ভারতের প্রাচীন মালভূমি অঞ্চলের ভূপ্রকৃতির বর্ণনা করো

Rahul

ভারতের বৈচিত্র্যময় ভূপ্রকৃতি দেশটিকে একটি অনন্য সৌন্দর্য্য দান করেছে। এই বৈচিত্র্যের মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য হল প্রাচীন মালভূমি অঞ্চল। দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য এই অঞ্চলটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” অধ্যায়ের “ভারতের ভূপ্রকৃতি” বিভাগের একটি অংশ।

এই ব্লগ পোস্টে, আমরা ভারতের প্রাচীন মালভূমি অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি সম্পর্কে একটি বিস্তারিত আলোচনা করব। আমরা এই অঞ্চলের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য, গঠন, ভূতাত্ত্বিক ইতিহাস এবং ভৌগোলিক গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করব। আশা করি এই আলোচনা আপনাদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য সহায়ক হবে।

ভারতের প্রাচীন মালভূমি অঞ্চলের ভূপ্রকৃতির বর্ণনা করো

প্রাচীন মালভূমি অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি –

ভারতের প্রাচীন মালভূমির দুটি অংশ –

  • মূল ভূভাগ এবং
  • বিচ্ছিন্ন ভূভাগ।

মূল ভূভাগ –

উত্তরে বিন্ধ্য, সাতপুরা-মহাদেব-মহাকাল, পশ্চিমে সহ্যাদ্রি, পূর্বে মলয়াদ্রি এবং দক্ষিণে নীলগিরি ও আনাইমালাই পর্বতশ্রেণিসমূহের মধ্যে উপদ্বীপীয় মালভূমির মূল ভূভাগ অবস্থিত।

ভারতের প্রাচীন মালভূমি অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য –

  • এই মালভূমির উত্তর-পশ্চিমাংশে লাভাজাত শিলা দ্বারা আবৃত মহারাষ্ট্র মালভূমি দেখা যায়, যা ডেকান ট্র্যাপ নামেও পরিচিত।
  • দক্ষিণাংশে কর্ণাটক রাজ্যের গ্র্যানাইট ও নিস পাথরে গঠিত মালভূমিকে বলে কর্ণাটক মালভূমি। এই মালভূমির পশ্চিমঘাট পর্বত-সংলগ্ন উঁচু পাহাড়ি ভূমিকে বলা হয় মালনাদ এবং পূর্বাংশের উন্মুক্ত সমতল এলাকাটির নাম ময়দান।
  • এই মালভূমির উত্তর-পূর্বাংশের নাম ছোটোনাগপুর মালভূমি। এখানকার সর্বোচ্চ অংশ হল পাট অঞ্চল গড় উচ্চতা প্রায় (1100 মি)। এখানে পরেশনাথ, দলমা, রাজমহল প্রভৃতি পাহাড় দেখা যায়। অঞ্চলটি খনিজ সম্পদে খুবই সমৃদ্ধ।
  • উপদ্বীপীয় মালভূমির উত্তর-পশ্চিম প্রান্ত বা মধ্য ভারতের উচ্চভূমি অংশে মালব মালভূমি, বুন্দেলখণ্ড মালভূমি, রেওয়া মালভূমি প্রভৃতি অবস্থিত।
  • এই মালভূমির পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত আরও কয়েকটি উল্লেখযোগ্য এলাকা হল — ছত্তিশগড় অঞ্চল, দণ্ডকারণ্য এলাকা, তামিলনাড়ু মালভূমি প্রভৃতি।

বিচ্ছিন্ন ভূভাগ –

উপদ্বীপীয় মালভূমির একটি বিচ্ছিন্ন অংশের নাম মেঘালয় মালভূমি।

উপদ্বীপীয় মালভূমির বৈশিষ্ট্য –

  • এখানে গারো, খাসি, জয়ন্তিয়া ও মিকির পাহাড় অবস্থিত। শিলং শৃঙ্গ (1961 মি) মেঘালয় মেঘালয় মালভূমির উচ্চতম শৃঙ্গ।
  • মেঘালয় মালভূমি হল দাক্ষিণাত্য মালভূমির একটি বিচ্ছিন্ন অংশ।
  • এখানকার গড় উচ্চতা 900 মিটার।
  • এই মালভূমির উত্তরে শিলং পাহাড় ও শিলং শৃঙ্গ, উত্তর-পূর্বে মিকিরের পাহাড়ি অঞ্চল, মধ্যভাগ খাসি জয়ন্তিয়া পাহাড় এবং দক্ষিণে চেরা মালভূমি অবস্থিত।

ভারতের প্রাচীন মালভূমি অঞ্চলগুলি দেশের ভূগোল এবং প্রাকৃতিক সম্পদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই অঞ্চলগুলির ভূপ্রকৃতির বৈচিত্র্য, খনিজ সম্পদ এবং বনজ সম্পদ ভারতের অর্থনীতি এবং পরিবেশকে সমর্থন করে। দশম শ্রেণীর পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এই অঞ্চলগুলির ভালো বোঝা গুরুত্বপূর্ণ।

Please Share This Article

Related Posts

সিঙ্গাপুরের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে জলবায়ু ও গোলার্ধ শনাক্ত করো -

সিঙ্গাপুরের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে জলবায়ু ও গোলার্ধ শনাক্ত করো।

বাংলায় ছাপাখানা ও মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কীরূপ অবদান ছিল?

বাংলায় ছাপাখানা ও মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কীরূপ অবদান ছিল?

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতের শ্রমিক আন্দোলনগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

তুন্দ্রা জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করো।

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

সিঙ্গাপুরের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে জলবায়ু ও গোলার্ধ শনাক্ত করো।

বাংলায় ছাপাখানা ও মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কীরূপ অবদান ছিল?

তুন্দ্রা জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করো।

ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুর অবস্থান ও বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।

ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ুর অবস্থান ও প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী তা আলোচনা করো।