এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “হাইপারগ্লাইসেমিয়া কাকে বলে? কোন্ হরমোনকে ‘হাইপারগ্লাইসেমিক হরমোন’ বলা হয় এবং কেন? হাইপোগ্লাইসেমিয়া কাকে বলে?” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞানের প্রথম অধ্যায় “জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়” -এর “প্রাণীদের সাড়াপ্রদান ও রাসায়নিক সমন্বয়-হরমোন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

হাইপারগ্লাইসেমিয়া কাকে বলে? কোন্ হরমোনকে ‘হাইপারগ্লাইসেমিক হরমোন’ বলা হয় এবং কেন?
100 mL রক্তে শর্করার স্বাভাবিক পরিমাণ 80-120 mg। ইনসুলিন হরমোনের কম ক্ষরণে কলাকোশে গ্লুকোজের দহন হ্রাস পায় এবং যকৃতে গ্লাইকোজেনেসিস প্রক্রিয়ার হার কমে যায়, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। এই অবস্থাকে হাই-পারগ্লাইসেমিয়া বলে।
গ্লুকাগনকে ‘হাইপারগ্লাইসেমিক হরমোন’ বলা হয়।
‘হাইপারগ্লাইসেমিক হরমোন’ বলা হয় কারণ – গ্লুকাগন যকৃৎ এবং পেশিকোশে সঞ্চিত থাকা গ্লাইকোজেনকে ভেঙে গ্লুকোজে পরিণত করে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণকে বৃদ্ধি করে, তাই গ্লুকাগনকে হাইপারগ্লাইসেমিক হরমোন বলে।
হাইপোগ্লাইসেমিয়া কাকে বলে?
100 mL রক্তে শর্করার মাত্রা 80-120 mg -এর থেকে কমে গেলে অর্থাৎ 70 mg হলে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়, তাকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
হাইপারগ্লাইসেমিয়া বলতে কী বোঝায়?
রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক মাত্রা (সাধারণত 80-120 mg/100 mL রক্ত) অপেক্ষা বৃদ্ধি পেলে তাকে হাইপারগ্লাইসেমিয়া বলে। এটি ইনসুলিনের অকার্যকারিতা বা অপর্যাপ্ততার কারণে ঘটে।
হাইপারগ্লাইসেমিয়া এবং হাইপোগ্লাইসেমিয়ার মধ্যে প্রধান পার্থক্য কী?
হাইপারগ্লাইসেমিয়া হলো রক্তে শর্করার স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি (সাধারণত >126 mg/dL fasting) হওয়া, অন্যদিকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলো স্বাভাবিকের চেয়ে কম (সাধারণত <70 mg/dL) হওয়া।
হাইপারগ্লাইসেমিয়ার সাধারণ কারণগুলো কী কী?
হাইপারগ্লাইসেমিয়ার সাধারণ কারণ –
1. ইনসুলিনের ঘাটতি বা কার্যকারিতা হ্রাস (টাইপ-1 ও টাইপ-2 ডায়াবেটিস)।
2. অত্যধিক কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ।
3. শারীরিক পরিশ্রমের অভাব।
4. কিছু ওষুধ (যেমন কর্টিকোস্টেরয়েড)।
5. গুরুতর সংক্রমণ বা অসুস্থতা।
6. গ্লুকাগনের অত্যধিক নিঃসরণ (গ্লুকাগনোমা)।
হাইপারগ্লাইসেমিক হরমোন বলতে গ্লুকাগন ছাড়া আর কোন হরমোনগুলোকে বোঝায়?
গ্লুকাগন ছাড়াও, কর্টিসল, এড্রেনালিন (এপিনেফ্রাইন), গ্রোথ হরমোন এবং থাইরয়েড হরমোনও রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে, তাই এগুলোকেও হাইপারগ্লাইসেমিক হরমোন বলা হয়।
হাইপারগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণগুলো কী কী?
তৃষ্ণা বৃদ্ধি, ঘন ঘন প্রস্রাব, ক্লান্তি, ঝাপসা দৃষ্টি, মাথাব্যথা, এবং দ্রুত ওজন হ্রাস হতে পারে। মারাত্মক অবস্থায় কেটোঅ্যাসিডোসিস হয়।
হাইপারগ্লাইসেমিয়া কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়?
নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম ও কার্বোহাইড্রেট-নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ইনসুলিন বা ওরাল হাইপোগ্লাইসেমিক ওষুধ গ্রহণ, এবং রক্তে শর্করা নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে।
গ্লুকাগন কিভাবে কাজ করে?
গ্লুকাগন যকৃতের কোষের সাথে যুক্ত হয়ে এনজাইম সিস্টেম সক্রিয় করে, যা গ্লাইকোজেনকে গ্লুকোজে ভাঙতে (গ্লাইকোজেনোলাইসিস) এবং নতুন গ্লুকোজ তৈরি করতে (গ্লুকোনিওজেনেসিস) সাহায্য করে।
হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কারণ ও প্রতিকার কী?
অতিরিক্ত ইনসুলিন বা ডায়াবেটিসের ওষুধ, দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকা, অত্যধিক ব্যায়াম ইত্যাদি কারণে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে। জুস, চিনি বা গ্লুকোজ ট্যাবলেট খাওয়া, বা গুরুতর ক্ষেত্রে ইনজেকশনযোগ্য গ্লুকাগন নেওয়ার মাধ্যমে এর প্রতিকার করা যায়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “হাইপারগ্লাইসেমিয়া কাকে বলে? কোন্ হরমোনকে ‘হাইপারগ্লাইসেমিক হরমোন’ বলা হয় এবং কেন? হাইপোগ্লাইসেমিয়া কাকে বলে?” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞানের প্রথম অধ্যায় “জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়” -এর “প্রাণীদের সাড়াপ্রদান ও রাসায়নিক সমন্বয়-হরমোন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।





মন্তব্য করুন