গঙ্গা নদীর প্রবাহ কোথা থেকে কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত?

Rahul

গঙ্গা নদী বিশ্বের সবচেয়ে পবিত্র নদী। আর্টিকেলটিতে গঙ্গানদীর প্রবাহ কোথা থেকে কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত, দৈর্ঘ্য এবং গঙ্গা নদী সম্পর্কে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে।

গঙ্গা নদীর প্রবাহ

গঙ্গানদীর তিনটি প্রবাহ —

প্রবাহের নামপ্রবাহ পথের বিস্তৃতি
উচ্চ প্রবাহউত্তরাখণ্ডের গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ তুষারগুহা থেকে উত্তরাখণ্ডেরই হরিদ্বার পর্যন্ত গঙ্গার পার্বত্য প্রবাহ বা উচ্চগতি।
মধ্য প্রবাহউত্তরাখণ্ডের হরিদ্বার থেকে ঝাড়খণ্ডের রাজমহল পর্যন্ত গঙ্গার সমভূমি প্রবাহ বা মধ্যগতি।
নিম্ন প্রবাহঝাড়খণ্ডের রাজমহল থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত গঙ্গার বদ্বীপ প্রবাহ বা নিম্নগতি।

ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘ এবং সেরা নদীটি হলো গঙ্গা। এটি সর্বমোট ২,৫১০ কিলোমিটার লম্বা। গঙ্গা নদীর উৎপত্তি হয়েছে উত্তরাখণ্ডের গোমুখ গুহা থেকে, যা হিমবাহ নামক একটি স্থানে অবস্থিত। সেখান থেকে এই নদীর নাম ভাগিরথী। ভাগিরথী দেবপ্রয়াগে অলকানন্দার সাথে মিলে এবং নাম পরিণত হয়ে গঙ্গা হয়েছে।

অলকানন্দার উৎপত্তি হয়েছে বদ্রীনাথে, এবং এটি ধৌলি, বিষ্ণুগঙ্গা নদীর সঙ্গে মিলে যোশীমঠ বা বিষ্ণুপ্রয়াগ হয়েছে। অলকানন্দার অন্য এক শাখা পিন্ডার কর্ণপ্রয়াগে মিলে এবং অলকানন্দার সাথে মন্দাকিনি বা কালিগঙ্গা নদী রুদ্রপ্রয়াগে মিলিত হয়েছে।

আরও পড়ুন – ভারতের বিভিন্ন নদ-নদীর দৈর্ঘ্য, উৎসস্থল, পতনস্থল, উপনদী

গঙ্গা নদীর গতিপথ

ভারতের শ্রেষ্ঠ ও দীর্ঘতম নদী গঙ্গার গতিপথ কে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়:

১) গঙ্গা নদীর পার্বত্য গতি

  • উৎপত্তি: গঙ্গা নদী কুমায়ুন হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ গুহা থেকে ভাগীরথী নামে উৎপন্ন।
  • প্রবাহ: প্রথমে পশ্চিমে এবং পরে দক্ষিণের সংকীর্ণ গিরিখাতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত।
  • মিলন: দেবপ্রয়াগে অলকানন্দার সাথে মিলিত হয়ে গঙ্গা নাম ধারণ করে।
  • দৈর্ঘ্য: গঙ্গোত্রী থেকে হরিদ্বার পর্যন্ত প্রায় ৩২০ কিলোমিটার।

২) গঙ্গা নদীর মধ্যগতি

  • প্রবাহ: দেবপ্রয়াগ থেকে প্রথমে পশ্চিমে এবং পরে দক্ষিণে প্রবাহিত।
  • অবতরণ: নাগটিব্বা ও শিবালিক পর্বত অতিক্রম করে হরিদ্বারের কাছে সমভূমিতে অবতরণ।
  • দিক: প্রথমে দক্ষিণে এবং পরে দক্ষিণ পূর্ব দিকে প্রবাহিত।
  • উপনদী: রামগঙ্গা, গোমতী, ঘর্ঘরা, গন্ডক, কোশী, যমুনা, শোন ইত্যাদি।
  • দৈর্ঘ্য: হরিদ্বার থেকে পশ্চিমবঙ্গের ধুলিয়ান পর্যন্ত।

৩) গঙ্গা নদীর নিম্নগতি

  • দ্বিধাবিভক্ত: মুর্শিদাবাদ জেলায় ভাগীরথী (পশ্চিমবঙ্গে) ও পদ্মা (বাংলাদেশে) নামে দুটি শাখায় বিভক্ত।
  • প্রবাহ: ভাগীরথী দক্ষিণ ও পদ্মা দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত।
  • মোহনা: বঙ্গোপসাগরে পতিত।
  • বদ্বীপ: ভাগীরথী ও পদ্মার মধ্যবর্তী সুন্দরবন বদ্বীপ।
  • নাম: মুর্শিদাবাদ থেকে হুগলি পর্যন্ত ভাগীরথী এবং হুগলি থেকে মোহনা পর্যন্ত হুগলি নদী।
  • উপনদী: দ্বারকা, ময়ূরাক্ষী, অজয়, দামোদর, রূপনারায়ণ, কংসাবতী, জলঙ্গী, মাথাভাঙ্গা ইত্যাদি।

গঙ্গা নদীর বিশেষ দ্রষ্টব্য

  • গঙ্গার মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ২,৫২৫ কিলোমিটার।
  • গঙ্গা নদী ভারতের জাতীয় নদী।
  • গঙ্গা নদী হিন্দুদের কাছে একটি পবিত্র নদী।
Please Share This Article

Related Posts

ধাতু নিষ্কাশনে তড়িৎবিশ্লেষণের প্রয়োগ উদাহরণসহ উল্লেখ করো।

ধাতু নিষ্কাশনে তড়িৎবিশ্লেষণের প্রয়োগ উদাহরণসহ উল্লেখ করো।

তড়িৎলেপনের সময় কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নজর রাখা প্রয়োজন?

তড়িৎলেপনের সময় কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নজর রাখা প্রয়োজন?

লোহার দ্রব্যে তামার প্রলেপ দিতে হলে ক্যাথোড ও অ্যানোডরূপে কী কী ব্যবহার করা হয়? তড়িৎবিশ্লেষ্য হিসেবে কী ব্যবহার করা হয়? বিক্রিয়ার সমীকরণ দাও।

লোহায় তামার প্রলেপ দিতে কোন ধাতু ক্যাথোড ও অ্যানোড হিসেবে ব্যবহার হয়? তড়িৎবিশ্লেষ্য কী? বিক্রিয়ার সমীকরণ লেখো।

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

ধাতু নিষ্কাশনে তড়িৎবিশ্লেষণের প্রয়োগ উদাহরণসহ উল্লেখ করো।

তড়িৎলেপনের সময় কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নজর রাখা প্রয়োজন?

লোহায় তামার প্রলেপ দিতে কোন ধাতু ক্যাথোড ও অ্যানোড হিসেবে ব্যবহার হয়? তড়িৎবিশ্লেষ্য কী? বিক্রিয়ার সমীকরণ লেখো।

তড়িৎলেপন পদ্ধতি বর্ণনা করো।

ধাতুর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ ও তড়িৎবিশ্লেষ্যের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ -এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।