জল ক্রমাগত বায়ুমণ্ডল থেকে পৃথিবীপৃষ্ঠে এবং পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে পুনরায় বায়ুমণ্ডলে চলে আসে। এই থামাহীন, চক্রাকার ভ্রমণকেই আমরা জলচক্র বলি।
জলচক্রের বিভিন্ন ধাপ:
- বাষ্পীভবন: সূর্যের তাপে জলের তরল অবস্থা থেকে বাষ্পীয় অবস্থায় পরিবর্তিত হওয়াকে বাষ্পীভবন বলে।
- ঘনীভবন: বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প ঠান্ডা হয়ে মেঘে পরিণত হয়।
- অধঃক্ষেপণ: মেঘ থেকে বৃষ্টি, তুষার, বরফ, শিলাবৃষ্টি ইত্যাদি আকারে জল পৃথিবীপৃষ্ঠে পতিত হয়।
- অপপ্রবাহ: বৃষ্টির জল পৃথিবীপৃষ্ঠে নেমে ঢাল বেয়ে নদীতে চলে যায়।
- ভূগর্ভস্থ জল: কিছু বৃষ্টির জল মাটিতে অনুপ্রবেশ করে ভূগর্ভস্থ জলের ভাণ্ডার তৈরি করে।
- বাষ্পীভবন: ভূগর্ভস্থ জলও উষ্ণতার প্রভাবে বাষ্পীভূত হয়ে বায়ুমণ্ডলে উঠে যায়।
এইভাবে জল বারবার চক্রাকারে ঘুরতে থাকে। এই চক্র পৃথিবীতে জীবনের অস্তিত্বের জন্য অপরিহার্য।
আরও পড়ুন – জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব কীভাবে সুন্দরবন অঞ্চলের ওপরে প্রভাব পড়েছে?
জলচক্রের অংশ হিসেবে নদীর ভূমিকা কতখানি?
- পদ্ধতি – পৃথিবীর জলমন্ডলের সব জল জলচক্রের মাধ্যমে একসূত্রে বাঁধা। সূর্যের উত্তাপে প্রতিদিন জলভাগ থেকে জল বাষ্পীভূত হয়। পরে সেগুলি মেঘ এবং আরও পরে ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টি বা তুষার হিসেবে ঝরে পড়ে। ওই বৃষ্টিপাতের বেশিরভাগ অংশ আবার হিমবাহ গলা জলও নদী তৈরি করে। ওই জলের কিছুটা অংশ বাষ্পীভূত হয় এবং কিছুটা মাটির তলায় পৌঁছে ভৌমজলের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করে। বাকি জল সমুদ্রে ফিরে যায়। এভাবেই নদী জলচক্রের অংশ হিসেবে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে ওঠে।
- নদীর ভূমিকা – নদী কেবল ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটায় তাই না, সে জলচক্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নদী আছে বলেই বৃষ্টির জল সবটা ভূপৃষ্ঠে আটকে না থেকে নদীর মাধ্যমে সমুদ্রে এসে পড়ে। এখানে নদী একটি সংযোগ বা সূত্র, যার মাধ্যমে জলচক্র পূর্ণতা পায়।
- মুক্ত প্রণালী – নদী অববাহিকার জলচক্রকে মুক্ত প্রণালী বলে।