আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাসের অষ্টম অধ্যায়, ‘প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতিচর্চার নানাদিক (শিক্ষা, সাহিত্য, বিজ্ঞান ও শিল্প)’ অধ্যায়ের পাঠ্যাংশের অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্যও সহায়ক। কারণ ষষ্ঠ শ্রেণী এবং চাকরির পরীক্ষায় এই ধরনের প্রশ্ন প্রায়ই আসতে দেখা যায়।

বেমানান শব্দটি খুঁজে বের করো
ব্রাহ্মী, সংস্কৃত, খরোষ্ঠী, দেবনাগরী।
উত্তর – সংস্কৃত
নালন্দা, তক্ষশিলা, বলভি, পাটলিপুত্র।
উত্তর – পাটলিপুত্র
রত্নাবলী, মৃচ্ছকটিকম, অর্থশাস্ত্র, অভিজ্ঞান শকুন্তলম।
উত্তর – অর্থশাস্ত্র
নীচের বাক্যগুলির কোনটি ঠিক কোনটি ভুল লেখো
নালন্দা মহাবিহারে কেবল ব্রাহ্মণ ছাত্ররাই পড়তে পারত।
উত্তর – ভুল
কম্বনের রামায়ণে রামকেই বড়ো করে দেখানো হয়েছে।
উত্তর – ভুল
বাগভট ছিলেন একজন চিকিৎসক।
উত্তর – ঠিক
কুষাণ আমলে গন্ধার শিল্পের বিকাশ ঘটেছিল।
উত্তর – ঠিক
‘ক’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো
‘ক’ স্তম্ভ | ‘খ’ স্তম্ভ |
১. মহাবলিপুরম | ক. কুষাণ যুগ |
২. গন্ধার শিল্পরীতি | খ. নাগার্জুন |
৩. গণিতবিদ | গ. তামিল মহাকাব্য |
৪. মণিমেখলাই | ঘ. গুহাচিত্র |
৫. অজন্তা | ঙ. রথের মতো মন্দির |
উত্তর –
‘ক’ স্তম্ভ | ‘খ’ স্তম্ভ |
১. মহাবলিপুরম | ঙ. রথের মতো মন্দির |
২. গন্ধার শিল্পরীতি | ক. কুষাণ যুগ |
৩. গণিতবিদ | খ. নাগার্জুন |
৪. মণিমেখলাই | গ. তামিল মহাকাব্য |
৫. অজন্তা | ঘ. গুহাচিত্র |
নিজের ভাষায় ভেবে লেখো (তিন/চার লাইন)
প্রাচীনকালের বৌদ্ধ শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে আজকের শিক্ষাব্যবস্থার মিল-অমিলগুলি নিজের ভাষায় লেখো।
প্রাচীন বৌদ্ধ শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে আজকের শিক্ষা ব্যবস্থার মিল ও অমিলগুলি নিম্নে আলোচিত হল –
মিল
- প্রাচীন শিক্ষাব্যবস্থায় জ্যোতির্বিদ্যা, জ্যোতিষ, গণিত, রসায়ন, ছন্দ, কাব্য, ব্যাকরণ প্রভৃতি বিষয়ে পড়ানো হত। বর্তমান সময়ও বাংলা, ইতিহাস, ভূগোল, গণিত, বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়।
- বৌদ্ধ শিক্ষাব্যবস্থায় ছাত্রকে যাচাই করে বৌদ্ধবিহারে ভরতি নেওয়া হত। গরিব ছাত্রদের বৃত্তি দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় মেধাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। গরিব ছাত্রদের শিক্ষার জন্য সমাজের সর্বস্তর থেকে সাহায্য করা হয়।
অমিল
- বৌদ্ধ শিক্ষাব্যবস্থায় বৌদ্ধ শ্রমণ ও ভিক্ষুরা বৌদ্ধ বিহার বা সংঘে পড়াশোনা শিখত। আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সকল ধর্মের, বর্ণের ছাত্ররা লেখাপড়া শেখে।
- বৌদ্ধ শিক্ষাব্যবস্থায় বিহার বা সংঘ এবং আশ্রমকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলা হত। কিন্তু আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আশ্রমিক শিক্ষাকেন্দ্রও প্রচলিত আছে।
চরক সংহিতায় আদর্শ হাসপাতাল কেমন হবে, তা বলা আছে। তোমার মতে, একটি ভালো হাসপাতাল কেমন হওয়া উচিত?
একটি ভালো হাসপাতাল হতে গেলে তার কয়েকটি বৈশিষ্ট্য থাকবে। যেমন –
- শল্যচিকিৎসার সকল আধুনিক যন্ত্রপাতি-মজুত থাকবে।
- আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার দক্ষতা চিকিৎসকদের অবশ্যই থাকতে হবে।
- চিকিৎসকদের মানুষের সেবায় নিজেদেরকে উৎসর্গ করতে হবে।
- একটি হাসপাতালের মধ্যে মানুষের সকল রোগের সকল চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
- প্রয়োজনে গরিব মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা করার ব্যবস্থা থাকবে।
- রোগীকে কোনোভাবেই চিকিৎসা না করে ফেরানো যাবে না।
- প্রয়োজনীয় ওষুধ হাসপাতালে পর্যাপ্তভাবে থাকবে।
- হাসপাতালের পরিবেশ ভালো করতে হবে যাতে রোগী নিরাপদ বোধ করে।
একটি বিহার ও স্তূপের মধ্যে পার্থক্যগুলি লেখো।
বিহার ও স্তূপের মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
- বৌদ্ধ ভিক্ষুদের থাকা ও পড়াশোনার স্থান ছিল বৌদ্ধবিহার। মৌর্য যুগের আগে অর্ধগোলাকার মাটির ঢিবিগুলিকে বলা হত স্তূপ।
- বিহারগুলি ছিল কতকগুলি গুহার সমষ্টি। কোনো কোনো বৌদ্ধবিহারকে আবার মহাবিহারও বলা হত।
- শুরুর দিকে স্তূপগুলি মাটির তৈরি হত। পরে অর্থাৎ অশোকের সময় স্তূপ তৈরি হত ইট দিয়ে। স্তূপের চারদিকে চারটি বড়ো দরজা থাকত। এগুলিকে তোরণ বলা হত তোরণগুলিতে ভাস্কর্য খোদাই করা থাকত।
- বিহারগুলিতে শিক্ষার্থী এবং আচার্যের থাকার ব্যবস্থা ছিল। উপাসনাস্থল, পড়াশোনার কক্ষ, স্নানাগার, খাবার ঘর এবং অধ্যক্ষ ঘরসহ আরও অন্যান্য ব্যবস্থাও বিহারের মধ্যে ছিল। ইটের তৈরি স্তূপগুলিতে চারপাশে গোলাকার বেদি থাকত। ঘুরে ঘুরে উপাসনা করার জন্য এই বেদি থাকত।
- কতকগুলি বৌদ্ধবিহারকে মহাবিহার বলা হত। যেমন – নালন্দা, বিক্রমশিলা, তক্ষশিলা ইত্যাদি। স্তূপগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ভারহুত, সাঁচি, অমরাবতী এবং নালন্দা মহাবিহারে সারিপুত্ত প্রভৃতি।
হাতেকলমে করো
মাটি/থার্মোকল দিয়ে চৈত্য/বিহার/স্তূপের মডেল তৈরি করো।

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাসের অষ্টম অধ্যায়, “প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতিচর্চার নানাদিক (শিক্ষা, সাহিত্য, বিজ্ঞান ও শিল্প)” অধ্যায়ের পাঠ্যাংশের অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সহায়ক হবে, কারণ এগুলো প্রায়ই পরীক্ষায় আসে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনাদের উপকারে এসেছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকে, তবে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমি সর্বদা প্রস্তুত। ধন্যবাদ!