দাক্ষিণাত্য মালভূমির অন্তর্গত উল্লেখযোগ্য পর্বত শ্রেণিগুলি সম্পর্কে লেখো

Rahul

এই আর্টিকেলটিতে, আমরা দক্ষিণ ভারতের মালভূমির অন্তর্গত উল্লেখযোগ্য পর্বতমালাগুলি সম্পর্কে আলোচনা করব। দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” অধ্যায়ের “ভারতের ভূপ্রকৃতি” বিভাগের একটি অংশ।

দাক্ষিণাত্য মালভূমির অন্তর্গত উল্লেখযোগ্য পর্বত শ্রেণিগুলি সম্পর্কে লেখো

দাক্ষিণাত্য মালভূমির অন্তর্গত উল্লেখযোগ্য পর্বত শ্রেণি

সাতপুৱা-মহাদেৱ-মহাকাল পর্বতশ্রেণি –

  • নর্মদা নদী উপত্যকার দক্ষিণ সীমা বরাবর পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত হয়েছে সাতপুরা-মহাদেব-মহাকাল পর্বত। সাতপুরার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ধূপগড় (1350 মি)।
  • মহাদেব পর্বতে চুনাপাথরের গুহা দেখা যায়।
  • মহাকাল পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ অমরকণ্টক (1057 মি)।
  • সাতপুরা একটি হোস্ট (স্তূপ) জাতীয় পর্বত ও এর দু-পাশের নর্মদা ও তাপ্তী নদীর উপত্যকা দুটি গ্রাবেনজাতীয় (গ্রস্ত উপত্যকা)।

অজন্তা পর্বতশ্রেণি –

সাতপুরার দক্ষিণে লাভা গঠিত অজন্তা পর্বতশ্রেণি পূর্ব থেকে পশ্চিমে বিস্তৃত। এই পর্বতশ্রেণিটি ক্রমাগত ক্ষয়ের ফলে ব্যবচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।

পশ্চিমঘাট বা সহ্যাদ্রি পর্বতশ্রেণি –

  • দাক্ষিণাত্য মালভূমির পশ্চিম সীমায় পশ্চিমঘাট পর্বতশ্রেণি (দৈর্ঘ্য প্রায় 1600 কিমি এবং গড় উচ্চতা প্রায় 1200 মি) অবস্থিত।
  • এই পর্বতের পশ্চিমের ঢাল খুব খাড়া হলেও পূর্বদিকে তা ধাপে ধাপে নেমে মালভূমিতে মিশেছে।
  • অগস্ত্যকূটম (1868 মি) এই পর্বতের একটি উল্লেখযোগ্য শৃঙ্গ। এ ছাড়া এখানে কলসুবাই, মহাবালেশ্বর, সালেহর প্রভৃতি পর্বতশৃঙ্গও দেখা যায়।
  • এই পর্বতশ্রেণির দুটি প্রধান গিরিপথ বা গ্যাপ (gap) হল — নাসিকের কাছে অবস্থিত থলঘাট এবং পুনের কাছে অবস্থিত ভোরঘাট।
  • পশ্চিমঘাট পর্বতের দক্ষিণাংশ গ্র্যানাইট নিস শিলা দ্বারা গঠিত হওয়ায়, এখানকার পাহাড়ের চূড়াগুলি গোলাকার।

নীলগিরি-আনাইমালাই-কার্ডামম-পালনি পর্বতশ্রেণি –

  • পশ্চিমঘাট পর্বত দক্ষিণে নীলগিরি পর্বতে মিলিত হয়েছে। নীলগিরির সর্বোচ্চ শৃঙ্গ দোদাবেতা (2637 মি)
  • নীলগিরির দক্ষিণে পালঘাট গিরিপথ অবস্থিত।
  • এই গিরিপথের দক্ষিণে ঘন অরণ্যে ঢাকা আনাইমালাই, কার্ডামম ও পালনি পর্বতশ্রেণি দেখা যায়।
  • আনাইমালাই পর্বতের আনামুদি বা আনাইমুদি (2695 মি) দক্ষিণ ভারতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ।

পূর্বঘাট পর্বতশ্রেণি –

  • দাক্ষিণাত্য মালভূমির পূর্ব সীমায় পূর্ব উপকূলের সমান্তরালে উত্তর-দক্ষিণে পূর্বঘাট পর্বতশ্রেণি বিস্তৃত।
  • এই পর্বতশ্রেণি খুবই বিচ্ছিন্ন এবং এর উচ্চতাও অনেক কম গড়ে 600 মি)।
  • নান্নামালাই, ভেলিকোণ্ডা, পলকোণ্ডা, সেভরয়, পচামালাই, জাভাদি প্রভৃতি কয়েকটি বিচ্ছিন্ন পাহাড়ের সমন্বয়ে পূর্বঘাট পর্বতমালা গঠিত।
  • গোদাবরী ও মহানদীর মাঝখানে অবস্থিত পূর্বঘাটের উত্তরাংশ বেশ উঁচু। এর স্থানীয় নাম মহেন্দ্রগিরি। পূর্বঘাটের অন্য কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পাহাড় পাহাড় হল — নাল্লামালাই, পচামালাই, ভেলিকোন্ডা প্রভৃতি।
  • এই পর্বতশ্রেণির সবচেয়ে উঁচু অংশ হল আরমাকোন্ডা (1680 মি)।
দাক্ষিণাত্য মালভূমি

দক্ষিণ ভারতের মালভূমি, তার মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং সমৃদ্ধ ইতিহাসের জন্য বিখ্যাত, ভারতের ভৌগোলিক বৈচিত্র্যের এক চমৎকার প্রতীক। এই অঞ্চলের পর্বতমালাগুলি কেবল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই নয়, বরং এই অঞ্চলের মানুষের জীবিকা ও সংস্কৃতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এই ব্লগ পোস্টে, আমরা দক্ষিণ ভারতের মালভূমির উল্লেখযোগ্য পর্বতমালাগুলির কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছি। আমরা আশা করি এই তথ্যগুলি আপনাদের এই অঞ্চল সম্পর্কে আরও জানতে এবং এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

Please Share This Article

Related Posts

শিশির, কুয়াশা প্রভৃতি অধঃক্ষেপণ নয় কেন

অধঃক্ষেপণ কাকে বলে? অধঃক্ষেপণের রূপভেদ গুলি আলোচনা করো।

মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা সম্পর্কে টীকা লেখো।

মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা সম্পর্কে টীকা লেখো।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতের শ্রমিক আন্দোলনগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতের শ্রমিক আন্দোলনগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

অধঃক্ষেপণ কাকে বলে? অধঃক্ষেপণের রূপভেদ গুলি আলোচনা করো।

মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা সম্পর্কে টীকা লেখো।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতের শ্রমিক আন্দোলনগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

বিংশ শতকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতে সংঘটিত কৃষক বিদ্রোহগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

অহিংস অসহযোগ আন্দোলনে কৃষক সমাজ কীভাবে অংশগ্রহণ করেছিল?