মাধ্যমিক ভূগোল – ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ – ভারতের অবস্থান, প্রশাসনিক বিভাগ – দীর্ঘধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Souvick

আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের অবস্থান, প্রশাসনিক বিভাগ” বিভাগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ “দীর্ঘধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর” নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

মাধ্যমিক ভূগোল - ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ - ভারতের অবস্থান, প্রশাসনিক বিভাগ - দীর্ঘধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

1947 থেকে 1950 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারতের রাজ্য পুনর্গঠন সম্পর্কে আলোচনা করো।

অথবা, 1947 থেকে 1950 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারতের রাজনৈতিক কাঠামো আলোচনা করো।

1947 থেকে 1950 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারতের রাজনৈতিক কাঠামো –

1947 সালের 15 আগস্ট অবিভক্ত ভারতবর্ষকে দুটি ভাগে ভাগ করে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করা হয়। বিভাজিত স্বাধীন ভারতের অংশে থাকে 9টি গভর্নর-শাসিত প্রদেশ, 4টি চিফ কমিশনার-শাসিত প্রদেশ এবং 600 -র বেশি স্বাধীন দেশীয় রাজ্য। এরপর 1948-1949 সালে স্বাধীন ভারতের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের কূটকৌশলে স্বাধীন দেশীয় রাজ্যগুলি ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। কতকগুলি গভর্নর-শাসিত প্রদেশের সঙ্গে যুক্ত হয় এবং অন্যগুলি রাজপ্রমুখ-শাসিত রাজ্যে রূপান্তরিত হয়। 1950 সালের 26 জানুয়ারি ভারত একটি স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং ভারতের নিজস্ব সংবিধান চালু হয়। এই সময় ভারতের রাজ্যগুলিকে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয় –

‘ক’ শ্রেণির রাজ্য [Part-A, গভর্নর-শাসিত রাজ্য]‘খ’ শ্রেণির রাজ্য [Part-B, রাজপ্রমুখ-শাসিত রাজ্য]‘গ’ শ্রেণির রাজ্য [Part-C, চিফ কমিশনার-শাসিত রাজ্য]‘ঘ’ শ্রেণির রাজ্য [Part-D, কেন্দ্রশাসিত রাজ্য]
পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, বিহার, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, বোম্বে, মাদ্রাজ ও পাঞ্জাব [মোট 9টি]হায়দরাবাদ, মধ্যভারত, মহীশূর, পাতিয়ালা ও পূর্ব পাঞ্জাব রাজ্য ইউনিয়ন (পেপসু বা PEPSU), জম্মু ও কাশ্মীর, রাজস্থান, সৌরাষ্ট্র ও ত্রিবাঙ্কুর-কোচিন [মোট 8টি]আজমের, ভোপাল, বিলাসপুর, হিমাচল প্রদেশ, কচ্ছ, কুর্গ, দিল্লি, মণিপুর, ত্রিপুরা ও বিন্ধ্য প্রদেশ [মোট 10টি]আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ

1956 থেকে বর্তমান সময় ভারতের রাজ্য পুনর্বিন্যাস আলোচনা করো।

1956 থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ভারতের রাজ্য পুনর্বিন্যাস –

1956 সালে ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন –

1953 সালের ডিসেম্বর মাসে ভারত সরকার রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন তৈরি করে। সেই কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে 1956 সালের 1 নভেম্বর ভারত সরকার ভাষার ভিত্তিতে 14টি রাজ্য এবং প্রশাসনিক সুবিধার জন্য 6টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করে। এগুলি হল –

রাজ্য –

  1. অন্ধ্রপ্রদেশ,
  2. অসম,
  3. ওডিশা,
  4. উত্তরপ্রদেশ,
  5. কেরল,
  6. জম্মু ও কাশ্মীর,
  7. পশ্চিমবঙ্গ,
  8. পাঞ্জাব,
  9. বিহার,
  10. মুম্বাই,
  11. মধ্যপ্রদেশ, 
  12. মহীশূর,
  13. মাদ্রাজ এবং
  14. রাজস্থান।

কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল –

  1. ত্রিপুরা,
  2. আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ,
  3. দিল্লি,
  4. লাক্ষাদ্বীপ,
  5. মণিপুর এবং
  6. হিমাচল প্রদেশ।

পরবর্তী সময়ে রাজ্য পুনর্গঠন –

1956 সালে ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য পুনর্গঠিত হওয়ার পরও বিভিন্ন সময়ে কোনো কোনো রাজ্যকে নতুন করে পুনর্গঠন করা হয়, যেমন –

তারিখ ও সালরাজ্য পুনর্গঠন
19 আগস্ট, 1949 খ্রিস্টাব্দওডিশা রাজ্য গঠন সম্পূর্ণ হয়।
1 নভেম্বর, 1956 খ্রিস্টাব্দঅন্ধ্রপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও কেরল রাজ্য গঠন করা হয়।
1 মে, 1960 খ্রিস্টাব্দপূর্বতন মুম্বাই রাজ্যকে ভাগ করে মহারাষ্ট্র ও গুজরাত রাজ্য গঠন করা হয়।
1 ডিসেম্বর, 1963 খ্রিস্টাব্দনাগাল্যান্ড পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা লাভ করে।
1 নভেম্বর, 1966 খ্রিস্টাব্দপূর্বতন পাঞ্জাব রাজ্যকে ভাগ করে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্য এবং চণ্ডীগড় কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠিত হয়।
20 ফেব্রুয়ারি, 1970 খ্রিস্টাব্দপূর্বতন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত অঞ্চল (NEFA) অরুণাচল প্রদেশ নামে পরিচিত হয়।
25 জানুয়ারি, 1971 খ্রিস্টাব্দকেন্দ্রশাসিত হিমাচল প্রদেশ পূর্ণাঙ্গ রাজ্যরূপে পরিগণিত হয়।
1 নভেম্বর, 1973 খ্রিস্টাব্দপূর্বতন মহীশূর রাজ্য কর্ণাটক রাজ্য নামে পরিচিত হয়।
26 এপ্রিল, 1975 খ্রিস্টাব্দচোগিয়াল শাসিত সিকিম ভারতের 22 তম অঙ্গরাজ্যে পরিণত হয়।
20 ফেব্রুয়ারি, 1987 খ্রিস্টাব্দকেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিজোরাম ও অরুণাচল প্রদেশ যথাক্রমে ভারতের 23 তম ও 24 তম পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা পায়।
30 মে, 1987 খ্রিস্টাব্দকেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গোয়া ভারতের 25 তম পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা লাভ করে।
1991 খ্রিস্টাব্দভারতের রাজধানী দিল্লিকে ‘জাতীয় রাজধানী অঞ্চল’ আখ্যা দেওয়া হয়।
1 নভেম্বর, 2000 খ্রিস্টাব্দমধ্যপ্রদেশ রাজ্যের পূর্বাংশ থেকে ভারতের 26 তম রাজ্য ছত্তিশগড়ের জন্ম হয়।
8 নভেম্বর, 2000 খ্রিস্টাব্দপূর্বতন উত্তরপ্রদেশ রাজ্য থেকে ভারতের 27 তম রাজ্য উত্তরাখণ্ডের জন্ম হয়।
15 নভেম্বর, 2000 খ্রিস্টাব্দপূর্বতন বিহার রাজ্য থেকে ভারতের 28 তম রাজ্য ঝাড়খণ্ডের উৎপত্তি ঘটে।
2 জুন, 2014 খ্রিস্টাব্দপূর্বতন অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য থেকে ভারতের 29 তম রাজ্য তেলেঙ্গানার উৎপত্তি ঘটে।

আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের অবস্থান, প্রশাসনিক বিভাগ” বিভাগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ “দীর্ঘধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Categories -
Please Share This Article

Related Posts

মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র - মানচিত্র চিহ্নিতকরণ

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – মানচিত্র চিহ্নিতকরণ

মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র - ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র - সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – মানচিত্র চিহ্নিতকরণ

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – বিষয়সংক্ষেপ