এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

নিরক্ষরতা দূরীকরণে ছাত্রসমাজের কর্তব্য – প্রবন্ধ রচনা

এই ব্লগ পোস্টে আমরা নিরক্ষরতা দূরীকরণে ছাত্রসমাজের কর্তব্য নিয়ে আলোচনা করবো। আমরা জানবো কীভাবে ছাত্ররা নিরক্ষরতা দূরীকরণে অবদান রাখতে পারে এবং এই লক্ষ্য অর্জনে তাদের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। নিরক্ষরতা দূরীকরণে ছাত্রসমাজের কর্তব্য – প্রবন্ধ রচনা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই রচনাটি বারবার পরীক্ষায় দেখা যায়। তাই ছাত্রদের জন্য এই রচনাটি জেনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি এই রচনাটি একবার মুখস্ত করে রাখেন, তাহলে ক্লাস ৬ থেকে ১২ পর্যন্ত যেকোনো পরীক্ষায় এই প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারবেন।

নিরক্ষরতা দূরীকরণে ছাত্রসমাজের কর্তব্য – প্রবন্ধ রচনা

নিরক্ষরতা দূরীকরণে ছাত্রসমাজের কর্তব্য – প্রবন্ধ রচনা

যদি তুমি বৃষ্টি আনার মন্ত্র ভুলে যাও
তোমার স্বদেশ তাহলে মরুভূমি।

– বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

ভূমিকা –

সভ্যতার অভাবনীয় উন্নতির আলোকিত দৃশ্যের আড়ালে যে-কটি সামাজিক ব্যাধি সভ্যতাকে পিছনের দিকে টেনে নিয়ে যায়, নিরক্ষরতা তাদের মধ্যে অন্যতম। দারিদ্র্য, অন্ধবিশ্বাস আর সামাজিক অনুন্নয়ন নিরক্ষরতার বড়ো কারণ। নিরক্ষরতাসৃষ্ট চেতনার অন্ধতায় মাথা খুঁড়ে মরে ব্যক্তির বিকাশ কিংবা দেশের উন্নয়ন।

নিরক্ষরতার তত্ত্বতালাশ –

২০১১-র জনগণনায় ভারতের জনসংখ্যা হয়েছে ১২৫ কোটি। যা এক দশক আগের জনগণনার তুলনায় প্রায় ২৫ কোটি বেশি। কিন্তু দেশের পক্ষে অত্যন্ত আশার কথা হল জনসংখ্যার এই বৃদ্ধি সত্ত্বেও নিরক্ষর মানুষের সংখ্যা উল্লেযোগ্যভাবে ৩০ কোটি ৪১ লক্ষ থেকে কমে হয়েছে ২৭ কোটি ২৯ লক্ষ। ২০০১ খ্রিস্টাব্দের তুলনায় ২০১১ খ্রিস্টাব্দে সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি পেয়েছে ৯.২১ শতাংশ। এর পাশাপাশি দেশের ক্ষেত্রে আরও ইতিবাচক বিষয় হল, সাক্ষরতার হার বৃদ্ধিতে ৪৯.১০ শতাংশ হল মেয়েদের উন্নতি, ৩১.৯৮ শতাংশ পুরুষদের। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দের ১৮.৩৩ শতাংশ থেকে ২০১১ খ্রিস্টাব্দে সাক্ষরতার হারের ৭৪.৪ শতাংশে পৌঁছে যাওয়া নিশ্চিতভাবেই নিরক্ষরতার অভিশাপমুক্তির ক্ষেত্রে দেশের সদর্থক পদক্ষেপ বলেই চিহ্নিত করা যায়।

নিরক্ষরতা দূরীকরণ কর্মসূচি –

রবীন্দ্রনাথ লেখাপড়া শেখাকেই জনসাধারণের মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ তৈরির এবং নিজেদের শক্তিকে উপলব্ধির একমাত্র রাস্তা বলে চিহ্নিত করেছেন। তবে সাক্ষরতা কর্মসূচিকে সফল করার জন্য দারিদ্র্যদূরীকরণ কর্মসূচিকে সফল করে তুলতে হবে। শিক্ষার সুযোগকে সহজলভ্য করতে হবে। সরকারি উদ্যোগে বইপত্র এবং শিক্ষা সহায়ক উপকরণ পৌঁছে দিতে হবে দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী ছাত্রছাত্রীদের কাছে। বয়স্কশিক্ষা এবং স্ত্রীশিক্ষাকেও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। সরকারি পর্যায়ে সাক্ষরতা অভিযান এবং পরবর্তীতে সর্বশিক্ষা অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। নিরক্ষরের সংখ্যা হ্রাস এইসব কর্মসূচির সাফল্যকে প্রমাণ করে। গরিব ছাত্রদের বিদ্যালয়মুখী করার জন্য ‘মিড-ডে মিল’-এর ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু এর পরেও আজও এদেশে জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশেরও বেশি মানুষ নিরক্ষর। প্রত্যেক শিক্ষিত মানুষকেই তাই সক্রিয় হতে হবে দেশকে এই সামাজিক অভিশাপ থেকে মুক্ত করার জন্য।

ছাত্রসমাজের দায়িত্ব –

ছাত্রসমাজ দেশের শিক্ষিত মানুষের অগ্রবর্তী অংশ। তাই সাক্ষরতা নামক সামাজিক কর্মসূচিতে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। পড়াশোনার পরে ছাত্ররা এই কর্মসূচির সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করতে পারে। প্রত্যেক ছাত্র এক জন নিরক্ষর মানুষকে সাক্ষর করে তুলতে পারে। আবার কয়েক জন মিলে নিজেদের এলাকায় সান্ধ্য বিদ্যালয় বা সাক্ষরতা কেন্দ্র গড়ে তুলতে পারে। সরকারি উদ্যোগের সঙ্গেও নিজেকে যুক্ত করতে পারে। ছাত্ররা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে শিক্ষা বিষয়ক সচেতনতা তৈরিতে। মানুষকে বিদ্যালয়মুখী করে তোলায় তাদের উদ্যোগ নিরক্ষরতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করবে।

উপসংহার –

শিক্ষা আনে চেতনা। এই চেতনা মানুষকে কুসংস্কারের অন্ধকার থেকে মুক্ত করতে পারে, সামাজিক শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ভাষা জোগায়। তাই দেশকে যথার্থ প্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সাক্ষরতা আন্দোলনের সার্থকতা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আর এই আন্দোলনে ছাত্রসমাজকে এগিয়ে আসতে হবে নেতার ভূমিকায়।

আরও পড়ুন – আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস – প্রবন্ধ রচনা

এই ব্লগ পোস্টে, আমরা নিরক্ষরতা দূরীকরণে ছাত্রসমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরেছি। আমরা দেখেছি যে কীভাবে ছাত্ররা বিভিন্নভাবে অবদান রাখতে পারে, যেমন স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষক হিসেবে কাজ করা, সচেতনতা বৃদ্ধি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা এবং অর্থ সংগ্রহ করা। আমরা আরও জোর দিয়েছি যে নিরক্ষরতা দূরীকরণে ছাত্রদের ভূমিকা কেবলমাত্র শিক্ষাগতই নয়, বরং সামাজিক দায়িত্বও বহন করে।

এই লক্ষ্য অর্জনে ছাত্রদের সক্রিয় অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। তাদের উদ্যোগ, সৃজনশীলতা এবং উৎসর্গের মাধ্যমে, তারা একটি পার্থক্য তৈরি করতে পারে এবং সমাজের সকলের জন্য একটি আরও শিক্ষিত ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে। এই রচনাটি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ছাত্রদের জন্য এই বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা এবং পরীক্ষায় ভালো করার জন্য প্রস্তুত থাকা গুরুত্বপূর্ণ। তবে, কেবল মুখস্ত করে রাখা যথেষ্ট নয়। ছাত্রদের নিরক্ষরতার সমস্যা সম্পর্কে একটি গভীর বোঝাপড়া গড়ে তোলা উচিত এবং এই সমস্যা সমাধানে কীভাবে তারা অবদান রাখতে পারে তা বিবেচনা করা উচিত।

Share via:

মন্তব্য করুন