অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – হাওয়ার গান – বুদ্ধদেব বসু

Gopi

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের হাওয়ার গান অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে হাওয়ার গান অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় হাওয়ার গান অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই হাওয়ার গান অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

বুদ্ধদেব বসুর জন্ম ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ৩০ নভেম্বরে এবং মৃত্যু ১৮ মার্চ, ১৯৭৪ খিস্টাব্দে। তাঁর বাবার নাম ভূপেন্দ্রচন্দ্র বসু। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সমালোচক ও সম্পাদক। তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্যের অধ্যাপক ছিলেন। ‘কবিতা’ পত্রিকার সম্পাদক ও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে তিনি যাচ্ছিলেন। ‘তপস্বী ও তরঙ্গিণী’ নাটকের জন্য তিনি ‘আকাদেমি পুরস্কার’ পান।

তিনি ‘পদ্মভূষণ উপাধি’-তেও সম্মানিত হন। হাওয়ারা যেন চিরকাল গৃহহীন। কাকে যেন খুঁজে খুঁজে তারা সারা পৃথিবী জুড়ে কেঁদে ফেরে। সাগর, পাহাড়, বন্দর, নগর, অরণ্যপ্রান্তর জুড়ে তারা বৃথাই ঘুরে মরে। যাকে খোঁজে সে যেন কোথাও নেই। পার্কের বেঞ্চিতে ঝরে-পড়া পাতা, কাচের জানলায় কেঁপে ওঠা শার্সি, চিমনির শব্দের কাছে তারা এই প্রশ্ন করে চলে। ঘরের মধ্যে দোলনায় ঘুমিয়ে থাকা শিশু, কার্পেটের উপর তন্দ্রাচ্ছন্ন কুকুর, মৃদু মোমের আলো জ্বলা স্বপ্নময় ঘর সবই আছে। শুধু যাকে তারা খোঁজে, সে যেন কোথায় হারিয়ে গেছে। অন্ধকার রাতে সমুদ্রের বুকে ভেসে চলা জাহাজের মাস্তুলে যখন আলো জ্বলে, যাত্রীরা নানা আনন্দে মেতে থাকে, হাওয়ারা তখন ঢেউয়ের বুকে আঘাত করে নিজেদের প্রশ্নের উত্তর খোঁজে।

কিন্তু সেখানেও যাকে খোঁজে তাকে পায় না। একসময় রাত গভীর হলে জাহাজের সব কোলাহল থেমে যায়, শুধু অন্ধকারে সমুদ্রের দোলা আর গর্জন চলে, চাঁদও অস্তগামী হয়। কিন্তু হাওয়াদের কোনো বিশ্রাম নেই। তাদের বাড়ি নেই, দেশ নেই, আছে শুধু অবিরাম ছুটে চলা। অন্তহীন সময় ধরে চলেছে তাদের এই সন্ধান। সারা বিশ্ব জুড়ে যেন বেজে চলেছে। তাদের সেই করুণ গান-নেই, সে কোথাও নেই। তাই তারা চিরকাল উত্তাল হয়ে ফেরে। আসলে কবি তথা মননশীল মানুষের জীবনও যেন এমনই কোনো প্রাণের মানুষের খোঁজে অবিরাম ছুটে চলা। তাই তারও সত্যকার বাড়ি বা আত্মার আশ্রয় কোথাও নেই। তাকেই পাওয়ার জন্য মানুষের চিরকাল খুঁজে ফেরা। সে হয়তো আছে, হয়তো কোথাও নেই।

হাওয়ার গান কবিতাটি বুদ্ধদেব বসুর রচিত একটি বিখ্যাত কবিতা। এটি অষ্টম শ্রেণীর বাংলা পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত। কবিতাটিতে হাওয়ার বিভিন্ন রূপ ও তার প্রভাব বর্ণনা করা হয়েছে।

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – হাওয়ার গান

হাওয়ার গান অধ্যায়ের লেখক পরিচিতি

বুদ্ধদেব বসুর জন্ম ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ৩০ নভেম্বর এবং মৃত্যু ১৮ মার্চ, ১৯৭৪ খিস্টাব্দে। তাঁর বাবার নাম ভূপেন্দ্রচন্দ্র বসু। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, কথাসাহিত্যিক নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সমালোচক ও সম্পাদক। তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্যের অধ্যাপক ছিলেন। ‘কবিতা’ পত্রিকার সম্পাদকও ছিলেন তিনি। ‘তপস্বী ও তরঙ্গিণী’ নাটকের জন্য তিনি ‘আকাদেমি পুরস্কার’ পান। তিনি ‘পদ্মভূষণ উপাধি’-তেও সম্মানিত হন।

উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলি –

  • কাব্যগ্রন্থ – ‘বন্দীর বন্দনা’, ‘দ্রৌপদীর শাড়ি’, ‘দময়ন্তী’, ‘কঙ্কাবতী’, ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’, ‘শীতের প্রার্থনা’, ‘বসন্তের উত্তর’, ‘যে আঁধার আলোর অধিক’ প্রভৃতি।
  • উপন্যাস ও নাটক – ‘তিথিডোর’, ‘তপস্বী ও তরঙ্গিণী’, ‘সাড়া’, ‘রাতভোর বৃষ্টি’, ‘কলকাতার ইলেকট্রা’ প্রভৃতি।
  • প্রবন্ধ গ্রন্থ – ‘সাহিত্যচর্চা’, ‘নিঃসঙ্গতা’, ‘রবীন্দ্রনাথ-স্বদেশ ও সংস্কৃতি’, ‘An Acre of Green Grass’ প্রভৃতি।

হাওয়ার গান অধ্যায়ের পাঠপ্রসঙ্গ

কবিতা পাঠের সময় মনে রাখা দরকার যে উৎকৃষ্ট কবিতায় বাচ্যার্থটুকুই সব নয়, তার আড়ালে অন্য কোনো গভীর ব্যঞ্জনা লুকিয়ে থাকে। এই কবিতাতেও হাওয়ায় হাহাকারের মাধ্যমে কবির তথা মানুষের হৃদয়ের গভীর বেদনাই মূর্ত হয়েছে।

হাওয়ার গান অধ্যায়ের বিষয়সংক্ষেপ

হাওয়ারা যেন চিরকাল গৃহহীন। কাকে যেন খুঁজে খুঁজে তারা সারা পৃথিবী জুড়ে কেঁদে ফেরে। সাগর, পাহাড়, বন্দর, নগর, অরণ্যপ্রান্তর জুড়ে তারা বৃথাই ঘুরে মরে। যাকে খোঁজে সে যেন কোথাও নেই।

পার্কের বেঞ্চিতে ঝরে-পড়া পাতা, কাচের জানলায় কেঁপে ওঠা শার্সি, চিমনির শব্দের কাছে তারা এই প্রশ্ন করে চলে। ঘরের মধ্যে দোলনায় ঘুমিয়ে থাকা শিশু, কার্পেটের উপর তন্দ্রাচ্ছন্ন কুকুর, মৃদু মোমের আলো জ্বলা স্বপ্নময় ঘর সবই আছে। শুধু যাকে তারা খোঁজে, সে যেন কোথায় হারিয়ে গেছে। অন্ধকার রাতে সমুদ্রের বুকে ভেসে চলা জাহাজের মাস্তুলে যখন আলো জ্বলে, যাত্রীরা নানা আনন্দে মেতে থাকে, হাওয়ারা তখন ঢেউয়ের বুকে আঘাত করে নিজেদের প্রশ্নের উত্তর খোঁজে। কিন্তু সেখানেও যাকে খোঁজে তাকে পায় না। একসময় রাত গভীর হলে জাহাজের সব কোলাহল থেমে যায়, শুধু অন্ধকারে সমুদ্রের দোলা আর গর্জন চলে, চাঁদও অস্তগামী হয়। কিন্তু হাওয়াদের কোনো বিশ্রাম নেই। তাদের বাড়ি নেই, দেশ নেই, আছে শুধু অবিরাম ছুটে চলা। অন্তহীন সময় ধরে চলেছে তাদের এই সন্ধান। সারা বিশ্ব জুড়ে যেন বেজে চলেছে। তাদের সেই করুণ গান-নেই, সে কোথাও নেই। তাই তারা চিরকাল উত্তাল হয়ে ফেরে।

আসলে কবি তথা মননশীল মানুষের জীবনও যেন এমনই কোনো প্রাণের মানুষের খোঁজে অবিরাম ছুটে চলা। তাই তারও সত্যকার বাড়ি বা আত্মার আশ্রয় কোথাও নেই। তাকেই পাওয়ার জন্য মানুষের চিরকাল খুঁজে ফেরা। সে হয়তো আছে, হয়তো কোথাও নেই!

হাওয়ার গান অধ্যায়ের নামকরণ

নামকরণ সাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। নামকরণের মধ্য দিয়ে পাঠক বিন্দুতে সিন্ধু দর্শনের মতো সাহিত্য-বিষয়টি পাঠ করার আগেই সাহিত্য-বিষয়টি সম্পর্কে খানিক ধারণা লাভ করতে পারেন। সাহিত্যে নামকরণ নানা উপায়ে হতে পারে। যথা – চরিত্রকেন্দ্রিক, ঘটনাকেন্দ্রিক, ব্যঞ্জনাধর্মী ইত্যাদি।

কবিতার শিরোনাম তার বক্তব্য অথবা ভাববস্তুর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া প্রয়োজন। কখনও সমুদ্রে, কখনও পথে, কখনও পার্কে বয়ে চলা হাওয়ার শব্দে কবি যেন তাদের গৃহহীনতার বেদনা, কোনো না পাওয়া বঞ্চিতের সন্ধানে অবিরাম ছুটে চলাকে অনুভব করেছেন। হাওয়ার শব্দে যেন বাজে সেই বেদনার করুণ সুর। তাই ‘হাওয়ার গান’ নামকরণটি সুপ্রযুক্তই হয়েছে।

হাওয়ার গান অধ্যায়ের শব্দার্থ ও টীকা

হাওয়াদের – বাতাসদের। নিশ্বাস – প্রশ্বাস। উত্তাল – বিক্ষুব্ধ, আলোড়িত। দুর্বার – দুর্দমনীয়; যাকে প্রতিরোধ করা যায় না। বন্দর – নদী বা সমুদ্র তীরবর্তী বাণিজ্যকেন্দ্র। নগর – শহর। প্রান্তর – মাঠ। তেপান্তর – জনহীন ও দিগন্তবিস্তৃত প্রান্তর। পার্ক – খেলা বা বেড়ানোর উদ্যান। বেঞ্চি – উঁচু পায়াযুক্ত কাঠের আসন। শার্সি – কাচের কপাট। পঞ্জর – পাঁজর। চিমনি – ল্যাম্প; হ্যারিকেন ইত্যাদি কাচের চোঙ। নিম্বন – শব্দ। কানন – বন; বাগান। ক্রন্দন – কান্না। শুধাই – জিজ্ঞাসা করি। কার্পেট – গালিচা। তন্দ্রায় – ঘুমের আবেশে। মৃদু – ক্ষীণ। মাস্তুলে – নৌকোর বা জাহাজের পাল তোলার খুঁটি। সিনেমা – ছায়াছবি; চলচ্চিত্র। তরঙ্গ – ঢেউ; লহরী। নর্তন – নাচ; নৃত্য। মত্ত – মাতাল। আবর্তন – ঘূর্ণন। ডেক – জাহাজের পাটাতন। নির্জন – জনহীন। অকূল – যার কূলকিনারা নেই। পারাপার – একূল-ওকূল পার হওয়া। অন্তহীন – অশেষ। অফুরান – যা ফুরায় না।

সাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল নামকরণ। পাঠক বিন্দুতে সিন্ধু দর্শনের মতো, নামকরণের মাধ্যমে পাঠক সাহিত্যকর্মটি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা লাভ করতে পারেন। নামকরণ চরিত্রকেন্দ্রিক, ঘটনাকেন্দ্রিক, ব্যঞ্জনাধর্মী ইত্যাদি বিভিন্ন উপায়ে হতে পারে।

কবিতার ক্ষেত্রে, শিরোনামের সাথে কবিতার বক্তব্য ও ভাববস্তুর সঙ্গতি থাকা অপরিহার্য। “হাওয়ার গান” কবিতায়, কবি সমুদ্র, পথ ও পার্কে বয়ে চলা হাওয়ার শব্দে তাদের গৃহহীনতার বেদনা ও অবিরাম ছুটে বেড়ানোর বেদনাকে ফুটিয়ে তুলেছেন। হাওয়ার শব্দে বাজে সেই বেদনার করুণ সুর। তাই “হাওয়ার গান” নামকরণটি সুসঙ্গত ও অত্যন্ত প্রযুক্ত।

এইভাবে, সাহিত্যকর্মের নামকরণ পাঠকের আকর্ষণ ও রসবোধ জাগ্রত করে এবং সাহিত্যকর্মের মূল ভাবধারাকে স্পষ্ট করে তোলে।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না –  ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer