এই আর্টিকেলে আমরা নবম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের চতুর্থ পাঠের তৃতীয় অধ্যায়, ‘আবহমান’ -এর বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করবো। এখানে কবির পরিচিতি, কবিতার উৎস, কবিতার পাঠপ্রসঙ্গ, কবিতার সারসংক্ষেপ, কবিতার নামকরণ এবং এর প্রধান বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। এই আর্টিকেলটি আপনাদের ‘আবহমান’ সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত ধারণা দেবে এবং কবিতাটি ভালোভাবে বোঝার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। এছাড়া, নবম শ্রেণীর পরীক্ষায় এই অধ্যায় থেকে কবি ও কবিতার সারসংক্ষেপ সম্পর্কিত প্রশ্ন আসতে পারে, তাই এই তথ্যগুলো জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

‘আবহমান’ কবিতার কবি পরিচিতি
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর জন্ম ও শিক্ষা –
কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বর্তমান বাংলাদেশের অন্তর্গত ফরিদপুর জেলার চান্দ্রা গ্রামে 1924 খ্রিস্টাব্দে 19 অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা জিতেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ছিলেন ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক এবং মাতা ছিলেন প্রফুল্লনন্দিনী দেবী। গ্রামের পাঠশালার পাঠ শেষ করে তিনি কলকাতায় চলে আসেন। এখানে এসে প্রথমে বঙ্গবাসী স্কুলে ও পরে মিত্র ইন্সটিটিউশনে ভরতি হন। 1940 খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বঙ্গবাসী কলেজ থেকে এরপর 1942 খ্রিস্টাব্দে আই এ পাস করেন। 1944 খ্রিস্টাব্দে নীরেন্দ্রনাথ সেন্ট পলস্ কলেজ থেকে ইতিহাসে অনার্স নিয়ে বিএ পাস করার পর কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করেন।
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর কর্মজীবন –
কবির কর্মজীবন শুরু হয় দৈনিক ‘প্রত্যহ’ পত্রিকায় সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে। এরপর বহু পত্রিকায় কাজ করেন তিনি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘মাতৃভূমি’; ‘শ্রীহর্ষ’ ‘ভারত’, ‘স্বরাজ’, ‘কিশোর’ ‘সত্যযুগ’, ‘অঙ্গীকার’, ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’। আনন্দবাজার পত্রিকায় যোগ দেন 1951 খ্রিস্টাব্দে। 1976 খ্রিস্টাব্দে তিনি শিশু ও কিশোর পত্রিকা ‘আনন্দমেলা’-র সম্পাদক হন।
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর কাব্যচর্চা –
কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী প্রথম কবিতা লেখা শুরু করেন মাত্র পাঁচ বছর বয়সে। ষোলো বছর বয়স থেকে তিনি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কবিতা লিখতে থাকেন। ত্রিশ বছর বয়সে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘নীল নির্জন’ প্রকাশিত হয়। 1954 খ্রিস্টাব্দে কাব্যটি প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। কবি নীরেন্দ্রনাথ ছিলেন মূলত রোমান্টিক কবি। তাঁর বিষণ্ণতাবোধ, অস্তিত্বসংকট, যন্ত্রণা নৈরাশ্যের রূপ নেয়নি কখনও। তাঁর কবিতায় ছন্দের দক্ষতা ও শব্দ ব্যবহারের নতুনত্বও চমক জাগায়। তাঁর কবিতায় সমাজচেতনা ও ইতিহাসচেতনা নিজ স্থান করে নিয়েছে।
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর রচনাসম্ভার –
কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর লেখা উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল ‘নীল নির্জন’ (1954 খ্রিস্টাব্দ), ‘অন্ধকার বারান্দা’ (1961 খ্রিস্টাব্দ), ‘প্রথম নায়ক’ (1961 খ্রিস্টাব্দ), ‘নীরক্ত করবী’ (1965 খ্রিস্টাব্দ), ‘নক্ষত্র জয়ের জন্য’ (1969 খ্রিস্টাব্দ), ‘কলকাতার যীশু’ (1969 খ্রিস্টাব্দ), ‘উলঙ্গ রাজা’ (1971 খ্রিস্টাব্দ), ‘খোলা মুঠি’ (1974 খ্রিস্টাব্দ), ‘কবিতার বদলে কবিতা’ (1976 খ্রিস্টাব্দ), ‘আজ সকালে’ (1978 খ্রিস্টাব্দ), ‘পাগলা ঘন্টি’ (1981 খ্রিস্টাব্দ), ‘ঘর দুয়ার’ (1983 খ্রিস্টাব্দ), ‘সময় বড়ো কম’ (1984 খ্রিস্টাব্দ), ‘আয় রঙ্গ’ (1991 খ্রিস্টাব্দ), ‘চল্লিশের দিনগুলি’ (1994 খ্রিস্টাব্দ), ‘সত্য সেলুকাস’ (1995 খ্রিস্টাব্দ), ‘সন্ধ্যারাতের কবিতা’ (1997 খ্রিস্টাব্দ) ইত্যাদি। তিনি বেশ কিছু কবিতা নিয়ে আলোচনামূলক গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। যথা – ‘কবিতার ক্লাস’, ‘কবিতার দিকে’, ‘কবিতা কী ও কেন’ ইত্যাদি। ‘দেশ’, ‘বর্তমান’ প্রভৃতি পত্রিকায় তিনি বেশ কিছু গল্পও রচনা করেছেন। তাঁর লেখা উপন্যাস ‘পিতৃপুরুষ’ (1973 খ্রিস্টাব্দ) পাঠকের মন অধিকার করতে সক্ষম হয়েছিল। ছোটোদের জন্য তিনি ‘সাদা বাঘ’, ‘বিবির ছড়া’, ‘বারো মাসের ছড়া’ ‘ও কলকাতা’, ‘ভোরের পাখি’ ‘দাশুর কথা’ ইত্যাদি ছড়া গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য রহস্যকাহিনি সমগ্র হল ‘ভাদুড়ি সমগ্র’ (1, 2, 3)। তিনি ‘বাইরে দূরে’, ‘গঙ্গা-যমুনা’ ইত্যাদি ভ্রমণকাহিনি রচনা করেন। এ ছাড়া নীরেন্দ্রনাথ বেশ কিছু রহস্যকাহিনি, কাব্যনাট্য ও ‘নীরবিন্দু 1’ নামক আত্মজীবনী রচনা করেছিলেন।
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর পুরস্কার –
কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী সাহিত্যক্ষেত্রে তাঁর অবদানের জন্য বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। 1970 খ্রিস্টাব্দে ‘তারাশঙ্কর পুরস্কার’, 1974 খ্রিস্টাব্দে ‘সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার’, 1976 খ্রিস্টাব্দে ‘আনন্দ পুরস্কার’, 1985 খ্রিস্টাব্দে ‘উল্টোরথ পুরস্কার’ ইত্যাদি নানাবিধ সম্মানে সম্মানিত করা হয় তাঁকে।
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর মৃত্যু –
বিখ্যাত এই কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী 2018 সালের 26 ডিসেম্বরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
‘আবহমান’ কবিতার উৎস
পাঠ্য ‘আবহমান’ কবিতাটি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর লেখা উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ ‘অন্ধকার বারান্দা’ থেকে সংগৃহীত। এই কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয় 1961 খ্রিস্টাব্দে। কবির কবিতা সমগ্রের প্রথম খণ্ডে ‘অন্ধকার বারান্দা’ নামক কাব্যটি রয়েছে।
‘আবহমান’ কবিতার পাঠপ্রসঙ্গ
“আমি বাংলার গান গাই
আমি আমার আমিকে চিরদিন এই বাংলায় খুঁজে পাই।”
এ গান আমাদের, অর্থাৎ আপামর বাঙালির। তাই এ বাংলার প্রতি আমাদের নাড়ির টান চিরকালের। এ বাংলার নিসর্গসৌন্দর্যে আমরা মুগ্ধ। তৃপ্তি এতটাই যে, আমরা অনায়াসে উচ্চারণ করতে পারি – ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর।’ (জীবনানন্দ দাশের ‘রূপসী বাংলা’)। আমরা অঙ্গীকার করতে পারি – ‘আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে এই বাংলায়’ (জীবনানন্দ দাশের ‘রূপসী বাংলা’)। সেই চাঁদ সদাগরের যুগ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বাংলার মানুষের সঙ্গে বঙ্গপ্রকৃতি জড়িয়ে রয়েছে ‘নিবিড় অনুরাগে’। গ্রামবাংলার স্নিগ্ধ-শীতল প্রকৃতির অনাবিল সৌন্দর্য বরাবর বাঙালির মনে তৈরি করে রেখেছে এক অমোঘ আকর্ষণ। যে আকর্ষণে বিদেশ-বিভুঁই ছেড়ে ‘পিদ্দিমের’ আলো জ্বলা জনম দুখিনির দুঃখের দুয়ারে দাঁড়িয়ে প্রবাসী মানুষটি খুঁজে পায় প্রাণের স্পর্শ। মানুষের সঙ্গে প্রকৃতি এমন এক অন্তরঙ্গ সম্পর্কে জড়িয়ে যায়, ফিরে আসা মানুষকে প্রকৃতি এমন আপ্যায়ন করে যে ভালোবাসার টানে তাকে বারে বারে ফিরে আসতে হয় এই পল্লিপ্রকৃতির বুকে। এক গভীর সুখে মানুষের এই ঘরে ফেরার গান আশ্চর্য সংবেদনে কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তুলে ধরেছেন ‘আবহমান’ কবিতায়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য শিকড় হারানোর এই যন্ত্রণা কবির ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সঙ্গেও সম্পৃক্ত।
‘আবহমান’ কবিতার বিষয়সংক্ষেপ
বহমান কাল ধরে প্রবাসী বাঙালির পল্লিবাংলায় ফিরে আসার টান ‘আবহমান’ কবিতায় নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সংবেদনে ধরা পড়েছে। জননী এবং জন্মভূমির সৌন্দর্য আজীবন অমলিন থাকে মানুষের মনে। প্রবাসী মানুষকে তাই বারেবারে ফিরতেই হয় জন্মভূমিতে। কবির ব্যক্তিজীবনের অভিজ্ঞতার সঙ্গেও এই শিকড় হারানোর যন্ত্রণা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শৈশবের স্বভূমিকে ছেড়ে কবিকে চলে আসতে হয়েছিল শহর কলকাতায়। কেবল কবি নন, জন্মভূমি থেকে দূরে চলে যাওয়া এমনই অনেক মানুষের ঘরে ফেরার অমোঘ আকর্ষণ আলোচ্য কবিতায় ব্যক্ত হয়েছে।
প্রথম স্তবকটি কবিতায় বারবার ব্যবহার করে আত্মবিশ্বাসী কবি জন্মভূমির চিরায়ত রূপের প্রকাশ ঘটিয়েছেন। বঙ্গপ্রকৃতির অনাবিল সৌন্দর্য পুরাকাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বঙ্গজনকে এমনভাবে আকৃষ্ট করে রেখেছে যে, তারা দূরে গিয়েও বারেবারে ফিরে এসেছে এই বাংলায়। আসলে বিদেশ-বিভুঁই বিলাসিতা দিতে পারে, দিতে পারে পর্যাপ্ত পরিমাণে অর্থ-খ্যাতি-যশ। কিন্তু ‘ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়’ বাংলার এই গ্রামগুলির মধ্যে যে অকৃত্রিম আনন্দের উপাদান সাজানো আছে, তার কণামাত্র সন্ধান প্রবাসে পায় না বলে বাঙালি বারবার ফিরে আসে স্বভূমিতে। ‘নিবিড় অনুরাগে’ তাদের ফিরে আসা সময়ের সঙ্গে সচল থাকে। তাই কবি বলেছেন, বাংলাদেশে মানুষের ফিরে আসার গল্প ফুরায় না বলে নটে গাছটি না মুড়িয়ে বুড়িয়ে ওঠে। প্রকৃতির রূপ-সৌন্দর্য উপভোগের নেশায় মাতোয়ারা বঙ্গবাসীর যাওয়া-আসা বন্ধ থাকে না। দিন-রাতের সবটুকু সৌন্দর্য সে মন প্রাণ দিয়ে উপভোগ করে। দিনের আলোয় বাস্তবের মাটিতে সে যেমন প্রকৃতির সান্নিধ্য পায় ঘাসের গন্ধে, তেমনই রাতের নক্ষত্রখচিত আকাশ তার মনকে স্বপ্নময় করে তোলে। সূর্যের উদিত হওয়া কিংবা আড়ালে চলে যাওয়া, নদীর বয়ে চলার মতোই এ বাংলাকে ঘিরে বঙ্গজনের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, যন্ত্রণা-উন্মাদনা পুরোনো হয় না কখনও। বঙ্গজন ঘরে ফিরলে নদীমাতৃক এ দেশের সন্ধ্যার শীতল-স্নিগ্ধ হাওয়া যেন তাকে আপ্যায়ন করে। লাউমাচায় ফুটে থাকা ফুল তার জন্যে রচনা করে মুগ্ধতার পরিমণ্ডল। যুগ যুগ ধরে বঙ্গদেশ অর্থাৎ গ্রামবাংলা এভাবেই নিবিড় সম্পর্কে বেঁধে ফ্যালে মানুষকে। তাই তার আসা-যাওয়ার স্রোত বহমান থাকে সবসময়।
‘আবহমান’ কবিতার নামকরণ
ভূমিকা –
সাহিত্যবিষয়ের ক্ষেত্রে নামকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কখনও বিষয়, কখনও চরিত্র, আবার কখনও সাহিত্যে নিহিত ব্যঞ্জনাকে কেন্দ্র করে নামকরণ তৈরি হয়। এই নামকরণ প্রাথমিকভাবে সাহিত্যের সঙ্গে পাঠকের যোগসূত্র গঠন করে। নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী আধুনিক এবং আঙ্গিকসচেতন কবি। ‘অন্ধকার বারান্দা’ কাব্যের ‘আবহমান’ কবিতায় বঙ্গদেশের গ্রামজীবনের অনাবিল সৌন্দর্য এবং সেই সৌন্দর্যে যুগ যুগ ধরে মুগ্ধ মানুষের হারিয়ে গিয়েও আবার ফিরে আসার চিরায়ত গল্পকথাটি ফুটিয়ে তুলেছেন। আলোচ্য কবিতায় কবি প্রথম স্তবকটি চারবার ব্যবহার করে গ্রামবাংলার শান্ত-স্নিগ্ধ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আবহমানতাকে তুলে ধরেছেন। আঙ্গিক সচেতন কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী আলোচ্য স্তবকটিতে সামান্য পরিবর্তন এনেছেন শেষবার। ‘ছোট্ট একটা ফুল দুলছে’ -এর পরিবর্তে ‘এখনও সেই ফুল দুলছে’-র ব্যবহারে কবিতার নামকরণকে সার্থক করে তুলেছেন।
নামকরণের সার্থকতা –
‘ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়’ বাংলার গ্রামগুলি বুক ভরে যে অকৃত্রিম আনন্দের উপাদান সাজিয়ে রেখেছে বহুকাল ধরে, তার আকর্ষণেই মানুষ বারবার ফিরে আসে এই বাংলায়। কবি লিখেছেন –
“কে এইখানে হারিয়ে গিয়েও আবার ফিরে আসে,
এই মাটিকে এই হাওয়াকে আবার ভালোবাসে।”
কবি আলোচ্য কবিতায় দেখিয়েছেন বাংলার নিসর্গসৌন্দর্য উপভোগের বাসনা বাঙালির ফুরায় না বলে এই বাংলায় তার যাওয়া-আসা অব্যাহত থাকে। গ্রামজীবনের সঙ্গে তথা প্রকৃতির সঙ্গে লগ্ন হয়ে মানুষের বেঁচে থাকার স্বাদ এবং সাধ ফুরোয় না। সূর্যের উদিত হওয়া কিংবা আড়াল হয়ে যাওয়া, নদীর বয়ে চলার যেমন বিরাম নেই, তেমনই বঙ্গজনের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, যন্ত্রণা-উন্মাদনাও পুরোনো হয় না কখনও। বহমান কাল ধরে জন্মভূমিতে ফিরে আসার ইচ্ছে মানুষের অটুট থাকে। বাংলার গ্রামজীবনের, প্রকৃতির সঙ্গে মানবমনের নিবিড় অন্বয়ের, ভালোবাসার টানে মানুষের ঘরে ফেরার যে গল্প কবি শোনান, তা শেষ হওয়ার বা থামার নয়। তাই ‘আবহমান’ কবিতার ব্যঞ্জনাধর্মী নামকরণটি যথাযথ ও সার্থক হয়েছে।
এই আর্টিকেলে আমরা নবম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের চতুর্থ পাঠের তৃতীয় অধ্যায়, ‘আবহমান’ -এর বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করবো। এখানে কবির পরিচিতি, কবিতার উৎস, কবিতার পাঠপ্রসঙ্গ, কবিতার সারসংক্ষেপ, কবিতার নামকরণ এবং এর প্রধান বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এই আর্টিকেলটি আপনাদের ‘আবহমান’ সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত ধারণা দিয়েছে এবং কবিতাটি ভালোভাবে বোঝার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। এছাড়া, নবম শ্রেণীর পরীক্ষায় এই অধ্যায় থেকে কবি পরিচিতি, কবিতার নামকরণ ও কবিতার সারসংক্ষেপ সম্পর্কিত প্রশ্ন আসতে পারে, তাই এই তথ্যগুলো জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মন্তব্য করুন