লাদাখ পর্বতশ্রেণি ও লাদাখ মালভূমির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও

আজকের আর্টিকেলে আমরা লাদাখ পর্বতশ্রেণি ও লাদাখ মালভূমির সংক্ষিপ্ত পরিচয় নিয়ে আলোচনা করবো। এই অংশটি দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে, ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ অধ্যায়ের ভারতের ভূপ্রকৃতি বিভাগে লাদাখ পর্বতশ্রেণি ও লাদাখ মালভূমি সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে।

লাদাখ পর্বতশ্রেণি ও লাদাখ মালভূমির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও

লাদাখ পর্বতশ্রেণি ও লাদাখ মালভূমির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

  • লাদাখ পর্বতশ্রেণি – কাশ্মীরে হিমাদ্রি বা হিমগিরি বা প্রধান হিমালয়ের উত্তরে প্রায় 350 কিমি দীর্ঘ যে পর্বতশ্রেণিটি আছে তার নাম লাদাখ পর্বতশ্রেণি। লাদাখ মালভূমির দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে উত্তর-পশ্চিমে বিস্তৃত এই পর্বতশ্রেণিতে অনেকগুলি 6000 মিটারেরও বেশি উঁচু ক্ষয়িষ্ণু পর্বতশৃঙ্গ দেখা যায়। হিমালয় পর্বতশ্রেণি সৃষ্টির সময় টেথিস সাগরে সঞ্চিত পলি থেকে লাদাখ পর্বতশ্রেণিটিও সৃষ্টি হয়েছিল। হিমবাহের ক্ষয়কাজের ফলে এই পর্বতশ্রেণি ভীষণভাবে ক্ষয়িত ও ব্যবচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।
  • লাদাখ মালভূমি – লাদাখ পর্বতশ্রেণির উত্তর-পূর্বে লাদাখ মালভূমি অবস্থিত। এর গড় উচ্চতা 4300 মিটারেরও বেশি। এটি ভারতের সর্বোচ্চ মালভূমি।

লাদাখ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

লাদাখের রাজধানীর নাম কি?

লাদাখের দুটি রাজধানী আছে:

লেহ: এটি লাদাখের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক রাজধানী।
কার্গিল: এটি লাদাখের মুসলিম-প্রধান অংশের রাজধানী।

২০২০ সালে, লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং উভয় শহরই তাদের নিজ নিজ জেলার প্রশাসনিক সদর দপ্তর হিসেবে কাজ করে।

লাদাখ কোন দেশে অবস্থিত?

লাদাখ ভারতের একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। ঐতিহাসিকভাবে, লাদাখ তিব্বতের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ধারণ করেছিল, এবং ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে এটি ভারত, পাকিস্তান এবং চীনের মধ্যে বিরোধের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৯ সালে, ভারত সরকার জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য ভেঙে লাদাখকে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে গঠন করে।

লাদাখ মালভূমি কি লাভা মালভূমি?

না, লাদাখ মালভূমি লাভা মালভূমি নয়।

ভারতের সর্বোচ্চ মালভূমি লাদাখ কোন পর্বত দ্বারা বেষ্টিত?

ভারতের সর্বোচ্চ মালভূমি লাদাখ বিভিন্ন পর্বতমালা দ্বারা বেষ্টিত, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

উত্তরে:

কারাকোরাম পর্বতমালা: এটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু পর্বতমালাগুলির মধ্যে একটি, যেখানে K2 পর্বত (8,611 মিটার) অবস্থিত।
লাদাখ রেঞ্জ: এটি কারাকোরাম পর্বতমালার একটি উপশ্রেণী, যেখানে Rimo Peak (7,350 মিটার) অবস্থিত।

পশ্চিমে:

নুন কুন পর্বতমালা: এটি লাদাখ এবং কাশ্মীর উপত্যকার মধ্যে একটি প্রাকৃতিক সীমান্ত তৈরি করে।

দক্ষিণে:

গ্রেট হিমালয়: এটি বিশ্বের দীর্ঘতম পর্বতমালা, যেখানে Mount Everest (8,848 মিটার) অবস্থিত।
জানস্কার পর্বতমালা: এটি গ্রেট হিমালয়ের একটি উপশ্রেণী, যেখানে Nun Kun (7,139 মিটার) অবস্থিত।

পূর্বে:

আকসাই চীন: এটি একটি বিতর্কিত অঞ্চল যা বর্তমানে চীনের দখলে রয়েছে। Trans-Himalayan পর্বতমালা এই অঞ্চলের মধ্য দিয়ে গেছে।

এই পর্বতমালাগুলি লাদাখ মালভূমিকে বৃষ্টিপাত থেকে রক্ষা করে এবং এটিকে একটি শুষ্ক মরুভূমি জলবায়ু প্রদান করে। এছাড়াও, এই পর্বতমালাগুলি লাদাখের অনন্য সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে সংরক্ষণে সাহায্য করেছে।
উল্লেখ্য যে লাদাখ মালভূমি নিজেই গড়ে 3,500 মিটারেরও বেশি উচ্চতায় অবস্থিত, যা এটিকে বিশ্বের সর্বোচ্চ মালভূমিগুলির মধ্যে একটি করে তোলে।

আরও পড়ুন – হিমালয়ের সর্বদক্ষিণের পর্বতশ্রেণিটির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও

আজকের আর্টিকেলে আমরা লাদাখ পর্বতশ্রেণি ও লাদাখ মালভূমির সংক্ষিপ্ত পরিচয় নিয়ে আলোচনা করেছি। এই আলোচনাটি দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ অধ্যায়ের ভারতের ভূপ্রকৃতি বিভাগে।

Share via:

মন্তব্য করুন