বীণা দাস বিখ্যাত কেন? বীনা দাস সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।

Rahul

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বীণা দাস বিখ্যাত কেন? বীনা দাস সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “বীণা দাস বিখ্যাত কেন? বীনা দাস সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

বীণা দাস বিখ্যাত কেন? বীনা দাস সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।
Contents Show

বীণা দাস বিখ্যাত কেন? বীনা দাস সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।

বাংলার বিপ্লবী আন্দোলনের ইতিহাসে বীণা দাস এক উল্লেখযোগ্য নাম। 1932 খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসবে বাংলার গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনকে তিনি গুলি করে হত্যার চেষ্টা করেন। বিচারে তাঁর দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ড হয়। পরে তিনি ভারত ছাড়ো আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা নেন এবং কারাবরণ করেন।

বীনা দাস সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।

ভূমিকা –

বিংশ শতকে বাংলা তথা ভারতের বিপ্লবী আন্দোলনের ইতিহাসে যেসব নারীদের কথা জানা যায় তাদের মধ্যে অন্যতম বিপ্লবী নারী হলেন বীনা দাস। বীণা দাস ছিলেন সুভাষচন্দ্র বসুর বাল্যশিক্ষক বেনীমাধব দাসের কনিষ্ঠ কন্যা। তিনি প্রথম জীবনে সাইমন কমিশন বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন এবং ভারত ছাড়ো আন্দোলনেও যোগদান করেন।

বিপ্লবী বীণা দাসের বৈপ্লবিক কাজকর্ম গুলি হল –

বীণা দাসের স্টেনলি জ্যাকশন হত্যার চেষ্টা –

স্বল্প ভাষিনি ও শান্ত প্রকৃতির বীণা দাস 1932 খ্রিস্টাব্দের 6 ই ফেব্রুয়ারি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সমকালীন বাংলার গভর্নর ও একাধারে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য স্ট্যানলি জ্যাকসনকে লক্ষ্য করে পরপর তিনবার গুলি করে হত্যার চেষ্টা করেন। বীণা দাস ধরা পড়েন এবং 9 বছর সাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। বীণা দাস জেল থেকে 1939 খ্রিস্টাব্দে মক্তিপান।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে বীণা দাস –

জেল থেকে মুক্তি লাভ করে বীণা দাস প্রথমে কংগ্রেস দলে যোগ দেন এবং ভারত ছাড়ো আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে যোগদান করেন এবং ভারত ছাড়ো আন্দোলন চলাকালীন বীনা দাস আবার জেলবন্দী হন (1942-1945 খ্রিস্টাব্দ)।

বিপ্লবী বীণা দাসের উপসংহার –

পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলার বিপ্লবী আন্দোলনে বিনা দাসের কর্মকাণ্ড বাংলার অন্যান্য নারীদেরও বিপ্লবী আন্দোলনে যোগদানের সাহস যোগায়। বীণা দাস এমন এক নারী ছিলেন যিনি একাই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন কিন্তু সরকার তাকে বারবার গ্রেফতার করে জেল বন্দি করায় তিনি কিছুটা দমিত হয়ে পড়েন। পরিশেষে তিনি 1986 খ্রিস্টাব্দে 26 শে ডিসেম্বর হরিদ্বারে মৃত্যুবরণ করেন।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

বীণা দাস কে ছিলেন?

বীণা দাস ছিলেন বাংলার একজন বিখ্যাত বিপ্লবী নারী, যিনি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে লড়াই করেছিলেন। তিনি 1932 সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বাংলার গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনকে গুলি করার চেষ্টা করেন।

বীণা দাস কেন বিখ্যাত?

বীণা দাস বিখ্যাত মূলত দুটি কারণে –
1. স্ট্যানলি জ্যাকসন হত্যাচেষ্টা (1932 সাল): ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সাহসী প্রতিবাদ হিসেবে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে গভর্নরকে গুলি করেন।
2. ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অংশগ্রহণ – তিনি 1942 সালের আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যোগ দিয়ে কারাবরণ করেন।

বীণা দাসের পরিবার সম্পর্কে কী জানা যায়?

তিনি ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী ও শিক্ষাবিদ বেনীমাধব দাসের কন্যা এবং বিশিষ্ট বিপ্লবী নেতা সুভাষচন্দ্র বসুর বাল্যশিক্ষকের সন্তান।

বীণা দাসের বিপ্লবী কর্মকাণ্ড কী ছিল?

বীণা দাসের বিপ্লবী কর্মকাণ্ড ছিল –
1. সাইমন কমিশন বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ।
2. 1932 সালে গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনকে গুলি করার চেষ্টা।
3. ভারত ছাড়ো আন্দোলনে (1942 সাল) সক্রিয় ভূমিকা পালন।

বীণা দাসের শাস্তি কী হয়েছিল?

1932 সালে স্ট্যানলি জ্যাকসনকে হত্যাচেষ্টার জন্য তাকে 9 বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে 1939 সালে তিনি মুক্তি পান।

বীণা দাসের মৃত্যু কবে হয়?

বীণা দাস 1986 সালের 26 ডিসেম্বর হরিদ্বারে মৃত্যুবরণ করেন।

বাংলার নারী বিপ্লবীদের মধ্যে বীণা দাসের স্থান কী?

বীণা দাস বাংলার নারী বিপ্লবীদের মধ্যে অন্যতম সাহসী ও আদর্শিক ব্যক্তিত্ব, যিনি অস্ত্র হাতে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন।

বীণা দাসের জীবনী কোথায় পাওয়া যাবে?

বীণা দাসের জীবনী বিভিন্ন বাংলার বিপ্লবী আন্দোলন-সংক্রান্ত বই, যেমন “বাংলার নারী বিপ্লবীরা”“ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী” ইত্যাদিতে পাওয়া যায়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বীণা দাস বিখ্যাত কেন? বীনা দাস সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “বীণা দাস বিখ্যাত কেন? বীনা দাস সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

রশিদ আলি দিবস কেন পালিত হয়েছিল? রশিদ আলি দিবস সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।

রশিদ আলি দিবস কেন পালিত হয়? রশিদ আলি দিবস সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।

বাংলায় নমঃশূদ্র আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

বাংলায় নমঃশূদ্র আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে নারীসমাজ কীভাবে অংশগ্রহণ করেছিল? বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে নারীসমাজের সীমাবদ্ধতা কী?

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে নারী সমাজের অংশগ্রহণ ও সীমাবদ্ধতা লেখো।

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

বীণা দাস বিখ্যাত কেন? বীনা দাস সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।

রশিদ আলি দিবস কেন পালিত হয়? রশিদ আলি দিবস সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।

জৈব ভঙ্গুর ও জৈব অভঙ্গুর বর্জ্য কাকে বলে? জৈব ভঙ্গুর ও জৈব অভঙ্গুর বর্জ্যের মধ্যে পার্থক্য

বাংলায় নমঃশূদ্র আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

বিষাক্ত বর্জ্য ও বিষহীন বর্জ্য কাকে বলে? বিষাক্ত বর্জ্য ও বিষহীন বর্জ্যের মধ্যে পার্থক্য