এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের ভিত্তিগত কৌশল আলোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের ভিত্তিগত কৌশল আলোচনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের ষষ্ঠ অধ্যায় “চলতড়িৎ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের ভিত্তিগত কৌশল আলোচনা করো।
উচ্চগতিসম্পন্ন জলপ্রবাহের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয় তাকে জলবিদ্যুৎ শক্তি বলে।
কোনো নদী বা জলপ্রপাতের জলকে একটি উঁচু জলাধারে সঞ্চিত করা হয়। এক্ষেত্রে জলাধারটিকে কোনো নদীর উচ্চ অববাহিকায় রাখা হয় যাতে প্রাকৃতিক পার্বত্য অঞ্চল তিনদিকের প্রতিবন্ধক বা দেয়ালের কাজ করে এবং নিম্ন অববাহিকার দিকটিতে একটি বাঁধ নির্মাণ করে জলের প্রবাহকে আটকে রাখা হয়। এই জলাধার থেকে একটি নির্গম সুড়ঙ্গের মধ্যে জলের ধারাকে উচ্চগতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কক্ষে পৌঁছে দেওয়া হয়। কয়েকটি জলকপাট -এর মাধ্যমে জলের প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। উচ্চবেগ সম্পন্ন জলধারার সাহায্যে টারবাইনের ব্লেড ঘুরিয়ে জেনারেটরের সাহায্যে বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপাদন করা হয়। জলাধারে আটকে থাকা জলের অভিকর্ষীয় স্থিতিশক্তি জলের প্রবাহের জন্য গতিশক্তিতে রূপান্তরিত হয় এবং এই গতিশক্তিই টারবাইনের ব্লেডে হস্তান্তরিত হয় ও তড়িৎচুম্বকীয় আবেশের মাধ্যমে তড়িৎশক্তিতে পরিণত হয়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
জলবিদ্যুৎ বা জলবিদ্যুৎ শক্তি বলতে কী বোঝায়?
উচ্চগতিসম্পন্ন জলপ্রবাহের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়, তাকেই জলবিদ্যুৎ শক্তি বলে। এটি একটি নবায়নযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব শক্তির উৎস।
জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল নীতিটি কী?
জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল নীতিটি হল শক্তির রূপান্তর। জলাধারে সঞ্চিত জলের অভিকর্ষীয় স্থিতিশক্তি প্রথমে প্রবাহের সময় গতিশক্তিতে রূপান্তরিত হয়। তারপর এই গতিশক্তি টারবাইন ঘুরিয়ে যান্ত্রিক শক্তিতে এবং সর্বশেষে জেনারেটরের মাধ্যমে তড়িৎশক্তিতে পরিণত হয়।
জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জলকে প্রথমে কোথায় জমা করা হয় এবং কেন?
জলকে প্রথমে একটি উঁচু জলাধারে (Reservoir) জমা করা হয়। এর প্রধান কারণ হলো উচ্চতা তৈরি করা, যাতে জল যথেষ্ট বেগ ও শক্তি নিয়ে নিচে পড়তে পারে এবং টারবাইন ঘোরানোর জন্য পর্যাপ্ত স্থিতিশক্তি অর্জন করতে পারে।
বাঁধ (Dam) নির্মাণের উদ্দেশ্য কী?
বাঁধ নির্মাণের মূল উদ্দেশ্য হলো নদীর জলপ্রবাহকে আটকে দিয়ে একটি কৃত্রিম জলাধার তৈরি করা, যা জলের প্রয়োজনীয় উচ্চতা ও সঞ্চয়ক্ষমতা নিশ্চিত করে। এটি জলের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণেরও কাজ করে।
জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে টারবাইন ও জেনারেটরের কাজ কী?
জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে টারবাইন ও জেনারেটরের কাজ হল –
1. টারবাইন – উচ্চবেগ সম্পন্ন জলধারা টারবাইনের ব্লেডে (পাখায়) আঘাত করে তাকে ঘুরায়। এভাবে জলের গতিশক্তি যান্ত্রিক শক্তিতে (ঘূর্ণনশক্তি) রূপান্তরিত হয়।
2. জেনারেটর – টারবাইনের সাথে সংযুক্ত জেনারেটর এই ঘূর্ণনশক্তি ব্যবহার করে তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ (Electromagnetic Induction) এর নীতির মাধ্যমে বৈদ্যুতিক শক্তি বা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে।
জলবিদ্যুৎ শক্তির প্রধান সুবিধাগুলো কী কী?
জলবিদ্যুৎ শক্তির প্রধান সুবিধাগুলো হল –
1. এটি একটি নবায়নযোগ্য শক্তি উৎস।
2. জ্বালানি পোড়ানোর প্রয়োজন নেই, তাই এটি দূষণমুক্ত।
3. একবার স্থাপনার পর উৎপাদন খরচ কম।
4. বিদ্যুৎ চাহিদা অনুযায়ী দ্রুত উৎপাদন কমানো-বাড়ানো যায়।
জলবিদ্যুৎ শক্তির কিছু অসুবিধা কী কী?
জলবিদ্যুৎ শক্তির কিছু অসুবিধা হল –
1. প্রাথমিকভাবে বাঁধ ও বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের খরচ অত্যন্ত বেশি।
2. বড় এলাকা জুড়ে জলাধার তৈরি করতে হলে বন্যা, বাসস্থান ধ্বংস ও জনগণকে স্থানান্তর (পুনর্বাসন) এর সমস্যা দেখা দেয়।
3. এটি স্থানীয় বাস্তুতন্ত্র ও মাছের প্রাকৃতিক চলাচল ব্যাহত করতে পারে।
4. এটি সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত ও জলপ্রবাহের উপর।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের ভিত্তিগত কৌশল আলোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের ভিত্তিগত কৌশল আলোচনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের ষষ্ঠ অধ্যায় “চলতড়িৎ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন