এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “চলন ও গমন বলতে কী বোঝো? “চলন হলে গমন নাও হতে পারে, কিন্তু গমন হলে চলন হবেই” – ব্যাখ্যা করো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞানের প্রথম অধ্যায় “জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়” -এর “উদ্ভিদের সংবেদনশীলতা এবং সাড়াপ্রদান” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

চলন ও গমন বলতে কী বোঝো?
চলন – যে প্রক্রিয়ায় জীব নির্দিষ্ট স্থানে স্থির থেকে অর্থাৎ স্থানান্তরের না গিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বা উদ্দীপকের প্রভাবে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালন করে তাকে চলন বলে।
গমন – যে প্রক্রিয়ায় স্বেচ্ছায় বা উদ্দীপকের প্রভাবে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালনের দ্বারা সামগ্রিকভাবে স্থান পরিবর্তন করে তাকে গমন বলে।
“চলন হলে গমন নাও হতে পারে, কিন্তু গমন হলে চলন হবেই” – ব্যাখ্যা করো।
অথবা, “চলন, গমনের ওপর নির্ভরশীল নয়, কিন্তু গমন, চলনের ওপর নির্ভরশীল” – বক্তব্যের সপক্ষে যুক্তি দাও।
একস্থানে আবদ্ধ থেকে জীবের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালনকে চলন বলে। আবার স্বতঃস্ফূর্তভাবে বা উদ্দীপকের প্রভাবে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালনের মাধ্যমে দেহের সামগ্রিক স্থান পরিবর্তনকে গমন বলে। সুতরাং গমনের জন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সঞ্চালন ঘটে অর্থাৎ, চলনের প্রয়োজন হয় কিন্তু চলনে যেহেতু সামগ্রিক দেহের স্থান পরিবর্তনের প্রয়োজন হয় না, সেজন্য এটি গমনের ওপর নির্ভরশীল নয়।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
চলন ও গমনের মধ্যে প্রধান পার্থক্য কী?
চলনে জীব একই স্থানে থেকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নড়াচড়া করে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে স্থান পরিবর্তন করে না।
গমনে জীবের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নড়াচড়ার মাধ্যমে সম্পূর্ণ দেহের স্থান পরিবর্তন ঘটে।
“গমন হলে চলন হবেই” – কেন?
গমন করার জন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নড়াচড়া (চলন) প্রয়োজন। যেমন – পাখি উড়তে পাখা নাড়ায় (চলন) এবং এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যায় (গমন)। তাই গমন ঘটলে চলন অবশ্যই ঘটে।
চলন ও গমন উদ্দীপকের ওপর কীভাবে নির্ভর করে?
উভয়ই স্বতঃস্ফূর্ত বা উদ্দীপকের প্রভাবে হতে পারে, যেমন আলোর দিকে শিকড় চলন (চলন) বা ব্যাকটেরিয়ার কেমোট্যাক্সিস (গমন)।
এককোষী প্রাণীর ক্ষেত্রে চলন ও গমন কীভাবে আলাদা?
অ্যামিবার সিউডোপোডিয়া তৈরি করে স্থান পরিবর্তন করলে তা গমন, কিন্তু যদি শুধু সাইটোপ্লাজম একদিকে সঞ্চালন হয় স্থান পরিবর্তন ছাড়া, তাহলে তা চলন হিসেবে গণ্য হতে পারে।
চলন ও গমন জীবের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
চলন – খাদ্য গ্রহণ, শ্বাস-প্রশ্বাস, প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা ইত্যাদির জন্য প্রয়োজন।
গমন – খাদ্য অন্বেষণ, বাসস্থান পরিবর্তন, শিকার বা শিকারী থেকে রক্ষা পাওয়া, প্রজননে সাহায্য করে।
চলন ও গমন কিভাবে উদ্দীপকের সাথে সম্পর্কিত?
উভয়ই স্বতঃস্ফূর্ত বা উদ্দীপকের প্রভাবে হতে পারে। যেমন – আলোর প্রতি প্রতিক্রিয়ায় চলন (ফটোট্রপিজম), বা তাপ/আলো থেকে দূরে সরে যাওয়া (গমন)।
মানুষ ও প্রাণীর ক্ষেত্রে চলন ও গমন নিয়ন্ত্রণ করে কী?
মানুষ ও উন্নত প্রাণীর ক্ষেত্রে এটি স্নায়ুতন্ত্র ও পেশী তন্ত্রের সমন্বয় দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। উদ্ভিদে হরমোন ও পরিবেশগত উদ্দীপকের প্রভাবে চলন ঘটে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “চলন ও গমন বলতে কী বোঝো? “চলন হলে গমন নাও হতে পারে, কিন্তু গমন হলে চলন হবেই” – ব্যাখ্যা করো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞানের প্রথম অধ্যায় “জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়” -এর “উদ্ভিদের সংবেদনশীলতা এবং সাড়াপ্রদান” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।





মন্তব্য করুন