এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “’চৌরিচৌরার ঘটনা’ বলতে কী বোঝো? অসহযোগ আন্দোলনে চৌরিচৌরা ঘটনার গুরুত্ব কী?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “‘চৌরিচৌরার ঘটনা’ বলতে কী বোঝো? অসহযোগ আন্দোলনে চৌরিচৌরা ঘটনার গুরুত্ব কী?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

‘চৌরিচৌরার ঘটনা’ বলতে কী বোঝো?
1922 খ্রিস্টাব্দের 5 ফেব্রুয়ারি অসহযোগ আন্দোলন চলাকালীন উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুর জেলার চৌরিচৌরা গ্রামে উত্তেজিত জনতা থানায় আগুন ধরিয়ে দিলে বাইশজন পুলিশকর্মী জীবন্ত অগ্নিদদ্ধ হয়। এই ঘটনা ‘চৌরিচৌরা ঘটনা’ নামে পরিচিত। অহিংস আন্দোলনে এইভাবে হিংসার প্রবেশ ঘটায় গান্ধিজি মর্মাহত হন এবং 25 ফেব্রুয়ারি আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন।
অসহযোগ আন্দোলনে চৌরিচৌরা ঘটনার গুরুত্ব কী?
চৌরিচৌরা ঘটনা –
অসহযোগ আন্দোলন যখন প্রকৃত গণ-আন্দোলনে পরিণত হতে চলেছে ঠিক সেই সময় 1922 খ্রিস্টাব্দের 5 ফেব্রুয়ারি উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুর জেলার চৌরিচৌরা গ্রামে ভগবান আহির নামে এক স্বেচ্ছাসেবকের উপর পুলিশ অকথ্য অত্যাচার এবং বিনা প্ররোচনায় নিরস্ত্র জনতার উপর গুলিবর্ষণ করে। এর ফলে জনতা উত্তেজিত হয়ে চৌরিচৌরা থানা আক্রমণ করে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং 22 জন পুলিশ কর্মী মারা যায়, এই ঘটনাই ‘চৌরিচৌরা ঘটনা’ নামে পরিচিত।
চৌরিচৌরা ঘটনার গুরুত্ব –
- চৌরিচৌরা ঘটনার পর (12 ফেব্রুয়ারি, 1922 খ্রিস্টাব্দ) গান্ধিজি অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করেন।
- আন্দোলন প্রত্যাহারের সঙ্গে সঙ্গে সরকার গান্ধিজিকে গ্রেপ্তার করে কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে।
- আন্দোলনের হঠাৎ সমাপ্তি কংগ্রেস নেতৃবৃন্দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে,গঠিত হয় ‘স্বরাজ্য দল’ (1 জানুয়ারি, 1923 খ্রিস্টাব্দ)।
- সরকার ও প্রশাসনের ওপর জনগণের ভীতি দূর হয়,জনগণের মনো-বল দৃঢ় হয় ও তারা আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
চৌরিচৌরা ঘটনা কী?
1922 সালের 5ই ফেব্রুয়ারি, উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর জেলার চৌরিচৌরা গ্রামে পুলিশের অত্যাচারে ক্ষুব্ধ হয়ে জনতা থানায় আগুন দেয়, যাতে 22 জন পুলিশ কর্মী মারা যায়। এই ঘটনাকে চৌরিচৌরা ঘটনা বলা হয়।
চৌরিচৌরা ঘটনার পর গান্ধিজি কী সিদ্ধান্ত নেন?
এই হিংসাত্মক ঘটনার পর গান্ধিজি অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন (12ই ফেব্রুয়ারি, 1922 খ্রিস্টাব্দ)।
চৌরিচৌরা ঘটনার গুরুত্ব কী?
চৌরিচৌরা ঘটনার গুরুত্ব –
1. গান্ধিজির অহিংস আন্দোলনে হিংসার উপস্থিতি দেখা দেয়।
2. আন্দোলন বন্ধের ফলে কংগ্রেসে বিভক্তি দেখা দেয় ও স্বরাজ দল গঠিত হয় (1923 খ্রিস্টাব্দ)।
3. ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়।
অসহযোগ আন্দোলন কেন প্রত্যাহার করা হয়?
চৌরিচৌরার হিংসাত্মক ঘটনার পর গান্ধিজি মনে করেন অহিংস আন্দোলনের নীতি লঙ্ঘিত হয়েছে, তাই তিনি আন্দোলন স্থগিত করেন।
চৌরিচৌরা ঘটনার পর গান্ধিজির কী শাস্তি হয়?
গান্ধিজিকে গ্রেপ্তার করে 6 বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়, তবে তিনি মাত্র 2 বছর জেলে থাকার পর মুক্তি পান।
চৌরিচৌরা ঘটনার ফলে কোন নতুন দলের জন্ম হয়?
স্বরাজ দল (চিত্তরঞ্জন দাশ ও মতিলাল নেহরুর নেতৃত্বে, 1923 সালে গঠিত)।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “’চৌরিচৌরার ঘটনা’ বলতে কী বোঝো? অসহযোগ আন্দোলনে চৌরিচৌরা ঘটনার গুরুত্ব কী?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “’চৌরিচৌরার ঘটনা’ বলতে কী বোঝো? অসহযোগ আন্দোলনে চৌরিচৌরা ঘটনার গুরুত্ব কী?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।





মন্তব্য করুন