আলোর বিক্ষেপণ কাকে বলে? দিনের বেলায় আকাশকে নীল দেখায় কেন?

Souvick

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “আলোর বিক্ষেপণ কাকে বলে? দিনের বেলায় আকাশকে নীল দেখায় কেন?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “আলোর বিক্ষেপণ কাকে বলে? দিনের বেলায় আকাশকে নীল দেখায় কেন?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের পঞ্চম অধ্যায় “আলো“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

আলোর বিক্ষেপণ কাকে বলে? দিনের বেলায় আকাশকে নীল দেখায় কেন?

আলোর বিক্ষেপণ কাকে বলে?

বায়ুমণ্ডলে অবস্থিত বিভিন্ন গ্যাসীয় অণু অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যবিশিষ্ট সূর্যালোক শোষণ করে এবং শোষিত আলোকশক্তিকে চতুর্দিকে বিস্তার ঘটায়, এই পদ্ধতিতে আলোর চারদিকে বিস্তৃত হওয়াকেই আলোর বিক্ষেপণ বলে।

দিনের বেলায় আকাশকে নীল দেখায় কেন?

সূর্যের সাদা আলোক, সাতটি বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যবিশিষ্ট তরঙ্গের মিশ্রণ। এইগুলির মধ্যে লাল বর্ণের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি এবং নীল ও বেগুনি বর্ণের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম। সূর্যরশ্মি বায়ুমণ্ডলের ভিতর দিয়ে আসার সময় বায়ুর মধ্যস্থ ভাসমান অতিসূক্ষ্ম ধূলিকণা দ্বারা সূর্যরশ্মি বিক্ষিপ্ত হয়। সূর্যের সাদা আলোর মধ্যে নীল বা বেগুনি বর্ণের বিক্ষেপণ সবচেয়ে বেশি হয় এবং আকাশ থেকে এই বিক্ষিপ্ত নীল বর্ণের আলোক বায়ুমণ্ডলের বিরাট স্তর ভেদ করে সবচেয়ে বেশি করে আমাদের চোখে এসে পৌঁছোয়। তাই দিনের বেলায় আকাশকে আমরা নীল দেখি।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

কোন রঙের আলোর বিক্ষেপণ সবচেয়ে বেশি হয় এবং কেন?

নীল ও বেগুনি রঙের আলোর বিক্ষেপণ সবচেয়ে বেশি হয়। কারণ, তাদের তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম। বিক্ষেপণের মাত্রা আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের উপর নির্ভর করে; তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত ছোট হয়, বিক্ষেপণ তত বেশি হয়।

সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় আকাশ লাল দেখায় কেন?

সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সূর্য দিগন্তের কাছাকাছি থাকে। তখন তার আলোকে আমাদের চোখে পৌঁছাতে বায়ুমণ্ডলের অনেক বেশি পুরুত্ব ভেদ করতে হয়। এই দীর্ঘ পথে নীল ও বেগুনি রঙের আলো প্রায় সবটাই বিক্ষেপিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। তুলনামূলকভাবে কম বিক্ষেপণ হওয়া লাল ও কমলা রঙের আলো সরাসরি আমাদের চোখে পৌঁছায়, তাই আমরা আকাশ এবং সূর্যকে লাল-কমলা রঙের দেখি।

বিক্ষেপণ ও প্রতিসরণের মধ্যে পার্থক্য কী?

এই দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রক্রিয়া –
1. বিক্ষেপণ – এখানে আলো কোনো কণা (যেমন – ধূলা, গ্যাসের অণু) দ্বারা শোষিত হয়ে আবার সব দিকে ছড়িয়ে পড়ে। আলোর দিক পরিবর্তন হয় কিন্তু এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য অপরিবর্তিত থাকে (যেমন – আকাশের নীল রং)।
2. প্রতিসরণ – এখানে আলো একটি মাধ্যম থেকে আরেকটি মাধ্যমে (যেমন – বায়ু থেকে পানি) ঢোকার সময় তার গতি ও দিক পরিবর্তন হয়, ফলে বস্তু ভাঙা বা উল্টো দেখায় (যেমন – পানিতে ডোবা ছড়ি বাঁকা দেখানো)।

বেগুনি আলোর বিক্ষেপণ নীল আলোর চেয়েও বেশি হলে আকাশ নীল দেখায় কেন, বেগুনি নয়?

এর প্রধান কারণ দুটি –
1. চোখের সংবেদনশীলতা – আমাদের চোখ নীল আলোর প্রতি বেগুনি আলোর চেয়ে অনেক বেশি সংবেদনশীল। বেগুনি আলো আমরা খুব কমই দেখতে পাই।
2. সূর্যের আলোতে পরিমাণ – সূর্যের যে আলো পৃথিবীতে আসে, তাতে নীল আলোর পরিমাণ বেগুনি আলোর চেয়ে অনেক বেশি। তাই বিক্ষিপ্ত নীল আলোর প্রাবল্য আমাদের চোখে বেশি লাগে এবং আমরা আকাশকে নীল দেখি।

আলোর বিক্ষেপণ কী?

বায়ুমণ্ডলে অবস্থিত বিভিন্ন গ্যাসীয় অণু অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যবিশিষ্ট সূর্যালোক শোষণ করে এবং সেই শোষিত আলোকশক্তিকে চারদিকে ছড়িয়ে দেয়। আলোর এইভাবে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ার প্রক্রিয়াকেই আলোর বিক্ষেপণ বলে।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “আলোর বিক্ষেপণ কাকে বলে? দিনের বেলায় আকাশকে নীল দেখায় কেন?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “আলোর বিক্ষেপণ কাকে বলে? দিনের বেলায় আকাশকে নীল দেখায় কেন?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের পঞ্চম অধ্যায় “আলো“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

একটি জৈব যৌগের আণবিক সংকেত C₂H₄O₂। যৌগটি জলে দ্রাব্য এবং যৌগটির জলীয় দ্রবণে NaHCO₃ যোগ করলে CO₂ নির্গত হয়। জৈব যৌগটিকে শনাক্ত করো। জৈব যৌগটির সঙ্গে ইথানলের বিক্রিয়া শর্ত ও সমিত রাসায়নিক সমীকরণসহ লেখো।

C₂H₄O₂ সংকেতের একটি জৈব যৌগ NaHCO₃-এর সাথে CO₂ গ্যাস দেয়। যৌগটি শনাক্ত করো ও ইথানলের সাথে এর বিক্রিয়ার শর্তসহ সমীকরণ দাও।

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

Madhyamik English Suggestion 2026

Madhyamik Bengali Suggestion 2026

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – প্রবন্ধ রচনা

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – প্রতিবেদন

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – সংলাপ