অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ছন্নছাড়া – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

Sourav Das

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের পঞ্চদশ অধ্যায়ছন্নছাড়া” এর ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো অষ্টম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ পরীক্ষায় এই অধ্যায় থেকে প্রায়ই প্রশ্ন আসে।

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ছন্নছাড়া – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
Contents Show

ড্রাইভার বললে, ওদিকে যাব না। – ওদিকে না যেতে চাওয়ার কারণ কী?

গলির মোড়ে কতকগুলো বেকার ছন্নছাড়া ছেলে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছিল, যারা ট্যাক্সি ড্রাইভারকে দেখতে পেলেই গাড়ি থামিয়ে লিফট চাইবে এবং তারপর ড্রাইভারকে বলবে তাদের ঘুরিয়ে হাওয়া খাইয়ে আনতে – এই আশঙ্কায় ড্রাইভার ওদিকে যেতে চাননি।

তাই এখন পথে এসে দাঁড়িয়েছে সড়কের মাঝখানে। – সড়কের মাঝখানে পথ এসে দাঁড়ানোর কারণ কী?

ছন্নছাড়া কবিতায় উল্লিখিত ছেলেগুলি জীবনে সবদিক থেকে বঞ্চিত। এমনকি মধ্যবিত্ত বাড়ির এক চিলতে রক, যেখানে ওরা একটু বসতে পারত, সেটাও উঠে গিয়েছে বলে তারা এখন সড়কের মাঝখানে, পথে এসে দাঁড়িয়েছে।

আমি বললুম, না ওখান দিয়েই যাব। – কবির ‘ওখান’ দিয়েই যেতে চাওয়ার কারণ কী?

গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসাতে রাজি না হওয়া বিবেকবান লেখক চেয়েছিলেন পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ; চেয়েছিলেন মানবিকতার বাহনে সকলকে সওয়ার করিয়ে প্রকৃত সমাজসংস্কারকের ভূমিকা পালন করতে।

আমি নেমে পড়লুম তাড়াতাড়ি – কবি তাড়াতাড়ি নেমে পড়লেন কেন?

শহুরে ভব্যতা ও লোক-দেখানো শালীনতা শহুরে বাবুদের সহজাত প্রবৃত্তি, তা যেন মরেও মরতে চায় না। গাড়ি চাপা পড়া আহত ব্যক্তির রক্ত পাছে গায়ে বা পোশাকে লাগে, তাই সেই নোংরা ছোঁয়াচ থেকে নিজেকে বাঁচাতে কবি গাড়ি থেকে তাড়াতাড়ি নেমে পড়লেন।

ফিরে আসতেই দেখি – ফেরার পথে কবি কী দেখতে পেলেন?

ফেরার পথে কবি দেখতে পেলেন সমস্ত নির্জীবতায় প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। জীর্ণ-শীর্ণ ফ্যাকাশে গাছটায় যেন লেগেছে সবুজের প্রলেপ। পরিবেশের সমস্ত কালিমায় লেগেছে শুভ্রতার চমক। যেন বেওয়ারিশ ভিখিরির ‘মূল্যহীন প্রাণ’ সমস্ত ‘মূল্যবান সমাজের’ ধড়ে চেতনার সঞ্চার করেছে, মৃতপ্রায় ক্ষয়িষ্ণু সমাজ যেন ধীরে ধীরে জেগে উঠেছে।

অবিশ্বাস্য চোখে দেখলুম — কবির চোখে অবিশ্বাসের ঘোর কেন?

যাওয়ার সময় যে গাছটিকে নীরস পত্রহীন রুক্ষ অবস্থায় দেখেছিলেন ফেরার সময় তার গায়ে কচি পাতা, ডালভরা সুগন্ধি ফুল এবং পাখিদের সমাবেশ লক্ষ করার মতো অসম্ভব ঘটনা ঘটার জন্যই কবির চোখে অবিশ্বাসের ঘোর ছিল।

ওই পথ দিয়ে/জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে। – কবির যাত্রাপথের অভিজ্ঞতার বিবরণ দাও।

ট্যাক্সি করে যাওয়ার সময় কবির প্রথমেই গলির মোড়ে একটি পত্রহীন রুক্ষ গাছের দিকে চোখ যায় এবং তারপর তিনি লক্ষ করেন রাস্তার মাঝখানে কতকগুলো ছন্নছাড়া যুবক দাঁড়িয়ে আছে। যাদের দেখে ট্যাক্সি ড্রাইভার সেইদিকে গাড়ি চালাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে। কিন্তু কবির কথায় ড্রাইভার সেইদিকে গাড়ি নিয়ে এলে তারা সকলে একটি গাড়ি চাপা পড়া ভিখিরির দলা পাকানো রক্তাক্ত দেহটাকে বয়ে এনে গাড়িতে তোলে। কবি অবশ্য এই সময়েই গাড়ি থেকে নেমে যান।

গলির মোড়ে একটা গাছ দাঁড়িয়ে/গাছ না গাছের প্রেতচ্ছায়া – একটি গাছ দাঁড়িয়ে আছে বলেও কেন পরের পঙ্ক্তিতে তাকে ‘গাছের প্রেতচ্ছায়া’ বলা হয়েছে তা বুঝিয়ে দাও।

কবি অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত ‘ছন্নছাড়া’ কবিতায় প্রথমে গলির মোড়ে একটি গাছ দাঁড়িয়ে আছে বলেছেন এইজন্যই যে, সেটি মূলত একটি গাছই ছিল। কিন্তু পরের পঙ্ক্তিতে সেটিকে ‘গাছের প্রেতচ্ছায়া’ বলেছেন এই কারণে যে, তাঁর মনে হয়েছে একটি গাছের যেমন ডালপালা, পত্র-কুসুম-লতা প্রভৃতি আবশ্যিক অঙ্গস্বরূপ, এ গাছটির সেসব কিছুই ছিল না-কেবল পত্রহীন নীরস রুক্ষ কয়েকটি ডাল যেন কঙ্কালের মতো শূন্যের দিকে উঠেছিল। যা দেখে লেখক সেই গাছকে ‘গাছের প্রেতচ্ছায়া’ বলে উল্লেখ করেছেন।

ওই পথ দিয়ে/জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে। – এভাবে কবিতায় উত্তম পুরুষের রীতি কীভাবে ব্যবহৃত হয়েছে, অন্তত পাঁচটি পঙ্ক্তি উদ্ধৃত করে বুঝিয়ে দাও।

উত্তম পুরুষের রীতি ব্যবহারকারী পাঁচটি পঙ্ক্তি হল –

  • জরুরি দরকারে যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে
  • আমি বললুম, না ওখান দিয়েই যাব
  • ওখান দিয়েই আমার শর্টকার্ট
  • আমরা খালি ট্যাক্সি খুঁজছি
  • অবিশ্বাস্য চোখে চেয়ে দেখলুম।

উপরিউক্ত প্রতিটি পঙ্ক্তিতেই লেখক উত্তম পুরুষকে ব্যবহার করেছেন অত্যন্ত সচেতনভাবে। তবে সর্বক্ষেত্রে লেখকই যে উত্তম পুরুষ তেমন নয়। রাস্তার মোড়ের আড্ডাবাজ কর্মহীন ভবঘুরের জবানিতে লেখক উত্তম পুরুষকে ব্যবহার করে সাম্যতা ও সর্বজনীনতা বজায় রাখতে চেয়েছেন।

কারা ওরা? – কবিতা অনুসরণে ওদের পরিচয় দাও।

ওরা বলতে এখানে সেইসব ছেলেদের কথা বলা হয়েছে, যারা সমাজে কর্মহীন ছন্নছাড়ার দল। সকলে মনে করে ওদের ঘরদোর নেই, জীবনের কোনো শিকড় নেই, তারা রীতিনীতি মানে না, আইনকানুনের ধার ধারে না, সামাজিক ভদ্রতা-সৌজন্য বা শালীনতা-অশালীনতার মাত্রা বোঝে না, অর্থাৎ ওদের সব কিছুই ইতিবাচক এবং সর্বত্রই তারা প্রত্যাখ্যাত। তারা নেই রাজ্যের বাসিন্দা।

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের পঞ্চদশ অধ্যায়ছন্নছাড়া’ – এর ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো আপনার প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এ ধরনের প্রশ্ন প্রায়ই পরীক্ষায় আসে। আশা করি এই নিবন্ধটি আপনার জন্য সহায়ক হয়েছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে বা আরও সহায়তার প্রয়োজন হয়, তাহলে টেলিগ্রামে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। বন্ধুদের সঙ্গে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না, যাতে তারাও উপকৃত হতে পারে। ধন্যবাদ!

Please Share This Article

Related Posts

নবাব সিরাজউদ্দোলা কে ছিলেন? পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল লেখো।

পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল

Class 8 English – The Happy Prince – About Author and Story

Class 8 English – The Happy Prince – About Author and Story

Class 8 English – The Happy Prince – Question and Answer

Class 8 English – The Happy Prince – Question and Answer

About The Author

Sourav Das

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

মাধ্যমিক ইতিহাস – সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ইতিহাস – সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

মাধ্যমিক ইতিহাস – সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ – বিষয়সংক্ষেপ

তেভাগা আন্দোলন কাকে বলে এবং এর মূল দাবি কী ছিল? তেভাগা আন্দোলনের নাম ‘তেভাগা’ কেন হয়েছিল?

‘একা’ আন্দোলন শুরু হয় কেন? ‘একা’ আন্দালনে আন্দোলনকারীদের শপথ কী ছিল?