আজকের এই আর্টিকেলে আমরা অষ্টম শ্রেণির বাংলা বইয়ের ষোড়শ অধ্যায় “গাঁয়ের বধূ” – এর বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করবো। এই বিষয়সংক্ষেপ অষ্টম শ্রেণির বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এখান থেকে প্রশ্নোত্তর পরীক্ষায় প্রায়ই আসে।
গাঁয়ের বধূ অধ্যায়ের লেখক পরিচিতি
খ্যাতনামা সুরকার ও গীতিকার সলিল চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ১৯ ডিসেম্বর। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি গণনাট্য সংঘের সঙ্গে যুক্ত হন। বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলন ও ঘটনার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি বহু গান রচনা করেন। আজাদ হিন্দ ফৌজের বিচার উপলক্ষ্যে রচিত ‘বিচারপতি তোমার বিচার’, নৌ-বিদ্রোহের সমর্থনে ‘ঢেউ উঠছে, কারা ছুটছে’ তাঁর বিখ্যাত গান। সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ‘পালকির গান’ ও সুকান্ত ভট্টাচার্যের একাধিক গানে তিনি সুরারোপ করেন। তাঁর মৃত্যু হয় ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দের ৫ সেপ্টেম্বর। সংগীতে কৃতিত্বের জন্য তিনি ‘ফিলম্ ফেয়ার’ পুরস্কার ও ‘সংগীত নাটক আকাদেমি’ পুরস্কার লাভ করেছিলেন।
গাঁয়ের বধূ অধ্যায়ের পাঠপ্রসঙ্গ
গীতিকার সলিল চৌধুরী বাংলার সেই সময়কার গীতিকার তথা সুরকার, যখন বাংলা আধুনিকতা ও চিরাচরিতের প্রচ্ছন্ন দ্বন্দ্বের সম্মুখীন। ঠিক সেই সন্ধিক্ষণে সলিল চৌধুরী এমন এক কাহিনিকে গল্পচ্ছলে তুলে ধরেছেন যা চিরাচরিত বাংলার অলিখিত দলিল। ‘বাংলার বধূ’ সেই শ্রেণিশোষণের এক জাগ্রত প্রতিনিধিমূলক কবিতা।
গাঁয়ের বধূ অধ্যায়ের বিষয়সংক্ষেপ
গীতিকার সলিল চৌধুরী গল্পচ্ছলে পাঠকের দরবারে রূপকথার মোড়কে একটি জীবনের কুসুমকোমল অধ্যায়ের করুণ পরিণতির চলচ্ছবি এঁকেছেন। বাংলার সাধারণ পল্লি কৃষক জীবনের সুখী দাম্পত্যের চিরায়ত ছবি আমরা দেখতে পাই। সারাদিনের ব্যস্ততার পর যখন কৃষক বাড়ি ফিরে আসেন একরাশ ক্লান্তির ছাপ অঙ্গে মেখে তখন বাংলার কৃষক বধূটি আম-কাঁঠালের ভূরিভোজ ও পত্নীসুলভ সোহাগী আদর সহযোগে তার সমস্ত ক্লান্তি দূর করতেন নিমেষে। প্রকৃতি যেন নীল শালুকের দোলনায় দুলতে দুলতে চকিতে ঘুমিয়ে পড়ে। ভ্রমণের গুঞ্জন এবং পাকা ধানের আলতো ছোঁয়া যেন কখন তাকে আবার জাগিয়ে তোলে। বারো মাসে তেরো পার্বণ, নবান্নের আনন্দোৎসব যেন বঙ্গলক্ষ্মী, গৃহলক্ষ্মীরূপে পূজিতা। কিন্তু হায়! বিধি বাম! সেই লক্ষ্মীর সংসারে অনাহারের বেশে ডাকিনী-যোগিনী কখন যেন এসে থাবা বসায়। দুর্ভিক্ষে, অনাহারে, নিরন্নের অন্নহীন চিৎকারে জীবন যেন ছন্দহীন হয়ে পড়ে। তাই কবি বলেছেন যে, আজও যদি কোনো গাঁয়ে এরকম ভাঙা কুটিরের সারি দেখতে পাওয়া যায়, তবে সেটি যেন সেই কৃষক বধূর আশা-স্বপনের সমাধি এ কথা ভাবতে কেউ কখনও ভুল না করে।
গাঁয়ের বধূ অধ্যায়ের নামকরণ
নামকরণ ভিন্নমাত্রিক হতে পারে। চরিত্রকেন্দ্রিক, কাহিনি ভিত্তিক, ব্যঞ্জনাধর্মী হল নামকরণের এক একটি দ্যোতক। আলোচ্য ‘গাঁয়ের বধূ’ কবিতাটি বাংলার ক্ষয়িষ্ণু সভ্যতার এক জাগ্রত দলিলের সূত্রে একটি ইতিহাসনির্ভর ব্যঞ্জনাধর্মী নামকরণ হিসেবে সার্থক সন্দেহ নেই। এই নামকরণ প্রয়োগের মধ্য দিয়ে বিষয়বস্তুর সম্পর্কে পাঠক খানিক ধারণা লাভ করতে পারে।
গাঁয়ের বধূ অধ্যায়ের শব্দার্থ ও টীকা
কুসুম – ফুল। শ্যামল-ঘেরা – সবুজ ঘেরা। কিষাণ – কৃষক। শ্রান্ত – ক্লান্ত। ভোমরা – মৌমাছি। পাষাণ – পাথর।
আজকের এই আর্টিকেলে অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের ষোড়শ অধ্যায় ‘গাঁয়ের বধূ’র বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করেছি। এই বিষয়সংক্ষেপটি অষ্টম শ্রেণির বাংলা পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি পরীক্ষায় প্রায়ই আসে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনার জন্য সহায়ক হয়েছে। যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আরও তথ্য প্রয়োজন হয়, নির্দ্বিধায় টেলিগ্রামে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনার বন্ধুদের সাথেও এই পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না, যাতে তারাও উপকৃত হতে পারে। ধন্যবাদ!