স্বাভাবিক বাঁধ কাকে বলে?

Rahul

এই আর্টিকলে আমরা আলোচনা করবো স্বাভাবিক বাঁধ সম্পর্কে। স্বাভাবিক বাঁধ হলো নদীর তীরে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি উঁচু ভূমি যা প্লাবন থেকে রক্ষা করে। নদীতে ভেসে আসা পলি, বালি, কর্দম ইত্যাদি নদীর তলদেশে জমা হওয়ার ফলে ধীরে ধীরে এই বাঁধ তৈরি হয়।

স্বাভাবিক বাঁধ কাকে বলে?

সমভূমি ও বদ্বীপ প্রবাহে ভূমির ঢাল কম থাকে বলে নদী ধীরগতিতে প্রবাহিত হয় এবং নদীখাত প্রশস্ত কিন্তু অগভীর হয়। জলের সঙ্গে যেসব পলি, বালি, কাদা প্রভৃতি বাহিত হয়ে আসে। নদী আর সেগুলি বহন করে আনতে পারে না। সেগুলি নদীর দুই তীরে সঞ্চিত হতে থাকে। এইভাবে ক্রমাগত নদীর দুই তীরে পলি সঞ্চিত হওয়ার ফলে তা বাঁধের মতো উঁচু হয়ে যায়। এই বাঁধ প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হয় বলে একে বলা হয় স্বাভাবিক বাঁধ (natural levee)। উদাহরণ – মধ্য ও নিম্নগতিতে গঙ্গানদীর দুই তীরে এবং মিশরে নীলনদের দুই পাশে উঁচু স্বাভাবিক বাঁধ দেখা যায়।

স্বাভাবিক বাঁধ কিভাবে তৈরি হয়?

নদী সমুদ্রের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে ভূমির ঢাল কমে আসে। এর ফলে নদীতে ভেসে আসা পলি, বালি, কর্দম ইত্যাদি নদীর তলদেশে জমা হতে থাকে। ধীরে ধীরে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে নদীর গভীরতা কমে যায়। বর্ষাকালে নদীতে হঠাৎ জলের পরিমাণ বেড়ে গেলে অগভীর নদীতল পানিতে ভরে যায় এবং নদীর দুই তীরের নিচু জমি প্লাবিত হয়। প্লাবনের জল নেমে গেলে নদীর পলি, বালি, কর্দম ইত্যাদি নদীর দুই তীরে জমা হয়। বছরের পর বছর ধরে এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে এবং নদীর তীরে ধীরে ধীরে বাঁধের মতো উঁচু ভূমি তৈরি হয়। এই ভূমিকে প্রাকৃতিক বাঁধ বা স্বাভাবিক বাঁধ বলা হয়।

আরও পড়ুন – প্লাবনভূমি কাকে বলে? প্লাবনভূমি কীভাবে তৈরি হয়?

স্বাভাবিক বাঁধ তৈরির প্রক্রিয়া –

  • নদী সমুদ্রের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে ভূমির ঢাল কমে আসে।
  • নদীতে ভেসে আসা পলি, বালি, কর্দম ইত্যাদি নদীর তলদেশে জমা হয়।
  • নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে নদীর গভীরতা কমে যায়।
  • বর্ষাকালে নদীতে হঠাৎ জলের পরিমাণ বেড়ে গেলে নদীর দুই তীরের নিচু জমি প্লাবিত হয়।
  • প্লাবনের জল নেমে গেলে নদীর পলি, বালি, কর্দম ইত্যাদি নদীর দুই তীরে জমা হয়।
  • বছরের পর বছর ধরে এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে এবং নদীর তীরে ধীরে ধীরে বাঁধের মতো উঁচু ভূমি তৈরি হয়।

স্বাভাবিক বাঁধর গুরুত্ব –

  • স্বাভাবিক বাঁধ নদীর তীরের জমি প্লাবন থেকে রক্ষা করে।
  • স্বাভাবিক বাঁধ নদীর স্রোত নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • স্বাভাবিক বাঁধ নদীর তীরে কৃষি জমি ও বসতি স্থাপনের জন্য উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে।
Please Share This Article

Related Posts

অ্যামোনিয়া গ্যাস কীভাবে শনাক্ত করবে?

অ্যামোনিয়া গ্যাস কীভাবে শনাক্ত করবে?

ইউরিয়ার শিল্প উৎপাদন উল্লেখ করো।

ইউরিয়ার শিল্প উৎপাদন উল্লেখ করো।

450°C উষ্ণতায় 200 বায়ুমণ্ডলীয় চাপে দুটি বর্ণহীন গ্যাসের বিক্রিয়ায় একটি ঝাঁজালো গন্ধবিশিষ্ট গ্যাস উৎপন্ন হয়। উৎপন্ন গ্যাসটি লঘু HCl -এ সিক্ত কাচদণ্ডের সংস্পর্শে সাদা ধোঁয়ার সৃষ্টি করে। গ্যাস তিনটিকে শনাক্ত করো।

450°C ও 200 বায়ুমণ্ডলীয় চাপে দুই বর্ণহীন গ্যাসের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন ঝাঁজালো গন্ধবিশিষ্ট গ্যাসটি কোনটি? (HCl-এ সিক্ত কাচদণ্ডে সাদা ধোঁয়া তৈরি হয়)

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

অ্যামোনিয়া গ্যাস কীভাবে শনাক্ত করবে?

ইউরিয়ার শিল্প উৎপাদন উল্লেখ করো।

450°C ও 200 বায়ুমণ্ডলীয় চাপে দুই বর্ণহীন গ্যাসের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন ঝাঁজালো গন্ধবিশিষ্ট গ্যাসটি কোনটি? (HCl-এ সিক্ত কাচদণ্ডে সাদা ধোঁয়া তৈরি হয়)

অ্যামোনিয়া জলে অত্যন্ত দ্রাব্য এবং এর জলীয় দ্রবণ ক্ষারধর্মী—একটি পরীক্ষার সাহায্যে প্রমাণ করো।

অ্যামোনিয়ার প্রধান ভৌত ধর্মগুলি লেখো। অ্যামোনিয়ার ব্যবহার উল্লেখ করো।