এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “মাতঙ্গিনী হাজরা বাংলা তথা ভারতের ইতিহাসে স্মরণীয় নাম কেন?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “মাতঙ্গিনী হাজরা বাংলা তথা ভারতের ইতিহাসে স্মরণীয় নাম কেন?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

মাতঙ্গিনী হাজরা বাংলা তথা ভারতের ইতিহাসে স্মরণীয় নাম কেন?
মাতঙ্গিনী হাজরা বাংলা তথা ভারতের ইতিহাসে স্মরণীর নাম
বাংলা তথা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরা এক স্মরণীয় নাম। 42 -এর ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় তাঁর যোগ্য নেতৃত্বে মেদিনীপুর জেলায় ভারত ছাড়ো আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারণ করে।
মাতঙ্গিনী হাজরার প্রথম জীবন –
1869 খ্রিস্টাব্দে মেদিনীপুর জেলার এক অতি দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মাতঙ্গিনী হাজরা, অল্প বয়সেই বিবাহের পর মাত্র 18 বছর বয়সে অপুত্রক অবস্থায় তিনি বিধবা হন।
মাতঙ্গিনী হাজরার সংগ্রাম –
1905 খ্রিস্টাব্দের বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলন এবং পরবর্তীকালে 1930 এর দশকে আইন অমান্য আন্দোলনে সক্রিয় যোগদান করেন এবং গ্রেপ্তার হন, মুক্তি পাওয়ার পর তিনি জাতীয় কংগ্রেসে যোগদান করেন।
মাতঙ্গিনী হাজরার 42 -এর আন্দোলন –
1942 খ্রিস্টাব্দের 29 সেপ্টেম্বর মাতঙ্গিনী হাজরা মেদিনীপুরের তমলুকে পুলিশ থানা অভিযানের নেতৃত্ব দেন এবং পুলিশের 144 ধারা উপেক্ষা করে তাঁর নেতৃত্বে মিছিল চলতে থাকলে পুলিশ তাঁর ওপর গুলি চালায় এবং তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
মাতঙ্গিনী হাজরার মন্তব্য –
দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য একজন গ্রাম্য বিধবার এই আত্মত্যাগ তাঁকে ইতিহাসে স্মরণীয় করে রেখেছে। তিনি ‘গান্ধিবুড়ি’ নামে ইতিহাসে সমধিক পরিচিত।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
মাতঙ্গিনী হাজরা কে ছিলেন?
মাতঙ্গিনী হাজরা ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক বিশিষ্ট বিপ্লবী নেত্রী, যিনি 1942 সালের ভারত ছাড়ো আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং ব্রিটিশ পুলিশের গুলিতে শহিদ হন।
মাতঙ্গিনী হাজরার জন্ম ও প্রাথমিক জীবন কেমন ছিল?
তিনি 1869 সালে মেদিনীপুর জেলার (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ) এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। অল্প বয়সে বিয়ে হয়, কিন্তু 18 বছর বয়সে তিনি বিধবা হন।
মাতঙ্গিনী হাজরা কীভাবে স্বাধীনতা আন্দোলনে যুক্ত হন?
1905 সালে বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। পরে 1930 -এর দশকে আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দিয়ে কারাবরণ করেন এবং কংগ্রেসের সদস্য হন।
1942 সালের ভারত ছাড়ো আন্দোলনে মাতঙ্গিনী হাজরার ভূমিকা কী ছিল?
1942 সালের 29 সেপ্টেম্বর, মাতঙ্গিনী হাজরা মেদিনীপুরের তমলুক থানা দখলের জন্য এক বিশাল মিছিলের নেতৃত্ব দেন। পুলিশের 144 ধারা উপেক্ষা করে মিছিল এগিয়ে গেলে পুলিশ গুলি চালায় এবং তিনি শহিদ হন।
মাতঙ্গিনী হাজরা কেন ‘গান্ধিবুড়ি’ নামে পরিচিত?
তিনি মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত ছিলেন এবং স্থানীয় মানুষদের কাছে ‘গান্ধিবুড়ি’ (গান্ধীজির আদর্শে চলা বৃদ্ধা নারী) হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।
মাতঙ্গিনী হাজরার আত্মত্যাগের ঐতিহাসিক গুরুত্ব কী?
একজন সাধারণ গ্রাম্য বিধবা নারী হিসেবে দেশের জন্য আত্মবলিদানের ঘটনা তাঁকে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম করে তুলেছে।
মাতঙ্গিনী হাজরাকে কীভাবে স্মরণ করা হয়?
পশ্চিমবঙ্গ ও ভারতের বিভিন্ন স্থানে তাঁর নামে স্মৃতিস্তম্ভ, স্কুল ও রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে। স্বাধীনতা দিবস ও শহিদ দিবসে তাঁর স্মৃতিকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়।
মাতঙ্গিনী হাজরার মৃত্যু কীভাবে ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনকে প্রভাবিত করেছিল?
তাঁর আত্মত্যাগ মেদিনীপুর ও বাংলায় ভারত ছাড়ো আন্দোলনকে আরও তীব্র করে তোলে এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের সংগ্রামী চেতনাকে শক্তিশালী করে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “মাতঙ্গিনী হাজরা বাংলা তথা ভারতের ইতিহাসে স্মরণীয় নাম কেন?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “মাতঙ্গিনী হাজরা বাংলা তথা ভারতের ইতিহাসে স্মরণীয় নাম কেন?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন