এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “স্নায়ু কী? স্নায়ুর অন্তর্গঠন সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞানের প্রথম অধ্যায় “জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়” -এর “প্রাণীদের সাড়াপ্রদান ও ভৌত সমন্বয়-স্নায়ুতন্ত্র” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

স্নায়ু কী? স্নায়ুর অন্তর্গঠন সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।
রক্তবাহ সমন্বিত এবং যোগকলার আবরণ দ্বারা আবৃত স্নায়ুতন্তু বা স্নায়ুতন্তুগুচ্ছকে স্নায়ু বা নার্ভ বলে।
স্নায়ুর অন্তর্গঠন –
সাধারণত খালি চোখে যে স্নায়ু দেখি তা অসংখ্য সূক্ষ্ম, দীর্ঘ আকৃতির স্নায়ুতন্তুগুচ্ছ নিয়ে গঠিত। স্নায়ুতে যোগকলার তিনটি আবরণী থাকে। সেগুলি হল –
- এন্ডোনিউরিয়াম – স্নায়ুকোশের অ্যাক্সনকে ঘিরে সোয়ান কোশ থেকে ক্ষরিত পদার্থ নির্মিত অতিরিক্ত দুটি আবরণ নিউরিলেম্মা ও মেডুলারি সিদ্ (যে সব নিউরোনে থাকে) -এর বাইরে এন্ডোনিউরিয়াম নামক যোগকলার আবরণ ঘিরে থাকলে তাকে স্নায়ুতন্তু বলে। স্নায়ুতন্তুর প্রতিটি গুচ্ছকে ফিউনিকুলাস বলে। একথায় বলা যেতে পারে, স্নায়ুতন্তুকে ঘিরে থাকা পাতলা যোগকলার আবরণী হল এন্ডোনিউরিয়াম।
- পেরিনিউরিয়াম – অনেকগুলি স্নায়ুতন্তুগুচ্ছকে ঘিরে যে সংযোজক কলার আবরণ থাকে, তাকে পেরিনিউরিয়াম বলে।
- এপিনিউরিয়াম – পেরিনিউরিয়াম আবরণযুক্ত স্নায়ুতন্তুগুচ্ছের বাইরে এপিনিউরিয়াম যোগকলার একটি আবরণ থাকে। এপিনিউরিয়াম যোগকলা দিয়ে ঘেরা স্নায়ুতন্তুরগুচ্ছই হল স্নায়ু বা নার্ভ।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
স্নায়ু (Nerve) কাকে বলে?
একাধিক স্নায়ুতন্তু (Nerve fibers) বা স্নায়ুতন্তুর গুচ্ছ রক্তবাহ এবং সংযোজক কলার (Connective tissue) আবরণ দ্বারা আবৃত হয়ে যে কাঠামো গঠন করে, তাকে স্নায়ু বা নার্ভ বলে। এটি শরীরের বিভিন্ন অংশে স্নায়ুসংকেত পরিবহনের প্রধান পথ।
স্নায়ু ও স্নায়ুতন্তুর মধ্যে পার্থক্য কী?
একটি স্নায়ুতন্তু হল একটি মাত্র স্নায়ুকোষের (নিউরোন) প্রলম্বিত অ্যাক্সন। অন্যদিকে, একটি স্নায়ু হল বহু সংখ্যক স্নায়ুতন্তুর একটি গুচ্ছ যা কলার তিনটি স্তর (এন্ডোনিউরিয়াম, পেরিনিউরিয়াম, এপিনিউরিয়াম) দ্বারা আবৃত থাকে।
স্নায়ুর গঠনে সংযোজক কলার কয়টি আবরণ থাকে? নামগুলো কী কী?
স্নায়ুর গঠনে সংযোজক কলার তিনটি আবরণ থাকে। এগুলো হলো –
1. এন্ডোনিউরিয়াম – প্রতিটি স্বতন্ত্র স্নায়ুতন্তুকে ঘিরে থাকা পাতলা আবরণ।
2. পেরিনিউরিয়াম – একাধিক স্নায়ুতন্তুর গুচ্ছ (ফিউনিকুলাস) কে ঘিরে থাকা শক্ত আবরণ।
3. এপিনিউরিয়াম – পেরিনিউরিয়াম দ্বারা আবৃত সকল গুচ্ছকে একত্রে মোটা একটি আবরণ দ্বারা ঢেকে একটি সম্পূর্ণ স্নায়ু গঠন করে। এই বহিঃস্থ আবরণই এপিনিউরিয়াম।
স্নায়ুর অভ্যন্তরীণ গঠনের একক কী?
স্নায়ুর ক্ষুদ্রতম একক হল স্নায়ুতন্তু (নিউরন/অ্যাক্সন)। এই তন্তুগুলো গুচ্ছবদ্ধ হয়ে ফিউনিকুলাস গঠন করে এবং শেষে আবরণীসহ মিলিত হয়ে সম্পূর্ণ স্নায়ু তৈরি করে।
রিনিউরিয়াম ও এপিনিউরিয়ামের কাজ কী?
রিনিউরিয়াম ও এপিনিউরিয়ামের কাজ –
1. পেরিনিউরিয়াম – এটি স্নায়ুতন্তুর গুচ্ছগুলোকে পৃথক করে রক্ষা করে এবং স্নায়ুর অভ্যন্তরে একটি প্রোটেক্টেড কম্পার্টমেন্ট তৈরি করে।
2. এপিনিউরিয়াম – এটি পুরো স্নায়ুটিকে শক্তিশালী, স্থিতিস্থাপক ও যান্ত্রিক আঘাত থেকে রক্ষা করে। এটি রক্তনালীও ধারণ করে যা স্নায়ুকে পুষ্টি সরবরাহ করে।
স্নায়ুর প্রধান কাজ কী?
স্নায়ুর প্রধান কাজ হল বৈদ্যুতিক সংকেত (স্নায়ুপ্রবাহ) বহন করে মস্তিষ্ক/সুষুম্নাকাণ্ড থেকে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ, পেশী বা গ্রন্থিতে নির্দেশ প্রেরণ করা এবং বিপরীতক্রমে সংবেদনাসমূহ কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে ফেরত নিয়ে আসা।
ফিউনিকুলাস কাকে বলে?
স্নায়ুর অভ্যন্তরে এন্ডোনিউরিয়াম দ্বারা আবৃত স্নায়ুতন্তুগুলোর একটি ছোট গুচ্ছকে ফিউনিকুলাস বলে। একাধিক ফিউনিকুলাসকে পেরিনিউরিয়াম ঘিরে রাখে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “স্নায়ু কী? স্নায়ুর অন্তর্গঠন সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞানের প্রথম অধ্যায় “জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়” -এর “প্রাণীদের সাড়াপ্রদান ও ভৌত সমন্বয়-স্নায়ুতন্ত্র” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।





মন্তব্য করুন