গিরিখাত ও ক্যানিয়ন কাকে বলে? গিরিখাত ও ক্যানিয়নের মধ্যে পার্থক্য

Rahul

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “গিরিখাত ও ক্যানিয়ন কাকে বলে? গিরিখাত ও ক্যানিয়নের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “গিরিখাত ও ক্যানিয়ন কাকে বলে? গিরিখাত ও ক্যানিয়নের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের প্রথম অধ্যায় “বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তার দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ – নদীর বিভিন্ন কাজ ও তাদের সংশ্লিষ্ট ভূমিরূপ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

গিরিখাত ও ক্যানিয়ন কাকে বলে গিরিখাত ও ক্যানিয়নের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
গিরিখাত ও ক্যানিয়ন কাকে বলে গিরিখাত ও ক্যানিয়নের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

গিরিখাত ও ক্যানিয়ন কাকে বলে?

গিরিখাত –

সংজ্ঞা – উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির ঢালের দরুন নদীর প্রবল বেগে প্রবাহিত হওয়ার ফলস্বরূপ পার্থক্যের তুলনায় নিম্ন ক্ষয় অধিক হয় এবং নদীর উপত্যকাটি গভীর সংকীর্ণ ‘V’ এর আকৃতির ন্যায় খাতের সৃষ্টি করে তখন তাকে গিরিখাত বলে।

উদাহরণ – পেরু রাষ্ট্রের কলকা নদীর এল ক্যানন দ্য কলকা পৃথিবীর গভীরতম গিরিখাত।

ক্যানিয়ন –

সংজ্ঞা – উচ্চ ও শুষ্ক অঞ্চলের নদী উপত্যকা যখন ইংরেজি ‘।’ আকৃতির মত হয় তখন তাকে ক্যানিয়ন বলে।

উৎপত্তি – উচ্চ ও শুষ্ক অঞ্চলে প্রবাহিত নদী অবঘর্ষ পদ্ধতিতে দ্রুত নিম্নক্ষয় করে কিন্তু বৃষ্টির অভাবে পার্শ্বক্ষয় হয় না বলে উপত্যকা গভীর হয় এবং ‘।’ আকৃতির উপত্যকা বা ক্যানিয়ানে পরিণত হয়।

উদাহরণ – কলোরাডো নদীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন পৃথিবীর বিখ্যাত ক্যানিয়ন।

গিরিখাত ও ক্যানিয়নের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

গিরিখাত ও ক্যানিয়নের মধ্যে পার্থক্য –

বিষয়গিরিখাতক্যানিয়ন
সৃষ্ট অঞ্চলগিরিখাত সৃষ্টি হয় বৃষ্টিবহুল পার্বত্য অঞ্চলে।ক্যানিয়ন সৃষ্টি হয় বৃষ্টিহীন ‘প্রায় শুষ্ক’ মরু প্রায় উচ্চভূমি অঞ্চলে।
আকৃতিগিরিখাত খুব গভীর এবং এর আকৃতি ইংরেজি ‘V’ অক্ষরের মতো হয়।ক্যানিয়নের আকৃতি ইংরেজি ‘।’ অক্ষরের মতো হয়ে থাকে।
ক্ষয়ের প্রকৃতিগিরিখাত গঠনের সময় অধিক নিম্নক্ষয়ের সঙ্গে পার্শ্বক্ষয়ও হয়।ক্যানিয়ন গঠনের সময় পার্শ্বক্ষয় একদম হয় না শুধু নদীর নিম্নক্ষয় হয়।
নদীর গতি প্রকৃতিগিরিখাত আর্দ্র অঞ্চলে সৃষ্টি হয় বলে বহু উপনদী গিরিখাতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নদীর সঙ্গে মিলিত হয়।ক্যানিয়ন শুষ্ক পার্বত্য অঞ্চলে সৃষ্টি হয় বলে ক্যানিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীর সঙ্গে উপনদী মিলিত হয় না।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

গিরিখাত ও ক্যানিয়ন কী?

1. গিরিখাত – এটি একটি গভীর ও সংকীর্ণ উপত্যকা যা সাধারণত বৃষ্টিবহুল পার্বত্য অঞ্চলে নদীর ক্ষয়ের ফলে সৃষ্টি হয়। এর আকৃতি ইংরেজি ‘V’ অক্ষরের মতো হয়।
2. ক্যানিয়ন – এটি একটি গভীর ও চওড়া উপত্যকা যা সাধারণত শুষ্ক বা মরু অঞ্চলে নদীর নিম্নক্ষয়ের ফলে সৃষ্টি হয়। এর আকৃতি ইংরেজি ‘।’ অক্ষরের মতো হয়।

গিরিখাত ও ক্যানিয়ন কোথায় সৃষ্টি হয়?

1. গিরিখাত – বৃষ্টিবহুল পার্বত্য অঞ্চলে সৃষ্টি হয়।
2. ক্যানিয়ন – শুষ্ক বা মরুপ্রায় উচ্চভূমি অঞ্চলে সৃষ্টি হয়।

গিরিখাত ও ক্যানিয়নের আকৃতি কীভাবে আলাদা?

1. গিরিখাত – এর আকৃতি ‘V’ আকৃতির হয়।
2. ক্যানিয়ন – এর আকৃতি ‘।’ আকৃতির হয়।

গিরিখাত ও ক্যানিয়নের ক্ষয়ের প্রকৃতি কী?

1. গিরিখাত – এখানে নিম্নক্ষয় ও পার্শ্বক্ষয় উভয়ই হয়।
2. ক্যানিয়ন – এখানে শুধু নিম্নক্ষয় হয়, পার্শ্বক্ষয় হয় না।

গিরিখাত ও ক্যানিয়নে নদীর গতি প্রকৃতি কেমন?

1. গিরিখাত – আর্দ্র অঞ্চলে সৃষ্টি হয় বলে এখানে বহু উপনদী গিরিখাতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়।
2. ক্যানিয়ন – শুষ্ক অঞ্চলে সৃষ্টি হয় বলে এখানে উপনদী খুব কম বা নেই বললেই চলে।

গিরিখাত ও ক্যানিয়নের উদাহরণ দাও।

1. গিরিখাত – হিমালয় অঞ্চলের গিরিখাত, যেমন ব্রহ্মপুত্র নদের গিরিখাত।
2. ক্যানিয়ন – গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন (যুক্তরাষ্ট্র), কলোরাডো নদীর ক্যানিয়ন।

গিরিখাত ও ক্যানিয়নের সৃষ্টিতে জলবায়ুর ভূমিকা কী?

1. গিরিখাত – আর্দ্র জলবায়ু ও বৃষ্টিপাতের প্রভাবে সৃষ্টি হয়।
2. ক্যানিয়ন – শুষ্ক ও মরু জলবায়ুতে নদীর নিম্নক্ষয়ের ফলে সৃষ্টি হয়।

গিরিখাত ও ক্যানিয়নের মধ্যে কোনটি বেশি গভীর?

1. গিরিখাত – সাধারণত গভীর হয়, তবে এর গভীরতা আঞ্চলিক ভূপ্রকৃতির উপর নির্ভর করে।
2. ক্যানিয়ন – এটি আরও গভীর ও চওড়া হতে পারে, যেমন গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন।

গিরিখাত ও ক্যানিয়নের মধ্যে কোনটি বেশি চওড়া?

1. গিরিখাত – তুলনামূলকভাবে সংকীর্ণ হয়।
2. ক্যানিয়ন – এটি সাধারণত বেশি চওড়া হয়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “গিরিখাত ও ক্যানিয়ন কাকে বলে? গিরিখাত ও ক্যানিয়নের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “গিরিখাত ও ক্যানিয়ন কাকে বলে? গিরিখাত ও ক্যানিয়নের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের প্রথম অধ্যায় “বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তার দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ – নদীর বিভিন্ন কাজ ও তাদের সংশ্লিষ্ট ভূমিরূপ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

রাশিবিজ্ঞান-গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান-কষে দেখি 26.4-মাধ্যমিক গণিত

মাধ্যমিক গণিত – রাশিবিজ্ঞান: গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান – কষে দেখি 26.4

রাশিবিজ্ঞান-গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান-কষে দেখি 26.3-মাধ্যমিক গণিত

মাধ্যমিক গণিত – রাশিবিজ্ঞান: গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান – কষে দেখি 26.3

রাশিবিজ্ঞান-গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান - কষে দেখি 26.2-মাধ্যমিক গণিত

মাধ্যমিক গণিত – রাশিবিজ্ঞান: গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান – কষে দেখি 26.2

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

Madhyamik Mathematics Suggestion 2026

Madhyamik Mathematics Suggestion 2026 – Mark 5

Madhyamik Mathematics Suggestion 2026 – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

Madhyamik Mathematics Suggestion 2026 – সত্য মিথ্যা

Madhyamik Mathematics Suggestion 2026 – শূন্যস্থান পূরণ