এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “কার্বন-বিজারণ পদ্ধতিতে ধাতু নিষ্কাশনের নীতিটি লেখো। অথবা, কার্বন-বিজারণ পদ্ধতি বলতে কী বোঝায়? উদাহরণ দাও।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

কার্বন-বিজারণ পদ্ধতিতে ধাতু নিষ্কাশনের নীতিটি লেখো।
অথবা, কার্বন-বিজারণ পদ্ধতি বলতে কী বোঝায়? উদাহরণ দাও।
কার্বন-বিজারণ পদ্ধতি (Carbon reduction process) – এই পদ্ধতিতে ধাতব অক্সাইডকে (আকরিক অক্সাইড না হলে এটিকে অক্সাইডে পরিণত করা হয়) উচ্চ তাপমাত্রায় কার্বন দ্বারা বিজারিত করে ধাতুতে পরিণত করা হয়। MO + C → M + CO। তড়িৎ-রাসায়নিক শ্রেণিতে যেসব ধাতু অপেক্ষাকৃত নীচের দিকে অবস্থিত অর্থাৎ যেসব ধাতু অপেক্ষাকৃত কম সক্রিয় (যেমন – Zn, Fe ইত্যাদি)। সেইসব ধাতুকে কার্বন-বিজারণ পদ্ধতিতে নিষ্কাশন করা হয়। বিজারণের জন্য সাধারণত কোক ব্যবহার করা হয়। এই বিক্রিয়াতে কার্বন জারিত হয়ে কার্বন মনোক্সাইডে পরিণত হয় এবং এটিও বিজারকের কাজ করে।
যেমন – ZnO + C → Zn + CO; ZnO + CO → Zn + CO₂
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
কার্বন-বিজারণ পদ্ধতি বলতে কী বোঝায়?
এটি এমন একটি ধাতু নিষ্কাশন পদ্ধতি যেখানে ধাতব অক্সাইডকে (যেমন, জিঙ্ক অক্সাইড, আয়রন অক্সাইড) উচ্চ তাপমাত্রায় কার্বন (বা কোক) এর সাথে বিক্রিয়া করে ধাতুতে পরিণত করা হয়। এখানে কার্বন একটি বিজারক হিসাবে কাজ করে এবং নিজে জারিত হয়ে কার্বন মনোক্সাইড (CO) বা কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO₂) গ্যাসে পরিণত হয়।
কোন ধাতুগুলি কার্বন-বিজারণ পদ্ধতি দ্বারা নিষ্কাশন করা হয়?
সাধারণত তড়িৎ-রাসায়নিক শ্রেণিতে যেসব ধাতু অপেক্ষাকৃত নীচের দিকে থাকে অর্থাৎ কম সক্রিয় ধাতু (যেমন – দস্তা (Zn), লোহা (Fe), টিন (Sn), সীসা (Pb) ইত্যাদি) এই পদ্ধতিতে নিষ্কাশন করা হয়।
কার্বন-বিজারণে কেন কোক (Coke) ব্যবহার করা হয়?
কোক হল উচ্চ শুদ্ধতাসম্পন্ন কার্বন, যা সহজলভ্য ও সস্তা। এটি উচ্চ তাপমাত্রায় স্থিতিশীল এবং শক্তিশালী বিজারক হিসাবে কাজ করে। এছাড়াও, এটি দহনে প্রচুর তাপ উৎপন্ন করে, যা ধাতু গলানোর জন্য প্রয়োজন।
কার্বন মনোক্সাইড (CO) কীভাবে বিজারকের কাজ করে?
কার্বন প্রথমে বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে CO তৈরি করে। এই CO ও শক্তিশালী বিজারক এবং এটি ধাতব অক্সাইড থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে ধাতু মুক্ত করে। ZnO + CO → Zn + CO2
খুব সক্রিয় ধাতু (যেমন – Al, Na) কার্বন-বিজারণ পদ্ধতিতে নিষ্কাশন করা যায় না কেন?
খুব সক্রিয় ধাতুগুলির অক্সাইডগুলি অত্যন্ত স্থিতিশীল; কার্বন এই অক্সাইডগুলি থেকে ধাতু মুক্ত করার জন্য পর্যাপ্ত শক্তিশালী বিজারক নয়। তাই এদের নিষ্কাশনের জন্য তড়িৎ-বিশ্লেষণ (electrolysis) পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
কার্বন-বিজারণ পদ্ধতির একটি সীমাবদ্ধতা কী?
কার্বন-বিজারণ পদ্ধতিতে নিষ্কাশিত ধাতুতে কার্বন মিশ্রিত থাকার কারণে ধাতু সর্বদা সম্পূর্ণ শুদ্ধ হয় না। অনেক সময় ধাতুর কার্বাইড গঠন হতে পারে, যা ধাতুর গুণগত মান কমিয়ে দেয়।
কার্বন-বিজারণের সময় উৎপন্ন গ্যাসগুলি কী কী?
প্রধানত কার্বন মনোক্সাইড (CO) এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO₂) গ্যাস উৎপন্ন হয়। এগুলি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এবং বায়ুদূষণের কারণ হতে পারে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “কার্বন-বিজারণ পদ্ধতিতে ধাতু নিষ্কাশনের নীতিটি লেখো। অথবা, কার্বন-বিজারণ পদ্ধতি বলতে কী বোঝায়? উদাহরণ দাও।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন