নবম শ্রেণী – ভৌতবিজ্ঞান – শব্দ – শব্দের উৎস : কম্পন – প্রশ্ন ও উত্তর

Gopi

আজকের আর্টিকেলে আমরা নবম শ্রেণীর ভৌতবিজ্ঞান বইয়ের সপ্তম অধ্যায় “শব্দ” এর “শব্দের উৎস : কম্পন” থেকে সহজ ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন-উত্তর শেয়ার করবো। এই প্রশ্নগুলো নবম শ্রেণির ইউনিট টেস্ট থেকে বার্ষিক পরীক্ষা এর জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি চাকরি বা বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পরীক্ষাতেও কাজে লাগবে। এই অধ্যায় থেকে স্কুল পরীক্ষা থেকে শুরু করে চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই প্রশ্ন আসে, তাই এই প্রশ্নোত্তরগুলো সবাইকে সাহায্য করবে। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর সহজ ভাষায় লেখা হয়েছে, যাতে সবাই বুঝতে পারেন। পড়ার শেষে এই অধ্যায়ের মুখ্য বিষয়গুলো আপনার আয়ত্তে চলে আসবে এবং যেকোনো পরীক্ষায় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে লিখতে পারবেন।

নবম শ্রেণী - ভৌতবিজ্ঞান - শব্দ - শব্দের উৎস : কম্পন - প্রশ্ন ও উত্তর

জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তর

Contents Show

শব্দ কী? শব্দের উৎস বলতে কী বোঝায়?

শব্দ (Sound) –

কম্পনশীল বস্তু থেকে নির্গত যে শক্তি তরঙ্গের আকারে কোনো স্থিতিস্থাপক ও নিরবচ্ছিন্ন মাধ্যমের মধ্য দিয়ে সংবাহিত হয়ে আমাদের কানে পৌঁছোয় ও মস্তিষ্কে বিশেষ ধরনের অনুভূতি (শ্রবণ) সৃষ্টি করে, তাকে শব্দ বলে।

শব্দের উৎস (Source of sound) –

যে-কোনো কম্পনশীল বস্তুই হল শব্দের উৎস। শব্দের উৎসকে স্বনক বলে। স্বনক কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় হতে পারে। যেমন – সেতারের তার টেনে ছেড়ে দিলে মিষ্টি শব্দ উৎপন্ন হয়। পুকুরের জলে একটি পাথর ফেললে বা বাঁশিতে ফুঁ দিলে শব্দের সৃষ্টি হয়। এখানে সেতারের তারের কম্পন, পুকুরের জলের কম্পন, বাঁশির মধ্যের কম্পমান বাতাস – এগুলি হল শব্দের উৎস বা স্বনক।

দেখাও যে, কম্পনের ফলে শব্দের সৃষ্টি হয়।

কম্পনে শব্দ সৃষ্টির পরীক্ষা পদ্ধতি –

একটি পাতলা লোহার প্লেট নেওয়া হল, যা একটি স্তম্ভের উপর দৃঢ়ভাবে আটকানো আছে। এবার প্লেটটির উপর সামান্য শুকনো বালি ছড়িয়ে একটি বেহালার ছড় দিয়ে প্লেটের কিনারায় টানা হল।

দেখাও যে, কম্পনের ফলে শব্দের সৃষ্টি হয়।

পর্যবেক্ষণ –

দেখা যাবে, প্লেটটির উপর বালির কণাগুলি লাফাচ্ছে এবং সেই সঙ্গে শব্দ শোনা যাচ্ছে। এই অবস্থায় প্লেটটি হাত দিয়ে ধরলে বালির কণাগুলি স্থির হয়ে যায় এবং শব্দও থেমে যায়।

সিদ্ধান্ত –

প্লেটের কম্পনের জন্যই বালির কণাগুলি লাফাতে থাকে এবং শব্দ সৃষ্টি হয়। এই পরীক্ষা থেকে প্রমাণিত হয় যে, কম্পনের ফলে শব্দ সৃষ্টি হয়।

বিকল্প পরীক্ষা

আরো কিছু পরীক্ষা দেওয়া হল যার দ্বারা প্রমাণিত হয় কম্পনের ফলে শব্দ সৃষ্টি হয়।

পরীক্ষা – 1

একটি ড্রাম নিয়ে তার উপরিস্থ পর্দাটির ওপর আঘাত করলে শব্দ শোনা যায়। এই অবস্থায় পর্দাটি স্পর্শ করলে বোঝা যায় পর্দাটি কাঁপছে এবং সামান্য বালি ছড়িয়ে দিলে বালির কণাগুলিও কাঁপতে থাকে। এর থেকে বোঝা যায় কম্পনের ফলে শব্দের সৃষ্টি হয়।

দেখাও যে, কম্পনের ফলে শব্দের সৃষ্টি হয়।

পরীক্ষা – 2

একটি কাঠের টেবিলের উপর কিছুটা দূরত্বে দুটি পেরেক পোঁতা হল। এবার একটি রবারের দুপ্রান্ত ছবির মতো করে পেরেক দুটির সঙ্গে আটকানো হল। এবার রবারটিকে সামান্য টেনে ছেড়ে দিলে রবার ব্যান্ডটি কাঁপতে থাকে ও শব্দ উৎপন্ন হয়। রবার ব্যান্ডটির কম্পন বন্ধ হয়ে গেলে শব্দও থেমে যায়। অর্থাৎ, কম্পনের ফলেই শব্দ সৃষ্টি হয়।

দেখাও যে, কম্পনের ফলে শব্দের সৃষ্টি হয়।

পরীক্ষা – 3

সুরশলাকা হল ইস্পাত নির্মিত দুটি দৃঢ় বাহুযুক্ত আকৃতির গঠনবিশিষ্ট একটি উপকরণ। পরীক্ষাগারে একমাত্রিক শব্দ। (নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কযুক্ত শব্দ বা সুর) উৎপাদনের প্রয়োজনে এটি ব্যবহৃত হয়।

দেখাও যে, কম্পনের ফলে শব্দের সৃষ্টি হয়।

এখন একটি সুরশলাকার যে-কোনো বাহু দিয়ে রবারের প্যাডে আঘাত করলে শলাকার বাহু দুটি কাঁপতে থাকে ও শব্দ উৎপন্ন হয়। যতক্ষণ কম্পন স্থায়ী হয় ততক্ষণ ধরেই সুরশলাকা থেকে শব্দ নিঃসৃত হয়ে থাকে। এই অবস্থায় বাহুটিকে ঝোলানো একটি টেনিস বলের গায়ে স্পর্শ করালে দেখা যায় যে, যতক্ষণ বাহুটি কম্পনরত অবস্থায় থাকে ততক্ষণই বলটি বাহুর সংস্পর্শে আসামাত্রই ছিটকে যায়। হাত দিয়ে বাহুটিকে হঠাৎ চেপে ধরলে শলাকার কম্পন ও সেই কারণে বলটির ছিটকে যাওয়া বন্ধ হয় এবং সুরশলাকা থেকে শব্দও আর শোনা যায় না।

এই পরীক্ষাগুলির দ্বারা সহজেই প্রমাণিত হয় যে, শব্দ সৃষ্টির জন্য কম্পন অপরিহার্য।

মানুষের স্বরতন্ত্রীতে শব্দ উৎপাদনের কৌশল সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো।

মানুষের স্বরতন্ত্রীতে শব্দ উৎপাদানর কৌশন –

মানুষ তার গলার মধ্যে শ্বাসনালী বা ট্রাকিয়ার উপরে অবস্থিত একটি বিশেষ অঙ্গ স্বরযন্ত্র (Voice box) বা ল্যারিংসের (Larynx) সাহায্যে শব্দ উৎপাদন করে। এই স্বরযন্ত্রে দুটি অস্থিবন্ধনী বা লিগামেন্ট থাকে, যাদের বলা হয় স্বরতন্ত্রী (Vocal cords)। এ দুটি আবার পেশির সঙ্গে সংযুক্ত, যারা স্বরতন্ত্রীর টান বা তাদের মধ্যে ব্যবধানের মানের পরিবর্তন ঘটায়। এই স্বরতন্ত্রীর কম্পনেই শব্দের সৃষ্টি হয়ে থাকে। স্বাভাবিক অবস্থায় যখন মানুষ মৌন থাকে স্বরতন্ত্রীর পেশিগুলি সম্পূর্ণ শিথিলভাবে ব্যবধান রেখে অবস্থান করে যাতে ফুসফুস দ্বারা পাঠানো বায়ুস্রোত তাদের মধ্যে দিয়ে চালিত হলেও কোনো কম্পন সৃষ্টি হয় না, ফলে শব্দও উৎপন্ন হয় না।

কথা বলার চেষ্টা করলে সংশ্লিষ্ট পেশি দুটি সংকুচিত হয় এবং পরস্পর যথেষ্ট কাছাকাছি, উভয়ের মধ্যে সরু ফাঁক রেখে অবস্থান করে। এই অবস্থায় ফুসফুস যে বায়ুস্রোত পাঠায়, তা ওই স্বরতন্ত্রী দুটির মাঝে থাকা ওই সরু ফাঁক দিয়ে প্রবাহিত হয়।

মানুষের স্বরতন্ত্রীতে শব্দ উৎপাদনের কৌশল সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো।

স্বরতন্ত্রী দুটি পাতলা ও নরম হওয়ায় বায়ুপ্রবাহের প্রভাবে সহজেই কম্পিত হয়। পেশি বেশি পরিমাণে সংকুচিত হলে স্বরতন্ত্রী দুটি টানটান অবস্থায় আসে এবং বেশি তীক্ষ্ণ শব্দ উৎপাদন করে। অন্যদিকে পেশি শিথিল অবস্থায় থাকলে স্বরতন্ত্রীদ্বয় আলগা থাকে ফলে খাদের বা মোটা শব্দ উৎপন্ন হয়। জিহ্বা, ঠোঁট, গাল ইত্যাদি সহায়ক অঙ্গগুলি বোধগম্য শব্দ উৎপাদকের (articulator) ভূমিকা পালন করে এবং নিঃসৃত শব্দকে পরিস্রুত (filter) করে থাকে। পরিচালিত বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া ঘটিয়ে এরা ওই প্রবাহকে শক্তিশালী বা দুর্বল শব্দ উৎসে রূপান্তরিত করে।

একটি সহজ সক্রিয়তামূলক পরীক্ষার বর্ণনা দাও, যার দ্বারা শব্দ উৎপাদন কৌশলের ধারণা পাওয়া যায়।

সক্রিয়তামূলক কাজের সাধ্যান স্বরতন্ত্রীতে শব্দ উৎপাদন কৌশনের ধারণা গঠন –

পরীক্ষা পদ্ধতি –

  • দুটি পাতলা কাগজ বা একই আকৃতির দুটি রবারের পর্দার ফালি সদৃশ অংশ নেওয়া হল।
  • কাগজ বা রবারের টুকরো দুটির দুইপ্রান্ত টানটান অবস্থায় মুখের সামনে রাখা হল।
  • মধ্যবর্তী সরু ফাঁকের মধ্যে জোরে ফুঁ দেওয়া হল।
একটি সহজ সক্রিয়তামূলক পরীক্ষার বর্ণনা দাও, যার দ্বারা শব্দ উৎপাদন কৌশলের ধারণা পাওয়া যায়।

পর্যবেক্ষণ –

দেখা গেল, ফুঁ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই টুকরো দুটি কাঁপছে এবং শব্দ উৎপন্ন হচ্ছে।

সিদ্ধান্ত –

ফুসফুস থেকে পাঠানো বায়ুস্রোতের প্রভাবে আমাদের স্বরতন্ত্রীগুলিও এমন টান করা কাগজ বা রবারের পর্দার তুল্য আচরণ করে এবং কম্পনশীল অবস্থায় এসে শব্দ উৎপাদন করে থাকে। খেলনা বেলুনে লাগানো বাঁশিও একই নীতিতে কাজ করে।

স্বরযন্ত্র বা Voice box অঙ্গটি কী নামে পরিচিত?

স্বরযন্ত্র বা Voice box অঙ্গটি Adam’s apple বা কণ্ঠমণি নামেও পরিচিত। এই অঙ্গটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে কথা বলা অসুবিধাজনক হয় এবং মানুষ বোবা হয়ে যেতে পারে।

বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রে কীভাবে শব্দের উৎপত্তি হয়?

বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রে যন্ত্রটির বিভিন্ন অংশের কম্পনে শব্দ সৃষ্টি হয়। যেমন –

1. ভায়োলিন, গিটার, সেতার, বীণা প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্রে একাধিক টান করা তার (stretched string) থাকে। এই টান করা তারে আঘাত করলে বা টেনে ছেড়ে দিলে তারটি কাঁপতে থাকে ও শব্দ উৎপন্ন হয়।

বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রে কীভাবে শব্দের উৎপত্তি হয়?

2. তবলা, মৃদঙ্গ, ঢোল, ড্রাম, করতাল প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্রে একটি টান করা পাতলা চামড়ার পর্দা থাকে। এই পর্দায় আঘাত করলে পর্দাটি কম্পিত হয় ও শব্দ উৎপন্ন হয়।

বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রে কীভাবে শব্দের উৎপত্তি হয়?

3. হারমোনিয়াম, বাঁশি, সানাই, স্যাক্সোফোন, পিয়ানো প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্রে বায়ুপূর্ণ একাধিক নল থাকে। এই বায়ুস্তম্ভটিকে ফুঁ দিয়ে বা আঘাত করে কম্পিত করলে শব্দ উৎপন্ন হয়।

বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রে কীভাবে শব্দের উৎপত্তি হয়?

পর্যাবৃত্ত গতি ও সরল দোলগতি কাকে বলে?

পর্যাবৃত্ত গতি (Repetitive motion) –

কোনো গতিশীল কণা নির্দিষ্ট সময় পরপর একই পথে বারবার যাতায়াত করে যে পুনরাবৃত্তিমূলক গতি সম্পন্ন করে, তাকে পর্যাবৃত্ত গতি বলে। যেমন – দোলকের গতি, ঘড়ির কাঁটার গতি, গ্রহের আবর্তন ইত্যাদি।

সরল দোলগতি (Simple harmonic motion/oscillation) –

যে রৈখিক পর্যাবৃত্ত দোলনগতিতে দোলনরত কণার ত্বরণ তার সরণের সমানুপাতিক এবং ত্বরণ ও সরণ পরস্পর বিপরীতমুখী হয়, তাকে সরল দোলগতি বলে। যেমন – দোলক ঘড়ির পেন্ডুলামের গতি, স্প্রিংয়ের কম্পন ইত্যাদি।

পর্যাবৃত্ত গতি ও সরল দোলগতি কাকে বলে?

দোলনের মধ্যবিন্দু বা সাম্যবিন্দু কাকে বলে?

কোনো বস্তুকণা নির্দিষ্ট বিন্দুর উভয়পাশে ‘এদিক ওদিক’ (to and fro) যাতায়াত করলে তার গতিকে বলা হয় দোলন (Oscillation)। সংশ্লিষ্ট বিন্দুটিকে বলা হয় দোলনের মধ্যবিন্দু বা সাম্যবিন্দু।

সরল দোলগতি ও পর্যাবৃত্ত গতির মধ্যে সম্পর্ক লেখো।

সরল দোলগতি ও পর্যাবৃত্ত গতির মধ্যে সম্পর্ক –

সরল দোলগতি অবশ্যই পর্যাবৃত্ত গতি, কিন্তু পর্যাবৃত্ত গতি সরল দোলগতি হতেও পারে বা নাও পারে। যেমন – বৃত্তপথে সুষম দ্রুতিতে গতিশীল কোনো বস্তুকণার গতি নির্দিষ্ট সময়ান্তরে পুনরাবৃত্ত হয়। তাই এটি পর্যাবৃত্ত গতি। কিন্তু এই গতির ক্ষেত্রে ত্বরণ (অভিকেন্দ্র ত্বরণ) সর্বদা তাৎক্ষণিক সরণের অভিমুখের সঙ্গে লম্ব এবং ত্বরণের মানও ধ্রুবক। তাই বৃত্তীয় গতি সরল দোলগতি নয়। সুতরাং বলা যায় যে, সরল দোলগতি মাত্রই পর্যাবৃত্ত গতি, কিন্তু সকল পর্যাবৃত্ত গতি সরল দোলগতি নয়।

কম্পন সম্পর্কিত নিম্নলিখিত রাশিগুলির সংজ্ঞা দাও – বিস্তার, পর্যায়কাল, কম্পাঙ্ক।

বিস্তার (Amplitude) –

কোনো দোলনরত বস্তু তার সাম্যবিন্দুর উভয় পাশে সর্বোচ্চ যে দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে, সেই দূরত্বকে ওই দোলগতির বিস্তার বলা হয়। a অক্ষর দ্বারা এটি চিহ্নিত হয়ে থাকে। যেমন – প্রদর্শিত চিত্রে দোলক ঘড়ির পেন্ডুলামের বিস্তার OA = OB = a।

পর্যায়কাল (Time period) –

দোলনগতি নির্বাহকারী কোনো বস্তুকণা 1টি পূর্ণ দোলন বা কম্পন সম্পূর্ণ করতে যে সময় নেয়, তাকে ওই গতির দোলনকাল বা পর্যায়কাল (T) বলে।

পর্যাবৃত্ত গতির ক্ষেত্রে এটি 1টি পূর্ণ আবর্তন বা গতির পুনরাবৃত্তি ঘটতে যে সময় লাগে, সেই সময়কালকে বোঝায়।

কম্পাঙ্ক (Frequency) –

পর্যাবৃত্ত ও দোলনগতি সম্পাদনকারী কোনো বস্তুকণা 1 সেকেন্ড সময়ে যতগুলি সংখ্যক পূর্ণ আবর্তন বা দোলন সম্পূর্ণ করে, তাকে ওই গতির কম্পাঙ্ক বলা হয়। n বা v অক্ষর দ্বারা এটি চিহ্নিত হয়ে থাকে। ‘প্রতি সেকেন্ডে আবর্তন সংখ্যা’ (cycles per second) দ্বারা একে পরিমাপ করা হয়।

দোলনের কম্পন কাকে বলে?

সাম্যবিন্দু বা প্রান্তিক অবস্থান থেকে যাত্রা শুরু করে দোলনরত কণা বিস্তারের চারগুণ অর্থাৎ 4a দূরত্ব অতিক্রম করলে 1টি পূর্ণ দোলন সম্পন্ন হয়েছে বলে ধরা হয়। দোলনের বিস্তার ক্ষুদ্র হলে তাকে কম্পন বলা হয়ে থাকে। সুতরাং, কম্পন ও দোলনের মধ্যে কোনো মৌলিক প্রভেদ নেই।

প্রদত্ত রাশিগুলির CGS এবং SI এককগুলি লেখো – বিস্তার, পর্যায়কাল, কম্পাঙ্ক।

রাশির নামCGS এককSI একক
বিস্তার (a)সেমিমিটার
পর্যায়কাল (T)সেকেন্ডসেকেন্ড
কম্পাঙ্ক (n)সেকেন্ড-1 (Hz)সেকেন্ড-1 (Hz)

কম্পাঙ্ক ও পর্যায়কালের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করো।

পর্যায়কাল ও কম্পাঙ্কের সম্পর্ক –

পর্যাবৃত্ত বা দোলনগতি সম্পন্ন কোনো বস্তুকণার কম্পাঙ্ক ও আবর্তনকাল বা দোলনকাল যথাক্রমে n ও T হলে –

কণাটি n সংখ্যক পূর্ণ আবর্তন বা কম্পন সম্পন্ন করে 1 সেকেন্ডে

কণাটি 1টি পূর্ণ আবর্তন বা কম্পন সম্পন্ন করে \(\frac1n\) সেকেন্ডে

সংজ্ঞানুসারে, এই সময় ব্যবধান কণাটির গতির পর্যায়কালের (T) সমান।

∴ \(T=\frac1n\)

বা, \(n=\frac1T\)

∴ কম্পাঙ্ক ও পর্যায়কাল পরস্পর অনোন্যক।

লেখচিত্রের মাধ্যমে বিস্তার ও পর্যায়কাল নির্দেশ করো।

লেখচিত্রের মাধ্যমে সরল দোলগতির বিস্তার ও পর্যায়কাল নির্দেশ করা হল –

লেখচিত্রের মাধ্যমে বিস্তার ও পর্যায়কাল নির্দেশ করো।

বোধমূলক প্রশ্নোত্তর

শব্দকে একপ্রকার শক্তি বলা হয় কেন?

শব্দ একপ্রকার শক্তি কারণ –

  • শব্দ অদৃশ্য, ভরহীন, আয়তনহীন কিন্তু ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য।
  • অন্যান্য শক্তির মতো শব্দকে অন্য শক্তিতে এবং অন্য শক্তিকে শব্দে রূপান্তরিত করা যায়, যেমন – বিস্ফোরণের শব্দে জানালার কাচে ফাটল ধরে, এক্ষেত্রে শব্দশক্তি যান্ত্রিকশক্তিতে পরিবর্তিত হয়। আবার হাততালি দিলে শব্দ উৎপন্ন হয়, যা যান্ত্রিক শক্তির শব্দে রূপান্তরের দৃষ্টান্ত।

প্রদত্ত বাদ্যযন্ত্রগুলির কোন্ অংশের কম্পনে শব্দ সৃষ্টি হয় – সেতার, তবলা, সুরশলাকা, বাঁশি।

বাদ্যযন্ত্রগুলির যে যে অংশে কম্পনের শব্দ সৃষ্টি হয় –

  • সেতার – টান দেওয়া তারের কম্পনে শব্দ সৃষ্টি হয়।
  • তবলা – পর্দার কম্পনে শব্দ সৃষ্টি হয়।
  • সুরশলাকা – বাহুগুলির কম্পনে শব্দ সৃষ্টি হয়।
  • বাঁশি – নলমধ্যস্থ বায়ুস্তম্ভের কম্পনে শব্দ সৃষ্টি হয়।

গাণিতিক প্রশ্নাবলি

প্রয়োজনীয় সূত্র

বস্তুকণার কম্পাঙ্ক n ও আবৰ্তনকাল বা দোলনকালে T হলে, \(n=\frac1T\)।

একটি সুরশলাকার পর্যায়কাল \(\frac1{512} \)সেকেন্ড। সুরশলাকাটির কম্পাঙ্ক কত?

আমরা জানি, কম্পাঙ্ক=1পর্যায়কাল

∴ প্রদত্ত সুরশলাকাটির কম্পাঙ্ক = \( \frac1{\displaystyle\frac1{512}}\)

= \( 512\;Hz\)

∴ সুরশলাকাটির কম্পাঙ্ক \( 512\;Hz\)।

একটি সুরশলাকার কম্পাঙ্ক 256 Hz হলে তার পর্যায়কাল কত?

আমরা জানি, পর্যায়কাল=1কম্পাঙ্ক

∴ প্রদত্ত সুরশলাকাটির পর্যায়কাল = \(\frac1{256}\;s\)

= \( 39\times10^{-4}\;s\)

∴ তার পর্যায়কাল \( 39\times10^{-4}\;s\)।

Class 9 Physical Science – Notes for All Chapters

Chapter NameTropics
পরিমাপ পরিমাপ ও একক
বিভিন্ন মাপের একক
মাত্রা
পরিমাপ
বল ও গতিস্থিতি ও গতি
গতির সমীকরণ
নিউটনের প্রথম গতিসূত্র
নিউটনের দ্বিতীয় গতি সূত্র
নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্র
বিভিন্ন ধরণের বল
রৈখিক ভরবেগ
রৈখিক ভরবেগ সংরক্ষণ
পদার্থ : গঠন ও ধর্মতরল ও বায়ুর চাপ
আর্কিমিডিসের নীতি
পৃষ্ঠটান
সান্দ্রতা
বার্নোলির নীতি
স্থিতিস্থাপকতা
পদার্থ : পরমাণুর গঠন ও পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহপরমাণুর গঠন
মোলের ধারণা
দ্রবণ
অ্যাসিড, ক্ষার, লবণ
মিশ্রণের উপাদানের পৃথকীকরণ
জল
শক্তির ক্রিয়া , কার্য, ক্ষমতাশক্তির ক্রিয়া , কার্য, ক্ষমতা
তাপক্যালোরিমিতি
কার্য ও তাপের তুল্যতা
লীনতাপ
সম্পৃক্ত ও অসম্পৃক্ত বাষ্প
জলের ব্যতিক্রান্ত প্রসারণ
শব্দশব্দের উৎস : কম্পন
শব্দের বিস্তার : তরঙ্গ
শব্দের কয়েকটি ধর্ম
শব্দের বৈশিষ্ট্য
মানুষের কান ও শব্দ শোনার কৌশল
শব্দদূষণ

আজকের আর্টিকেলে আমরা নবম শ্রেণির ভৌতবিজ্ঞান বইয়ের সপ্তম অধ্যায় “শব্দ” এর “শব্দের উৎস : কম্পন” থেকে পরীক্ষায় আসা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নোত্তরগুলো নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা, এমনকি চাকরি বা যেকোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্যও উপযোগী। কারণ, এই অধ্যায়ের প্রশ্ন প্রায়ই বিভিন্ন পরীক্ষায় কমন আসে।

আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে। যদি কোনো প্রশ্ন, মতামত বা সাহায্যের প্রয়োজন হয়, নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন কিংবা টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন—আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি সর্বদা প্রস্তুত।

ধন্যবাদ সবাইকে।

Please Share This Article

Related Job Posts

নবম শ্রেণী - ভৌতবিজ্ঞান - শব্দ - শব্দদূষণ - প্রশ্ন ও উত্তর

নবম শ্রেণী – ভৌতবিজ্ঞান – শব্দ – শব্দদূষণ – প্রশ্ন ও উত্তর

নবম শ্রেণী - ভৌতবিজ্ঞান - শব্দ - মানুষের কান ও শব্দ শোনার কৌশল - প্রশ্ন ও উত্তর

নবম শ্রেণী – ভৌতবিজ্ঞান – শব্দ – মানুষের কান ও শব্দ শোনার কৌশল – প্রশ্ন ও উত্তর

নবম শ্রেণী - ভৌতবিজ্ঞান - শব্দ - শব্দের বৈশিষ্ট্য - প্রশ্ন ও উত্তর

নবম শ্রেণী – ভৌতবিজ্ঞান – শব্দ – শব্দের বৈশিষ্ট্য – প্রশ্ন ও উত্তর

About The Author

Gopi

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি স্থানীয় বায়ুর পরিচয় দাও।

আকস্মিক বায়ু বা অনিয়মিত বায়ুপ্রবাহ কাকে বলে? আকস্মিক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ

সাময়িক বায়ু কাকে বলে? সাময়িক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ

নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় ও মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয় সৃষ্টির কারণ লেখো।

পৃথিবীর বায়ুচাপ বলয়গুলির সঙ্গে নিয়ত বায়ুপ্রবাহের সম্পর্ক আলোচনা করো।