এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “কার্লাইল সার্কুলার কী? কালাইল সার্কুলার বলতে কী বোঝো?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “কার্লাইল সার্কুলার কী? কালাইল সার্কুলার বলতে কী বোঝো?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

কার্লাইল সার্কুলার
বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন চলাকালে বাংলার ছাত্রসমাজ স্বদেশী ও বয়কট আন্দোলনে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাই ছাত্রসমাজকে এই আন্দোলন থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য সরকারের মুখ্যসচিব কার্লাইল 1905 খ্রিস্টাব্দে 10ই অক্টোবর যে সার্কুলার জারি করেন তা ‘কার্লাইল সার্কুলার’ নামে খ্যাত।
এই গোপন সার্কুলার বা নির্দেশে বলা হয় স্বদেশী ও বয়কট আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছাত্রদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং বন্দেমাতরম ধ্বনি দেওয়া নিষিদ্ধ বলে ঘোষনা করা হয়। এই সার্কুলারের সূত্র ধরে শিক্ষা অধিকর্তা পেডলার কলকাতার কলেজগুলির অধ্যক্ষদের পিকেটিং এ অংশগ্রহণকারী ছাত্রদের বহিষ্কারের আদেশ দেন।
কার্লাইল সার্কুলারের বিরুদ্ধে শচীন্দ্রপ্রসাদ বসু অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটি (4ঠা নভেম্বর, 1905 খ্রিস্টাব্দে) গড়ে তুলে বহিষ্কৃত ছাত্রদের বিকল্প শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করেন।
বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন থেকে বাংলার ছাত্র সমাজকে দূরে রাখার জন্য তৎকালীন বাংলা সরকারের Chief Secretary, R. W. Carlyle 1905 খ্রিস্টাব্দের 10 অক্টোবর এক নির্দেশনামা জারি করে বলেন যে, স্বদেশি আন্দোলনে যোগদানকারী ছাত্রদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে এবং তাদের বিদ্যালয়গুলির অনুদান ও অনুমোদন বাতিল করা হবে। এটি ‘কার্লাইল সার্কুলার’ নামে পরিচিত।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
কার্লাইল সার্কুলার জারির উদ্দেশ্য কী ছিল?
বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের অংশগ্রহণ রোধ করতে ব্রিটিশ সরকার এই সার্কুলার জারি করে। এর মাধ্যমে –
1. স্বদেশী আন্দোলনে যুক্ত ছাত্রদের শাস্তি দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
2. বিদ্যালয়গুলিকে সতর্ক করা হয় যে, আন্দোলনে অংশ নিলে তাদের সরকারি অনুদান বন্ধ করা হতে পারে।
কার্লাইল সার্কুলারের বিরুদ্ধে কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল?
1. শচীন্দ্রপ্রসাদ বসু 1905 সালের 4ঠা নভেম্বর অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি গঠন করেন।
2. বহিষ্কৃত ছাত্রদের জন্য জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়।
3. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে বিকল্প শিক্ষার ব্যবস্থা করেন।
কার্লাইল সার্কুলারের প্রভাব কী ছিল?
কার্লাইল সার্কুলারের প্রভাব ছিল –
1. ছাত্রদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও এটি স্বদেশী আন্দোলনকে দমন করতে ব্যর্থ হয়।
2. এর ফলে বাংলায় জাতীয়তাবাদী শিক্ষা আন্দোলন শক্তিশালী হয়।
কার্লাইল সার্কুলার ও পেডলার সার্কুলারের মধ্যে পার্থক্য কী?
1. কার্লাইল সার্কুলার (10 অক্টোবর, 1905 সাল) – মুখ্যসচিব কার্লাইল কর্তৃক জারি, যেখানে ছাত্রদের শাস্তির হুমকি দেওয়া হয়।
2. পেডলার সার্কুলার – শিক্ষা অধিকর্তা পেডলার কলকাতার কলেজ অধ্যক্ষদের পিকেটিং-এ অংশ নেওয়া ছাত্রদের বহিষ্কারের নির্দেশ দেন।
কার্লাইল সার্কুলার কি শুধু ছাত্রদের জন্য ছিল?
হ্যাঁ, এটি মূলত ছাত্রদের স্বদেশী আন্দোলন থেকে দূরে রাখার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। তবে এটি বাংলার জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে আরও উৎসাহিত করেছিল।
কার্লাইল সার্কুলার বঙ্গভঙ্গের সঙ্গে কীভাবে যুক্ত?
1905 সালের বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে স্বদেশী আন্দোলন জোরালো হলে ব্রিটিশ সরকার ছাত্রদের দমন করতে এই সার্কুলার জারি করে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “কার্লাইল সার্কুলার কী? কালাইল সার্কুলার বলতে কী বোঝো?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “কার্লাইল সার্কুলার কী? কালাইল সার্কুলার বলতে কী বোঝো?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন