নবম শ্রেণি – বাংলা – ব্যোমযাত্রীর ডায়রি – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

Rahul

ব্যোমযাত্রীর ডায়রি একটি বিজ্ঞান কল্পকাহিনী। এটি রচনা করেছেন প্রখ্যাত বিজ্ঞান কল্পকাহিনীকার সত্যজিৎ রায়। এই গল্পে প্রোফেসর শঙ্কু এবং তার সঙ্গীরা মঙ্গল এবং টাফা নামক দুটি গ্রহ ভ্রমণ করেন। গল্পটিতে বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর পাশাপাশি প্রোফেসর শঙ্কুর বৈজ্ঞানিক দক্ষতা, সাহস এবং সরলতা প্রভৃতি গুণাবলীর পরিচয় পাওয়া যায়।

ব্যোমযাত্রীর ডায়রি –ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর
Contents Show

এবার গল্পের বদলে ডায়রিটা দেখে একটু আশ্চর্য হলাম। — মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।

মন্তব্যটির ব্যাখ্যা – তারক চাটুজ্যে নামে এক ব্যক্তি লেখককে এর আগে কিছু গল্প দিয়েছিলেন। গল্পগুলি খুব ভালো না হলেও বাবার সঙ্গে তাঁর চেনাশোনা এবং ভদ্রলোকের অভাবের কথা ভেবে লেখাগুলির জন্য পাঁচ-দশ টাকা করে দিয়েছিলেন। কিন্তু এবারে একদিন যখন দুপুরের দিকে অফিসে বসে পুজো সংখ্যার জন্য লেখার প্রুফ দেখছিলেন সেই সময়ে তারকবাবু একটা লাল খাতা, যেটি আসলে ডায়রি, লেখকের সামনে ফেলে দিয়ে সেটিকে সোনার খনি বলে উল্লেখ করেন এবং পড়ে দেখতে বলেন। গল্পের বদলে ডায়রি পেয়ে লেখক কিছুটা বিস্মিত হন।

খাতাটা হাতে নিয়ে খুলে কেমন যেন খটকা লাগল। — এই খটকার কারণ কী?

খটকা লাগার কারণ – তারক চাটুজ্যের দেওয়া ডায়রিটার কথা আলমারিতে রেখে লেখক ভুলে গিয়েছিলেন। আকস্মিকভাবে সেটি যখন আবার তিনি হাতে নিলেন তিনি দেখলেন যে সবুজ রঙের কালি লাল রঙে রূপান্তরিত হয়েছে। পরে আবার দেখলেন কালির রং হয়ে গেছে নীল। কিছু পরেই চোখের সামনে নীল হয়ে গেল হলদে। ভুলো কুকুরের কামড়েও খাতার কাগজ অক্ষত থাকল। টানলে তা রবারের মতো বড়ো হয়ে যাচ্ছিল। দেশলাই জ্বেলে কাগজটায় ধরালেও সেটি পুড়ল না। এভাবেই খাতাটি লেখকের বিস্ময় তৈরি করে।

তাই ভাবছি হয়তো ওকে নেওয়াই ভালো। — কার সম্পর্কে কেন এ কথা বলা হয়েছে লেখো।

অথবা, প্রহ্লাদকে কেন প্রোফেসর শঙ্কু তাঁর রকেট যাত্রার সঙ্গী করেছিলেন?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তিকে সঙ্গী করার কারণ প্রহ্লাদ সম্পর্কে প্রোফেসর শঙ্কু এ কথা বলেছেন। শঙ্কুর মতে প্রহ্লাদ বোকা হলেও সাহসী। একবার কড়িকাঠ থেকে একটা টিকটিকি বাইকর্নিক অ্যাসিডের শিশিটার ওপরে পড়ে সেটাকে উলটে দেয়। অ্যাসিড গড়িয়ে প্যারাডক্সাইট পাউডারের দিকে গিয়ে যখন একটা প্রবল বিপদের সম্ভাবনা তখন প্ৰহ্লাদ গামছা দিয়ে অ্যাসিডটা মুছে নেয়। মঙ্গল অভিযানে এরকম সাহসী লোকের প্রয়োজন বলে শঙ্কু মনে করেছিলেন।

এই বড়িই হলো আমার নতুন অস্ত্র। — কোন্ প্রসঙ্গে বক্তা এ কথা বলেছেন লেখো।

প্রসঙ্গ – প্রতিবেশী অবিনাশবাবু প্রোফেসর শঙ্কুর গবেষণা বিষয়ে শুধু যে ঠাট্টা করেন তাই নয়, দ্বিতীয় রকেট ভেঙে তাঁর মুলো খেত নষ্ট হওয়ার জন্য পাঁচশো টাকা ক্ষতিপূরণও দাবি করেন। তাঁকে শাস্তি দেওয়ার জন্যই এক নতুন ধরনের বড়ি-অস্ত্র শঙ্কু আবিষ্কার করেন। মহাভারতের জৃম্ভণাস্ত্র থেকে ধারণা নিয়ে তৈরি এই বড়ি খেলে শুধু হাই-ই উঠবে না, ঘুমের মধ্যে অসম্ভব ভয়ংকর সব স্বপ্ন দেখতে পাবে। অবিনাশবাবুর চায়ের মধ্যে এই বড়ি ফেলে দিয়েই শঙ্কু মন্তব্যটি করেন।

আরেক হলো এই গোলঞ্চ গাছ। — কী কারণে প্রসঙ্গটি উত্থাপন করা হয়েছে আলোচনা করো।

প্রসঙ্গ উত্থাপনের কারণ – আশ্বিন-কার্তিক মাসে প্রোফেসর শঙ্কু রাত্রে খাবার পরে তিন ঘণ্টা বাগানের আরামকেদারায় শুয়ে থাকেন ৷ কারণ এই সময় প্রচুর উল্কা আকাশে দেখা যায়। এরকমই একদিন একটা অন্যরকম উল্কা তাঁর চোখে আসে। কিন্তু দেখার জন্য উঠতে গিয়েই ঘুম ভেঙে যায়। অথচ সেটা যে স্বপ্ন ছিল না তার বড়ো দৃষ্টান্ত সামনের গোলঞ্চ গাছ। সেদিন থেকেই গাছটিতে গোলঞ্চর বদলে এক নতুন রকমের ফুল হচ্ছিল, যার পাপড়ি পাঁচ আঙুলের মতো ঝোলা। দিনের বেলা ফুলটি কুচকুচে কালো কিন্তু রাত হলেই ফসফরাসের মতো জ্বলতে থাকে। আর হাওয়ায় তার পাপড়ি দোলার সময় মনে হয় সে যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে। উল্কার প্রভাব প্রসঙ্গেই বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে।

মঙ্গলে যাত্রার সময়ে শঙ্কুরা যে খাবার নিয়ে গিয়েছিলেন তার উল্লেখ করো।

সঙ্গে নেওয়া খাবার – পাঁচ বছরের মতো রসদ সঙ্গে নিয়ে শঙ্কু বিধুশেখর, নিউটন ও প্রহ্লাদ -এই তিন সহযাত্রীর সঙ্গে মঙ্গল যাত্রা করেন। নিউটনের জন্য যে ফিসপিল নেওয়া হয়েছিল তার একটা খেলেই নিউটনের সাত দিনের খাওয়া হয়ে যায়। শঙ্কু তাঁর নিজের এবং প্রহ্লাদের জন্য কেবল নিয়েছিলেন বটফলের রস থেকে তৈরি বড়ি-বটিকা-ইন্ডিকা। যার একটা বড়ি খেলেই পুরো চব্বিশ ঘণ্টার জন্য খিদে-তেষ্টা মিটে যায়। এরকম এক মন বড়ি তাঁরা সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন।

তারপরে দেখলাম প্রহ্লাদকে — প্রহ্লাদকে কী অবস্থায় দেখা গিয়েছিল আলোচনা করো।

প্রহ্লাদের অবস্থার বর্ণনা মঙ্গলগ্রহে নামার পরে প্রথম দিনেই ঘটনাটা ঘটেছিল। এক বিকট চিৎকারকে অনুসরণ করে শঙ্কু দেখেন প্রহ্লাদের চোখ যেন ঠিকরে বেরিয়ে আসছে, ডান হাতের মুঠোয় নিউটনকে ধরে ঊর্ধ্বশ্বাসে এক এক লাফে বিশ-পঁচিশ হাত করে রকেটের দিকে চলেছে। আর তার পিছু নিয়েছে যে প্রাণীটি সে মানুষ, জন্তু এবং মাছের মিশ্রণ। লম্বায় তিন হাতের বেশি নয়। জন্তুটা ভালো ছুটতে পারে না বলে সে যাত্রায় প্রহ্লাদের নাগাল পায়নি।

কিন্তু কোনোটারই উত্তর দেবার শক্তি আমার নেই। — কোন্ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ কথা বলা হয়েছে লেখো।

উল্লিখিত ঘটনা মঙ্গল গ্রহে অদ্ভুত প্রাণীদের হাত থেকে বিধুশেখরকে রক্ষা করে রকেটের ভিতরে তোলার পরেই প্রোফেসর শঙ্কু জ্ঞান হারান। কিন্তু যখন জ্ঞান ফিরে আসে দেখেন রকেট উড়ে চলেছে। কিন্তু রকেট কীভাবে উড়ল তা রহস্যময়ই থেকে যায় শঙ্কুর কাছে। বিধুশেখর দু-টুকরো হয়ে পড়ে আছে, আর প্রহ্লাদের তো রকেট চালানোর জ্ঞানই নেই। কীভাবে উড়ল এবং কোথায় যাচ্ছে রকেট তার কোনোকিছুই শঙ্কুর জানা ছিল না। যন্ত্রপাতি নড়াচড়া না করলেও রকেটের এই চলা শঙ্কুর কাছে ছিল আশ্চর্যজনক ব্যাপার।

আজ বিধুশেখর যে সব কথাগুলো বলছিল সেগুলো বিশ্বাস করা কঠিন। — বিধুশেখরের কথাগুলো কী ছিল?

বিধুশেখরের বলা কথা বিধুশেখর বলেছিল যে, রকেট থেকে টাফা নামে যে গ্রহটি দেখা যাচ্ছিল সেখানে সৌরজগতের প্রথম সভ্য লোকেরা বাস করে। পৃথিবীর সভ্যতার থেকে তাদের সভ্যতা বেশ কয়েক কোটি বছরের পুরোনো। এখানকার প্রতিটি লোকই বৈজ্ঞানিক ও বুদ্ধিমান হওয়ায় তাদের খুব অসুবিধা হচ্ছে। তাই কয়েক বছর ধরে টাফাতে অন্যান্য গ্রহ থেকে কমবুদ্ধির লোকদের নিয়ে আসা হচ্ছে।

রকেট থেকে নেমে দেখি বহুলোক আমায় অভ্যর্থনা করতে এসেছে। — যারা অভ্যর্থনা করতে এসেছিল তাদের পরিচয় দাও।

অভ্যর্থণাকারী – টাফা গ্রহে পৌঁছে রকেট থেকে নামার পরে প্রোফেসর শঙ্কুদের যারা অভ্যর্থনা করতে এসেছিল তারা মোটেই মানুষের মতো নয়। তাদের চেহারা ছিল অনেকটা অতিকায় পিঁপড়ের মতো। বিরাট মাথা, আর চোখ, কিন্তু সে অনুপাতে হাত-পা অত্যন্ত সরু। এদের দেখে প্রোফেসর শঙ্কুর মনে হয় যে মানুষের অবস্থা থেকে এরা অনেক পিছিয়ে আছে এবং সেখানে পৌঁছোতে এদের অনেক সময় লাগবে। এদের ঘরবাড়ি বলেও কিছু নেই। গর্ত দিয়ে মাটির ভিতরে ঢুকে যায় এবং সেখানেই থাকে।

কিন্তু তাতে ওর কিছু হলো না। — মন্তব্যটির প্রসঙ্গ নির্দেশ করো।

প্রসঙ্গ নির্দেশ – টাফা গ্রহের এক বাসিন্দাকে ডেকে শঙ্কু একদিন তাদের বৈজ্ঞানিকদের নিয়ে আসতে বলেন। পিঁপড়ে আকৃতি সেই লোকটি শঙ্কুকে বলে যে ওসব বিজ্ঞান-টিজ্ঞান দিয়ে কিছু হবে না। বরং তারা মাঝেমধ্যে তাঁর কাছে আসবে। প্রোফেসর শঙ্কুর সরল কথাবার্তা তাদের নাকি শুনতে ভালো লাগে। এই জাতীয় কথায় বিব্রত হয়েই শঙ্কু তাঁর নস্যির বন্দুক লোকটির নাকের ফুটোয় তাক করেন। কিন্তু লোকটির তাতে কিছু হয়নি, কারণ তারা এখনও হাঁচতেই শেখেনি।

ব্যোমযাত্রীর ডায়রি একটি অসাধারণ সাহিত্যকর্ম। এই গল্পে সত্যজিৎ রায় একজন বিজ্ঞানীর চোখ দিয়ে মহাকাশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। গল্পের নায়ক প্রফেসর অমরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় একজন সফল বিজ্ঞানী। তিনি মহাকাশ ভ্রমণের স্বপ্ন দেখেন এবং সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি নিরলস পরিশ্রম করেন। অবশেষে তিনি একটি মহাকাশযান তৈরি করেন এবং মহাকাশ ভ্রমণের জন্য যাত্রা করেন।

Please Share This Article

Related Posts

ভাস্বর বাতি, CFL বাতি ও LED বাতির মধ্যে পার্থক্য লেখো।

ভাস্বর বাতি, CFL বাতি ও LED বাতির মধ্যে পার্থক্য লেখো।

নবম শ্রেণী ইতিহাস - প্রাককথন: ইউরোপ ও আধুনিক যুগ

নবম শ্রেণী ইতিহাস – প্রাককথন: ইউরোপ ও আধুনিক যুগ

নবম শ্রেণী ইতিহাস - বিপ্লবী আদর্শ,নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ - বিষয়সংক্ষেপ

নবম শ্রেণী ইতিহাস – বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ – বিষয়সংক্ষেপ

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

Madhyamik Life Science Suggestion 2026 – রচনাধর্মী প্রশ্ন

Madhyamik Life Science Suggestion 2026 – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

Madhyamik Life Science Suggestion 2026 – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – স্তম্ভ মেলাও

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – সত্য মিথ্যা