুপ্রাণিত করে।

অলিন্দ যুদ্ধের বিপ্লবীদের জন্মস্থান কোথায় ছিল?

অলিন্দ যুদ্ধের বিপ্লবীদের জন্মস্থান ছিল –
1. বিনয় বসু – ঢাকা জেলা (বর্তমান বাংলাদেশ)।
2. বাদল গুপ্ত – ঢাকা জেলা।
3. দীনেশ গুপ্ত – যশোর জেলা (বর্তমান বাংলাদেশ)।

অলিন্দ যুদ্ধের পর ব্রিটিশ সরকারের প্রতিক্রিয়া কী ছিল?

ব্রিটিশ সরকার এই ঘটনাকে গুরুত্ব সহকারে নেয় এবং বিপ্লবীদের দমনে কঠোর ব্যবস্থা নেয়। দীনেশ গুপ্তকে ফাঁসি দেওয়া হয় এবং অন্যান্য বিপ্লবীদের বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি শুরু হয়।

অলিন্দ যুদ্ধকে কেন স্মরণ করা হয়?

অলিন্দ যুদ্ধে বিপ্লবীদের আত্মত্যাগ ও সাহসিকতা ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তাদের বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করেছিল।

অলিন্দ যুদ্ধ সম্পর্কে কোন বই বা সিনেমা আছে কি?

হ্যাঁ, অলিন্দ যুদ্ধ নিয়ে বেশ কিছু বই ও চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে, যেমন –
1. “দোয়ারি” (চলচ্চিত্র, 2019)।
2. “কলকাতা 1930 – বিনয়-বাদল-দীনেশ” (বই)।
3. “চিটাগং” (চলচ্চিত্র, 2012, যেখানে এই ঘটনার উল্লেখ আছে)।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “অলিন্দ যুদ্ধ সম্পর্কে যা জানো লেখো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “অলিন্দ যুদ্ধ সম্পর্কে যা জানো লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন সম্পর্কে একটি টীকা লেখো।

রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন সম্পর্কে একটি টীকা লেখো।

1947 খ্রিস্টাব্দে দেশ বিভাজন কী কী সমস্যার সৃষ্টি করেছিল তা বিশ্লেষণ করো।

1947 খ্রিস্টাব্দে দেশ বিভাজন কী কী সমস্যার সৃষ্টি করেছিল তা বিশ্লেষণ করো।

দেশীয় রাজ্য জুনাগড়ের ভারতভুক্তি সম্পর্কে আলোচনা করো।

দেশীয় রাজ্য জুনাগড়ের ভারতভুক্তি সম্পর্কে আলোচনা করো।

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

ভারতীয় জনজীবনে হিমালয়ের প্রভাব লেখো।

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – জীবনের প্রবহমানতা – কোশ বিভাজন ও কোশচক্র – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – জীবনের প্রবহমানতা – কোশ বিভাজন ও কোশচক্র – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – জীবনের প্রবহমানতা – কোশ বিভাজন ও কোশচক্র – বিষয়সংক্ষেপ

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় – প্রাণীদের সাড়াপ্রদানের একটি প্রকার হিসেবে গমন – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর