আবহমান কবিতায় নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী গ্রাম বাংলার প্রতি মানুষের ঐতিহ্যবাহী ভালোবাসা ও আকর্ষণকে তুলে ধরেছেন। কবি মনে করেন, গ্রাম বাংলা মানুষের শিকড়ের টানে সবসময়ই আকর্ষণীয়। শহরের যান্ত্রিক জীবনের ক্লান্তি থেকে মানুষ একসময় গ্রাম বাংলায় ফিরে আসে। কবিতাটিতে কবি গ্রাম বাংলার প্রকৃতির সৌন্দর্য, মানুষের সহজ সরল জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতির কথা বর্ণনা করেছেন।
আবহমান কবিতাটি কোন্ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?
আবহমান কবিতাটি কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর লেখা অন্ধকার বারান্দা কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। এটি ওই কাব্যগ্রন্থের তিরিশ সংখ্যক কবিতা।
আবহমান কবিতায় কবি কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে বলেছেন?
আবহমান’ কবিতায় কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী গ্রামবাংলার গরিবের উঠোনে লাউমাচার পাশে গিয়ে দাঁড়াতে বলেছেন।
কবি লাউমাচার পাশে কেন দাঁড়াতে বলেছেন?
কবি লাউমাচার পাশে গিয়ে দাঁড়াতে বলেছেন কারণ পল্লিবাংলার প্রকৃতিলালিত সহজসরল জীবনকে সেখানে খুঁজে পাওয়া যায়।
কোন্ ফুল দুলছে?
পল্লিবাংলায় উঠোনের লাউমাচায় ছোট্ট লাউফুল দুলছে।
কোথায় ছোট্ট ফুল দুলছে?
আবহমান কবিতায় গ্রামবাংলায় গরিবের উঠোনের লাউমাচায় ছোট্ট লাউফুল দোলার কথা বলা হয়েছে।
লাউফুল কখন দোলে?
সন্ধ্যার মৃদুমন্দ বাতাসে লাউফুল দোলে।
আবহমান কবিতায় অনেক বছর আগে কার আসার কথা বলা হয়েছে?
আবহমান কবিতায় অনেক বছর আগে বাংলায় আশ্রয়ের খোঁজে মানুষের আসার কথা বলা হয়েছে, যারা এদেশেরই বাসিন্দা হয়ে গেছে।
আবহমান কবিতায় বাংলার ভূখণ্ডে এসে মানুষ কী করেছিল বলা হয়েছে?
বাংলার ভূখণ্ডে এসে মানুষ এই দেশকে নিবিড়ভাবে ভালোবেসে এখানেই ঘর বেঁধে বাস করতে শুরু করেছে।
আবহমান কবিতায় মানুষের হারিয়ে গিয়েও আবার কেন ফিরে আসার কথা বলা হয়েছে?
গ্রামবাংলার মাটিকে, তার জলহাওয়াকে ভালোবাসে বলেই মানুষ হারিয়ে গিয়েও আবার বাংলার বুকে ফিরে আসে।
এই মাটিকে এই হাওয়াকে আবার ভালোবাসে। — আবার শব্দটি ব্যবহারের যুক্তি কী?
প্রকৃতির বুকে মানুষ একদিন বন কেটে বসতি গড়েছিল। নাগরিক ক্লান্তিতে মানুষ পরে সেই প্রকৃতির কাছেই ফিরে যেতে চেয়েছে। ‘আবার’ শব্দটিতে তারই ব্যঞ্জনা রয়েছে।
কবির মতে কোন্ গাছ বুড়িয়ে গেলেও শেষপর্যন্ত মুড়োয় না?
কবির মতে নটেগাছ বুড়িয়ে গেলেও শেষপর্যন্ত মুড়োয় না।
নটেগাছটা বুড়িয়ে ওঠে, কিন্তু মুড়য় না। — মুড়য় না বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
মুড়য় না বলতে বোঝানো হয়েছে যে, কখনোই শেষ হয়ে যায় না।
আবহমান কবিতায় মানুষের কোথায় হারিয়ে গিয়েও আবার কোথায় ফিরে আসার কথা বলা হয়েছে?
আবহমান কবিতায় বলা হয়েছে গ্রামবাংলার নতুন প্রজন্মের মানুষরা নাগরিক যন্ত্রসভ্যতায় হারিয়ে গিয়েও আবার বাঁচার জন্য গ্রামবাংলার বুকেই ফিরে আসে।
আবহমান করিতায় কাকে একগুঁয়ে বলা হয়েছে?
যে মানুষ তার নাগরিক জীবনকে পিছনে ফেলে গ্রাম এবং মাটির কাছাকাছি বার বার ফিরে আসে, তাকেই একগুঁয়ে বলা হয়েছে।
সারাটা দিন আপন মনে — কী করার কথা বলা হয়েছে?
সারাটা দিন আপনমনে ঘাসের গন্ধ মাখার কথা বলা হয়েছে।
আবহমান কবিতায় কার যন্ত্রণা নেভে না?
আবহমান কবিতায় গ্রাম এবং প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন মানুষের যন্ত্রণা নেভে না।
নেভে না তার যন্ত্রণা — কীসের যন্ত্রণা?
কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ‘আবহমান’ কবিতা থেকে গৃহীত প্রশ্নোদৃত অংশে প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্নতার যন্ত্রণার কথা বলা হয়েছে।
দুঃখ হয় না বাসি — দুঃখ বাসি হয় না কেন?
প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের বিচ্ছিন্নতার যন্ত্রণা কখনও মানুষ ভুলতে পারে না বলেই দুঃখ বাসি হয় না ।
আবহমান কবিতায় কী হারায় না?
আবহমান কবিতায় বাগান থেকে কুন্দফুলের হাসি হারায় না।
যা গিয়ে ওই উঠানে তোর দাঁড়া,/লাউমাচাটার পাশে — কবিতায় এই অংশটি কতবার ব্যবহার করা হয়েছে?
আবহমান কবিতায় যা গিয়ে ওই উঠানে তোর দাঁড়া,/লাউমাচাটার পাশে — এই পঙ্ক্তিটি চারবার ব্যবহার করা হয়েছে।
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর আবহমান কবিতাটি গ্রাম বাংলার প্রতি এক অকৃত্রিম ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধের প্রকাশ। কবি এই কবিতায় গ্রাম বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, মানুষের সহজ সরল জীবনযাত্রা, আচার-আচরণ, সংস্কৃতি, ইতিহাস ইত্যাদির কথা তুলে ধরেছেন।