অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – টিকিটের অ্যালবাম – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের টিকিটের অ্যালবাম অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে টিকিটের অ্যালবাম অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় টিকিটের অ্যালবাম অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই টিকিটের অ্যালবাম অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

Table of Contents

রাজাপ্পা, এক কিশোর, বেশ কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করছিল যে স্কুলের সবাই নাগরাজনের চারপাশে ভিড় করছে। কারণ, নাগরাজনের কাকা তাকে সিঙ্গাপুর থেকে পাঠিয়েছেন একটি টিকিটের অ্যালবাম। রাজাপ্পা, যার নিজেরও এক সময় বিখ্যাত টিকিটের অ্যালবাম ছিল, তার মনে ক্রমশ ঈর্ষা ও লোভ জাগ্রত হয়।

অনেকবার বন্ধুদের কাছে নাগরাজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলেও রাজাপ্পা তার অসন্তোষ প্রকাশ করতে পারেনি। একদিন সে সিদ্ধান্ত নেয়, সে নাগরাজনের অ্যালবামটি চুরি করে নিজের করে ফেলবে।

সুযোগ পেয়ে রাজাপ্পা নাগরাজনের বাড়িতে যায়। নাগরাজনের বোন যখন অ্যালবামটি দেখাতে যায়, তখন রাজাপ্পা সুযোগে অ্যালবামটি লুকিয়ে ফেলে। ঘরে ফিরে রাজাপ্পা উত্তেজনা ও ভয়ে কাঁপতে থাকে। রাতেও সে কিছু খেতে পারে না।

পরের দিন সকালে, রাজাপ্পার ভয় সত্যি হয়। নাগরাজন অ্যালবাম হারানোর কষ্টে কাঁদছে। তার বাবা পুলিশ সুপার, তাই অ্যালবাম উদ্ধারের জন্য পুলিশ আসার আশঙ্কাও রয়েছে। ভয়ে রাজাপ্পা অ্যালবামটি স্নানের ঘরে ফেলে দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে।

কিছুক্ষণ পর, নাগরাজন তার দুঃখের কথা রাজাপ্পাকে জানায়। রাজাপ্পার মনে অনুশোচনা জাগ্রত হয়। সে নাগরাজনকে নিজের অ্যালবামটি উপহার দেয়। নাগরাজন প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে রাজি হয়।

এক রাতের জন্য নাগরাজনের কাছ থেকে অ্যালবামটি ধার নিয়ে রাজাপ্পা ঘরে ঢুকে সেটি জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে। এই ঘটনা রাজাপ্পাকে শেখায় ঈর্ষা ও লোভের ক্ষতিকর পরিণতি। অনুশোচনার মাধ্যমে সে তার ভুল বুঝতে পারে এবং বন্ধুত্বের মূল্য উপলব্ধি করে।

টিকিটের অ্যালবাম – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

ক্রমশ ওর স্কুল যেতেও বিতৃষ্ণা জাগতে লাগল। – কার কেন স্কুল যেতে বিতৃষ্ণা জাগতে লাগল?

স্কুলের ছেলেরা রাজাপ্পাকে বিশেষ নজর দিত না। নাগরাজনের নতুন টিকিটের অ্যালবাম দেখার জন্য তারা তার চারপাশে ভিড় জমাত। এমনকি রাজাপ্পাকে তারা ব্যঙ্গ, পরিহাস করত। এই কারণে রাজাপ্পার ক্রমশ স্কুল যেতেও বিতৃষ্ণা জাগতে লাগল।

ওর ইঙ্গিত মাত্রে পুলিশবাহিনী অ্যালবাম খুঁজতে বেরিয়ে পড়বে। – ‘ওর’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? তার ইঙ্গিত মাত্রে পুলিশবাহিনী অ্যালবাম খুঁজতে বেরিয়ে পড়বে কেন?

প্রশ্নে প্রদত্ত উদ্ধৃতাংশটিতে ‘ওর’ বলতে নাগরাজনের বাবাকে বোঝানো হয়েছে।

নাগরাজনের বাবা পুলিশসুপারের অফিসে কাজ করতেন। সে-কারণে তার ইঙ্গিত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ছিল পুলিশবাহিনীর কাছে। তার ইঙ্গিত পেলেই তারা তার ছেলে নাগরাজনের টিকিটের অ্যালবাম খোঁজার কাজে নেমে পড়বে।

সেই অ্যালবামের প্রথম পাতায় কী লেখা ছিল?

অ্যালবামের প্রথম পাতায় মোটা মোটা অক্ষরে ‘এস নাগরাজন’ নামটি লেখা ছিল। এর নীচে লেখা ছিল – ‘এই অ্যালবামটা চুরি করতে চেষ্টা করছ যে নির্লজ্জ হতভাগা, তাকে বলছি’ ‘ওপরে আমার নামটা দেখেছ? এটা আমার অ্যালবাম। এটা আমার এবং যতদিন ঘাসের রং সবুজ আর পদ্মফুল লাল, সূর্য পূর্বে উঠবে আর পশ্চিমে অস্ত যাবে একমাত্র আমারই থাকবে।’

কেটে পড় হিংসুটে পোকা। – বক্তা কে? কাকে সে এমন কথা বলেছে? তুমি কি এই কথার মধ্যে কোনো যুক্তি খুঁজে পাও?

সুন্দর রামস্বামী রচিত ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পের এক ছাত্র কৃষ্ণান উক্তিটির বক্তা।

সে উক্ত কথাটি বলেছিল ওই গল্পের অন্যতম চরিত্র রাজাপ্পাকে।

ছেলেমেয়েরা নাগরাজনের অ্যালবামের উপরের লেখা টুকে নেওয়ায় রাজাপ্পা তাদের বিদ্রুপ করে, তখন কৃষ্ণান রাজাপ্পাকে হিংসুটে বলেছে। হ্যাঁ কৃষ্ণানের কথাকে আমিও সমর্থন করি। কারণ নাগরাজনের অ্যালবামে আকৃষ্ট হয়ে, কেউ আর রাজাপ্পার অ্যালবামকে গুরুত্ব দিচ্ছিল না, তাতে রাজাপ্পা নাগরাজনের প্রতি ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে নাগরাজনের নামে মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। এর থেকেই বোঝা যায় রাজাপ্পা সত্যিই হিংসুটে ছিল তাই কৃষ্ণানের কথায় যুক্তি আছে বলে আমি মনে করি।

এদের সঙ্গে তর্ক করে লাভ নেই। – উপলব্ধিটি কার? কী বিষয়ে তর্কের প্রসঙ্গ এসেছে? তর্ক করে লাভ নেই কেন?

উপলব্ধিটি করেছে সুন্দর রামস্বামী রচিত ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পের অন্যতম চরিত্র রাজাপ্পা।

কার অ্যালবাম বেশি ভালো-রাজাপ্পা না নাগরাজনের-এই বিষয়কে কেন্দ্র করেই তর্কের প্রসঙ্গ এসেছে।

রাজাপ্পার টিকিটের অ্যালবামের সঙ্গে জড়িয়ে ছিল তার আবেগ। বহুদিন ধরে একটা একটা করে টিকিট সংগ্রহ করে অনেক কষ্টে সে তার অ্যালবামটিকে সাজিয়ে তুলেছিল-সেটার সঙ্গে তার ভালোবাসা জড়িয়ে ছিল আর নাগরাজনের অ্যালবাম যতই সুন্দর হোক সেটা হঠাৎ পাওয়া, তার সঙ্গে কোনো শ্রম বা আবেগ জড়িয়ে ছিল না। কিন্তু এইসব কথা বন্ধুরা বুঝতে পারবে না ভেবেই রাজাপ্পার মনে হয়েছে যে, তর্ক করে কোনো লাভ নেই।

হঠাৎ যেন ওর জনপ্রিয়তা কমে গেছে – কার এমন মনে হয়েছে? এই ‘জনপ্রিয়তা’ হঠাৎ কমে যাওয়ার কারণ কী?

প্রশ্নে প্রদত্ত অংশটি সুন্দর রামস্বামী রচিত ‘টিকিটের অ্যালবাম’ নামক গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। এই কথাটি মনে হয়েছিল রাজাপ্পার।

নাগরাজনের কাকা নাগরাজনকে সিঙ্গাপুর থেকে একটা অপরূপ সুন্দর ডাকটিকিটের অ্যালবাম পাঠিয়েছিল। সেটি দেখার জন্য স্কুলের ছেলেরা উৎসুক হয়ে পড়ে। তারা নাগরাজনের চারপাশে ভিড় জমাতে থাকে। রাজাপ্পার সংগৃহীত ডাকটিকিটের অ্যালবামটির প্রতি কেউ আর বিশেষ নজর দিত না। এই কারণে রাজাপ্পার ‘জনপ্রিয়তা’ হঠাৎ কমে গিয়েছিল।

চোরাদৃষ্টিতে অ্যালবামটা দেখত — সেই চোরা দৃষ্টিতে দেখা অ্যালবামটির কোন্ বিশেষত্বের কথা গল্পে রয়েছে?

প্রশ্নোক্ত অংশটি সুন্দর রামস্বামীর ‘টিকিটের অ্যালবাম’ নামক গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে গল্পের অন্যতম চরিত্র নাগরাজনের অ্যালবামটির কথা বলা হয়েছে, সেটি চোরা দৃষ্টিতে দেখত রাজাপ্পা নামক কিশোরটি।

নাগরাজনের অ্যালবামটি তার কাকা সিঙ্গাপুর থেকে তাকে পাঠিয়েছে। অ্যালবামটি বেশ সুন্দর দেখতে ছিল। স্থানীয় কোনো দোকানে এমন অ্যালবাম ছিল না। অ্যালবামটি এককথায় অদ্বিতীয় ছিল-সেটাই ছিল এই অ্যালবামটির বিশেষত্ব।

সন্ধ্যাবেলা রাজাপ্পা নাগরাজনের বাড়ি গেল। – কোন্ উদ্দেশ্য নিয়ে রাজাপ্পা নাগরাজনের বাড়িতে গিয়েছিল? এর মধ্য দিয়ে তার চরিত্রের কোন্ দিকটি ধরা পড়ে?

সুন্দর রামস্বামীর ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পে রাজাপ্পা মনস্থির করেছিল যে, সে আর নিজের অসম্মান কখনোই সহ্য করবে না। নাগরাজন মূলত একজন অপেশাদার ও অনভিজ্ঞ ব্যক্তি। তাই রাজাপ্পা সহজেই তার কাছ থেকে কম দামি টিকিট দিয়ে দামিগুলো হাতিয়ে নিতে পারবে। এই উদ্দেশ্যেই রাজাপ্পা নাগরাজনের বাড়ি এসেছিল।

এর মধ্য দিয়ে রাজাপ্পার চরিত্রের যে দিকটি ফুটে ওঠে তা হল চালাকি বা প্রতারণার মানসিকতা। একজন ব্যক্তির অনভিজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে তাকে ঠকানো ঘোরতর অন্যায়। নিজের দ্রব্যকে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা দেওয়ার জন্য অন্যকে প্রতারিত করার মানসিকতা অবশ্যই নিন্দনীয়।

ঈর্ষা ও লোভের কবলে পতিত রাজাপ্পা, নাগরাজনের অমূল্য অ্যালবাম চুরি করে নিজের করে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে সে নিজের অ্যালবাম পুড়িয়ে দিয়ে আরও বড়ো বিপদ ডেকে আনে।

অন্তর্দাহে জ্বলতে থাকা রাজাপ্পা, অনুশোচনার বেদনায় ভেঙে পড়ে। সে নিজের ভুল বুঝতে পারে এবং নাগরাজনের কাছে ক্ষমা চায়।

এই ঘটনা রাজাপ্পাকে শেখায় যে, ঈর্ষা ও লোভের ক্ষতিকর পরিণতি কতটা ভয়াবহ। বন্ধুত্ব ও সততার মূল্য অনুধাবন করে সে নতুন করে জীবন শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়।

এই গল্পটি আমাদের সকলকে সতর্ক করে দেয়, ঈর্ষা ও লোভের কবলে পতিত হলে আমরা কতটা ভুল পথে যেতে পারি। বন্ধুত্ব ও সততার গুরুত্ব উপলব্ধি করে আমাদের সকলের উচিত সঠিক পথে জীবনযাপন করা।

Share via:

মন্তব্য করুন