অসওয়াল্ড পদ্ধতিতে HNO₃ উৎপাদনের জন্য অতিরিক্ত বায়ু ব্যবহৃত হয় কেন?

Souvick

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “অসওয়াল্ড পদ্ধতিতে HNO₃ উৎপাদনের জন্য অতিরিক্ত বায়ু ব্যবহৃত হয় কেন?” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

অসওয়াল্ড পদ্ধতিতে HNO₃ উৎপাদনের জন্য অতিরিক্ত বায়ু ব্যবহৃত হয় কেন?

অসওয়াল্ড পদ্ধতিতে HNO₃ উৎপাদনের জন্য অতিরিক্ত বায়ু ব্যবহৃত হয় কেন?

অসওয়াল্ড পদ্ধতির তিনটি ধাপেই অর্থাৎ অ্যামোনিয়ার অনুঘটকীয় জারণ, জারণ কক্ষে নাইট্রিক অক্সাইডের নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইডে রূপান্তরীকরণ এবং শোষক স্তম্ভে জারণের জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজন। বায়ুতে মাত্র 21% অক্সিজেন উপস্থিত থাকায় এই পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের জোগান বজায় রাখার জন্য অতিরিক্ত বায়ু ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে প্রতিটি ধাপে বিক্রিয়ক হিসেবে বায়ুর পরিমাণ বৃদ্ধি করলে HNO₃ -এর উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

অসওয়াল্ড পদ্ধতি কী?

অসওয়াল্ড পদ্ধতি হল একটি শিল্প প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে অ্যামোনিয়া (NH₃) গ্যাসের অনুঘটকীয় জারণের মাধ্যমে নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO₃) উৎপাদন করা হয়। এটি নাইট্রিক অ্যাসিড উৎপাদনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও আধুনিক পদ্ধতি।

অসওয়াল্ড পদ্ধতির প্রধান রাসায়নিক বিক্রিয়া বা ধাপগুলো কী কী?

পদ্ধতিটিতে মূলত তিনটি ধাপ রয়েছে –
1. ধাপ 1 (অ্যামোনিয়ার জারণ) – 4NH₃(g) + 5O₂(g) → 4NO(g) + 6H₂O(g)
2. ধাপ 2 (নাইট্রিক অক্সাইডের জারণ) – 2NO(g) + O₂(g) → 2NO₂(g)
3. ধাপ 3 (নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড থেকে নাইট্রিক অ্যাসিড উৎপাদন) – 3NO₂(g) + H₂O(l) → 2HNO₃(aq) + NO(g)

অসওয়াল্ড পদ্ধতিতে HNO₃ উৎপাদনের জন্য অতিরিক্ত বায়ু ব্যবহৃত হয় কেন?

অতিরিক্ত বায়ু ব্যবহার করার প্রধান কারণগুলো হল –
1. অক্সিজেনের জোগান নিশ্চিত করা – যেহেতু বায়ুতে মাত্র 21% অক্সিজেন থাকে, তাই প্রতিটি ধাপে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের সরবরাহ নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত বায়ু ব্যবহার করা হয়।
2. বিক্রিয়ার দক্ষতা বৃদ্ধি – ল্য শাতেলিয়ারের নীতি অনুযায়ী, বিক্রিয়ক (অক্সিজেন) এর পরিমাণ বেশি থাকলে বিক্রিয়া পণ্যের দিকে অগ্রসর হয়, ফলে NO এবং পরিশেষে HNO₃ এর উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।
3. অনুঘটকের তাপ নিয়ন্ত্রণ – অ্যামোনিয়ার জারণ একটি অতি তাপ উৎপাদী বিক্রিয়া। অতিরিক্ত বায়ু বিক্রিয়ার তাপ শোষণ করে অনুঘটক (প্লাটিনাম-রোডিয়াম জাল) গলানো বা ক্ষতি হওয়া রোধ করে।

অসওয়াল্ড পদ্ধতিতে অতিরিক্ত বায়ু কেন ব্যবহৃত হয়?

বায়ুতে মাত্র 21% অক্সিজেন থাকে। প্রতিটি ধাপে (অ্যামোনিয়া জারণ, NO থেকে NO₂ রূপান্তর, এবং HNO₃ গঠন) পর্যাপ্ত অক্সিজেনের যোগান নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত বায়ু ব্যবহার করা হয়।

অসওয়াল্ড পদ্ধতিতে অতিরিক্ত বায়ু ব্যবহারের প্রধান সুবিধা কী?

এটি বিক্রিয়ায় অক্সিজেনের ঘাটতি দূর করে, ফলে নাইট্রিক অক্সাইড (NO) ও নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড (NO₂) এর রূপান্তর এবং সর্বশেষে HNO₃ উৎপাদন দক্ষতার সাথে হয়।

অসওয়াল্ড পদ্ধতির মূল নীতিটা কী?

অসওয়াল্ড পদ্ধতির মূল নীতি হলো প্লাটিনাম-রোডিয়াম জালিকা (gauze) ব্যবহার করে অ্যামোনিয়া (NH₃) এর অনুঘটকীয় জারণের মাধ্যমে নাইট্রিক অক্সাইড (NO) তৈরি করা, তারপর সেই NO কে NO₂ তে রূপান্তরিত করে পানির সাথে বিক্রিয়া করিয়ে নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO₃) উৎপাদন করা।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “অসওয়াল্ড পদ্ধতিতে HNO₃ উৎপাদনের জন্য অতিরিক্ত বায়ু ব্যবহৃত হয় কেন?” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

একটি জৈব যৌগের আণবিক সংকেত C₂H₄O₂। যৌগটি জলে দ্রাব্য এবং যৌগটির জলীয় দ্রবণে NaHCO₃ যোগ করলে CO₂ নির্গত হয়। জৈব যৌগটিকে শনাক্ত করো। জৈব যৌগটির সঙ্গে ইথানলের বিক্রিয়া শর্ত ও সমিত রাসায়নিক সমীকরণসহ লেখো।

C₂H₄O₂ সংকেতের একটি জৈব যৌগ NaHCO₃-এর সাথে CO₂ গ্যাস দেয়। যৌগটি শনাক্ত করো ও ইথানলের সাথে এর বিক্রিয়ার শর্তসহ সমীকরণ দাও।

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

Madhyamik Geography Suggestion 2026 – বামদিক ডানদিক মেলাও

Madhyamik Geography Suggestion 2026 – একটি অথবা দুটি শব্দে উত্তর দাও [Marks – 1]

Madhyamik Geography Suggestion 2026 – শূন্যস্থান পূরণ

Madhyamik Geography Suggestion 2026 Wbbse – শুদ্ধ ও অশুদ্ধ

Madhyamik Geography MCQ Suggestion 2026 Wbbse