অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – কী করে বুঝব – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের কী করে বুঝব অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে কী করে বুঝব অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় কী করে বুঝব অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই কী করে বুঝব অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

Table of Contents

ছয় বছরের ছেলে বুকু তার বাড়ির বাইরে খেলছিলো যখন দুইজন মোটা মহিলা এবং বুকুর বয়সী একটি মোটা ছেলে রিকশায় করে এসে হাজির হয়। তারা নিজেদের বুকুর মা নির্মলার “ছেনুমাসি” ও “বেণুমাসি” বলে পরিচয় দেয়। বুকু জানিয়ে দেয় যে তারা বই নষ্ট করেছে। বুকুর মা তাদের সাদর অভ্যর্থনা জানান, কিন্তু বুকু ফাঁস করে দেয় যে তিনি তাদের আসার খবর শুনে বিরক্ত হয়েছিলেন। বুকুর মা বুকুর কান মলে দেন এবং তার কথা অস্বীকার করেন। ডাম্বল (বেণুমাসির ছেলে) বলে যে তার বাবা বলেছেন পড়ার দরকার নেই। সে টেবিল ল্যাম্প ভেঙে ফেলে।

বুকু বলে দেয় যে তার বাবা রেগে গেছেন কারণ সিনেমার টিকিটগুলো নষ্ট হবে। বুকুর কথা শুনে ক্রুদ্ধ অতিথিরা চলে যান। বুকুর বাবা এসে বুকুকে মারতে থাকেন কারণ বুকু বাইরের লোকের কাছে তাদের অপমান করেছে। বুকু বুঝতে পারে না কেন তাকে মারা হচ্ছে কারণ সে সত্যি কথা বলেছে। গল্পের শেষে বুকু অসহায় এবং বিভ্রান্ত, কারণ সে বুঝতে পারে না যে সত্যি কথা বলার জন্য তাকে কেন শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।

কী করে বুঝব – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

বুকু খেলতে খেলতে তাকিয়ে অবাক হয়ে যায় কেন?

বুকু খেলতে খেলতে তাকিয়ে দেখেছিল যে, তাদের বাড়ির সামনে একটি রিকশাগাড়ি এসে থামল। সেই রিকশা থেকে নেমেছিলেন দুজন অত্যন্ত মোটাসোটা মহিলা এবং বুকুরই বয়সি একটি মোটা ছেলে। রিকশাগাড়ির অতটুকু খোলের মধ্যে তিনজন মোটামতো মানুষের জায়গা কী করে হয়েছিল, এই কথা ভেবেই বুকু অবাক হয়েছিল।

সিঁড়ি ভেঙে আর উঠতে পারব না বাবা, – কারা এ কথা বলেছেন? তাঁরা সিড়ি ভেঙে উঠতে পারবেন না কেন?

প্রশ্নে প্রদত্ত কথাটি বলেছেন বুকুর মায়ের ছেনুমাসি ও বেণুমাসি, যারা উত্তরপাড়া থেকে বুকুর মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন।

এই দুই মহিলাই ছিলেন অত্যন্ত স্থূলকায়। তা ছাড়া তারা অনেকক্ষণ আগে উত্তরপাড়ার বাড়ি থেকে বেরিয়ে দু-তিন বার বাস বদল করে অবশেষে রিকশা চেপে ভবানীপুরে পৌঁছে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাই তারা সিঁড়ি ভেঙে তিনতলায় উঠতে পারবেন না।

ও কী! কী কাণ্ড করেছ তুমি? – কে, কী কাণ্ড করেছে?

কাণ্ড করেছিল বুকুরই বয়সি একটি ছেলে ডাম্বল, যে তার মা ও মাসির সঙ্গে বুকুদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল।

ডাম্বল বুকুর সেজোকাকার তালাবন্ধ বইয়ের আলমারির পাল্লা ধরে এমন টান দিয়েছিল যে, চাবিবন্ধ কলটা বন্ধ অবস্থাতেই খুলে বেরিয়ে এসেছিল। তারপর সে কিছু বই বের করে বইতে ছবি না থাকায় সেগুলো মাটিতে ছড়িয়ে ফেলে রেখে দিয়েছিল।

বুকু অবাক হয়ে ফ্যালফেলিয়ে মায়ের মুখের দিকে তাকিয়েছিল কেন?

বুকুর মা তাঁর ছেনুমাসি ও বেণুমাসিকে সাদর অভ্যর্থনা জানিয়ে বলেছিলেন যে, তারা বেড়াতে আসায় তিনি অত্যন্ত খুশি হয়েছেন। অথচ একটু আগেই বুকুর মুখে এদের আসার খবর পেয়ে তিনি অত্যন্ত বিরক্ত হয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে তার গা জ্বলে গেল, কারণ অসময়ে বাড়িতে লোক বেড়াতে আসা তার ভালো লাগে না। কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানেই মায়ের মুখে সম্পূর্ণ বিপরীত কথা শুনে বুকু অবাক হয়ে ফ্যালফেলিয়ে মায়ের মুখের দিকে তাকিয়েছিল।

ছেলের কথা শুনেই বুকুর মা-র মাথায় বজ্রাঘাত! – ছেলের কথা শুনেই বুকুর মা-র মাথায় বজ্রাঘাত হল কেন?

বুকু যখন তার মাকে অতিথিদের আগমন সংবাদ জানিয়েছিল, তখন তিনি অত্যন্ত বিরক্ত হয়েছিলেন এবং বুকুর সামনেই বলেছিলেন যে অসময়ে বাড়িতে লোক বেড়াতে আসা তাঁর ভালো লাগে না। অথচ পরে অতিথিদের সামনে সেই মনোভাব সম্পূর্ণ গোপন করে তিনি তাঁদের সাদর অভ্যর্থনা জানিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন। কারণ সেটাই সামাজিক ভদ্রতা। কিন্তু বুকু অল্পবয়সি হওয়ায় তার এই সামাজিক বোধ জন্মায়নি। তদুপরি বড়োরা তাকে সদাসত্যি কথা বলার পাঠ দিয়েছিল বলে মায়ের বিরক্তি প্রকাশের কথা অতিথিদের সামনেই সে ফাঁস করে দিয়েছিল। এতে বুকুর মা অতিথিদের সামনে অপদস্থ হয়েছিলেন এবং তাঁর মনে হয়েছিল মাথায় বজ্রাঘাত হয়েছে।

কে জানে পাগলা-টাগলা হয়ে যাবে নাকি! – কার সম্বন্ধে এই মন্তব্য করা হয়েছে? এমন সন্দেহের কারণ কী?

প্রশ্নে প্রদত্ত মন্তব্যটি বুকুর সম্বন্ধে করা হয়েছে।

বুকু তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসা তার মায়ের বেণুমাসির ছেলে ডাম্বলকে বইয়ের আলমারি ভাঙার জন্য শাসিয়েছিল। তারপর সে আড়ালে বলা তার মায়ের কথাগুলি অতিথিদের সামনে ফাঁস করে দিয়ে মা-কে অপদস্থ করেছিল। বুকুর এই আচরণ তার মায়ের কাছে স্বাভাবিক বলে মনে হয়নি। তাই তার মনে সন্দেহ জেগেছে যে বুকু পাগলা-টাগলা হয়ে যাবে নাকি। তা ছাড়া ছেলের বেয়াড়া আচরণের লোকলজ্জা থেকে বাঁচার জন্য তিনি ছেলেকে ‘পাগলা’ বলে সম্ভ্রম রক্ষার মরিয়া চেষ্টাও করেন।

দুজন মিলে চেঁচান, বল, বল কেন ওসব বললি? – বুকু কেন ওসব বলেছিল?

কী করে বুঝব গল্পটিতে আশাপূর্ণা দেবী শিশুমনের এক আশ্চর্য বিভ্রান্তিকর অবস্থার পরিচয় দিয়েছেন। শিশুর আচরণ শৈশবে গুরুজনের নির্দেশ মেনে চলা। পাঠ্য গল্পের বুকুও তাই করত। তার বাবা-মা তাকে সদা সত্য কথা বলার শিক্ষা দিয়েছিলেন। বুকু শিশু তাই তার পর্যাপ্ত লোকলৌকিকতার জ্ঞান এবং সামাজিক বোধ জন্মায়নি। কোন্ কথা কোথায়, কতখানি বলা উচিত এ জ্ঞান তার ছিল না স্বাভাবিকভাবেই। কিন্তু পিতৃমাতৃ আজ্ঞা পালন তা সে করতে জানত। সে অনুযায়ী যেসব সত্যি কথা বলেছিল, তার আচরণের ফলে বাবা-মাকে কতটা অপ্রস্তুতে পড়তে হবে তা না বোঝাতেই সে এমন কথা বলেছিল।

অতিথিদের আসার খবর জেনে বুকুর বাবা কী করেছিলেন?

অতিথিদের আসার খবর জেনে বুকুর বাবা চটেমটে লাল হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে ছেনুমাসিরা কি বেড়াতে আসার আর দিন পাননি? তাদের সিনেমার টিকিটগুলো নষ্ট করার জন্যই বোধহয় মাসিরা বেছে বেছে সেই দিনটিতেই এসেছিলেন।

বুকু কী বুঝতে পারেনি এবং এ বিষয়ে তোমার ধারণা কী?

আশাপূর্ণা দেবীর ‘কী করে বুঝব’ গল্পটি পড়লে বোঝা যায় যে বুকু আসলে বুঝতে পারেনি যে, বড়োদের কথা কীভাবে পালন করলে তারা খুশি হবেন। আমার মনে হয় বুকু ছেলেটি মোটেই অসভ্য বা বেয়াড়া নয়। ছ-বছরের শিশুটি অবশ্যই খুব বেশি কথা বলে। কিন্তু সে যত কথা বলেছে সবই সত্যি কথা ও কারো কাছে কিছু না লুকোনোর জন্য মায়ের যে উপদেশ, তা পালন করার জন্যই বলেছে। কিন্তু তাতে বিপরীত ফল হয়েছে এবং তার মা-বাবা অতিথিদের সামনে অপদস্থ হয়েছেন।

এই গল্পে, আমরা ছোট্ট বুকুর অসহায় অবস্থা দেখতে পাই। সত্যবাদী হওয়ার জন্য তাকে তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে শাস্তি পেতে হয়।

কাহিনীর শেষে, বুকুর বাবা-মা তাকে মারধর করে কারণ সে তাদের মামাদের অপ্রত্যাশিত আগমন সম্পর্কে তাদের বন্ধুদের কাছে বলেছিল। বুকু বুঝতে পারে না কেন তারা তাকে মারছে, কারণ সে সর্বদা তাদের কথা মেনে চলেছে এবং সত্য বলেছে।

এই ঘটনা বুকুর মনে গভীর প্রভাব ফেলে। সে সত্যবাদিতার ধারণা নিয়ে প্রশ্ন তোলে এবং ভাবতে থাকে যে সত্যবাদী হওয়ার জন্য কী মূল্য দিতে হয়।

গল্পটির শেষ খোলা থাকে, বুকুর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কোন স্পষ্ট ধারণা দেয় না। পাঠকদের উপর নির্ভর করে বুকু এই অভিজ্ঞতা থেকে কী শিক্ষা লাভ করবে এবং ভবিষ্যতে সে কীভাবে আচরণ করবে তা অনুমান করা।

উল্লেখ্য, এই গল্পটি শুধুমাত্র বুকুর অসহায় অবস্থা চিত্রিত করে না, বরং সমাজের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিকও তুলে ধরে। গল্পটিতে প্রকাশ পায়:

  • পরিবারে ঐতিহ্যবাহী মূল্যবোধের প্রভাব
  • সামাজিক শ্রেণীবিন্যাসের প্রভাব
  • শিশুদের মানসিক বিকাশে পরিবারের ভূমিকা

পরিশেষে, আশাপূর্ণা দেবীর “ছেনুমাসি” গল্পটি শুধুমাত্র একটি मनोरंजक গল্পই নয়, বরং সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে। গল্পটি পাঠকদের নীতিবোধ, সত্যবাদিতা এবং পারিবারিক সম্পর্কের গুরুত্ব সম্পর্কে চিন্তা করতে বাধ্য করে।

Share via:

মন্তব্য করুন