এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “তামা ক্ষয়প্রাপ্ত হয় কীভাবে?” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

তামা ক্ষয়প্রাপ্ত হয় কীভাবে?
তামার ক্ষয় – সাধারণ উষ্নতায় আর্দ্র বায়ুতে তামা বা তামার অধিকাংশ সংকর ধাতু রাখলে তামার উপর ধীরে ধীরে অক্সাইডের একটি সূক্ষ্ম আস্তরণ পড়ে। অনেকদিন ধরে আর্দ্র বায়ুর মধ্যে পড়ে থাকলে অক্সাইডের ওই আস্তরণের রং সবুজ হয়ে যায়। এর কারণ হল কপারের গায়ে বায়ুর O₂, CO₂ এবং জলীয় বাষ্পের ক্রিয়ায় সবুজ বর্ণের বেসিক কপার কার্বনেটের [CuCO₃, Cu(OH)₂] আস্তরণ পড়ে। বায়ুতে SO₂ উপস্থিত থাকলে তামার উপর ক্ষারকীয় কপার সালফেটের [CuSO₄, 3Cu(OH)₂] আস্তরণ পড়ে। ফলে তামা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
তামার উপর সবুজ রঙের স্তর কী এবং কেন এটি তৈরি হয়?
তামার উপর যে সবুজ রঙের স্তর দেখা যায়, তা হলো বেসিক কপার কার্বনেট [CuCO₃.Cu(OH)₂]। আর্দ্র বায়ুর সংস্পর্শে এলে বাতাসের অক্সিজেন (O₂), কার্বন-ডাই-অক্সাইড (CO₂) এবং জলীয় বাষ্পের সাথে তামার রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে এই যৌগটি তৈরি হয়, যা পাতলা সবুজ আস্তরণের মতো দেখায়।
তামার সবুজ হওয়াকে কি ক্ষয় বলা যায়?
হ্যাঁ, এটি এক ধরনের ক্ষয়। যদিও এই সবুজ স্তরটি (যাকে প্যাটিনাও বলে) ভেতরের তামাকে আরও ক্ষয় থেকে রক্ষা করে, তবুও এটি তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়াটি তামার মূল ধাতুর সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটিয়ে নতুন যৌগে পরিণত হওয়ার কারণে হয়, যা ক্ষয়েরই একটি রূপ।
তামার ক্ষয়ের জন্য দায়ী প্রধান রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলো কী কী?
তামার ক্ষয়ের জন্য দায়ী প্রধান বিক্রিয়া দুটি –
1. বায়ু ও জলীয় বাষ্পের সাথে – 2Cu + H₂O + CO₂ + O₂ → CuCO₃.Cu(OH)₂ (বেসিক কপার কার্বনেট/সবুজ রং)
2. বায়ুতে সালফার ডাই-অক্সাইড (SO₂) থাকলে – এটি বিক্রিয়া করে ক্ষারকীয় কপার সালফেট [CuSO₄.3Cu(OH)₂] তৈরি করে, যা ক্ষয়ের আরেকটি রূপ।
তামার ক্ষয় রোধ করা যায় কীভাবে?
হ্যাঁ, তামার ক্ষয় রোধ করা যায়। প্রধান উপায় হলো তামাকে আর্দ্র বায়ু ও দূষণকারী গ্যাস (যেমন – CO₂, SO₂) এর সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখা। এটি টিন বা অন্য কোনও প্রতিরক্ষামূলক ধাতুর প্রলেপ দিয়ে, বা স্বচ্ছ বার্নিশ বা ল্যাকারের প্রলেপ দিয়ে করা যেতে পারে, যা বায়ু ও জলীয় বাষ্পের সাথে তামার সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
বায়ু দূষণ তামার ক্ষয়কে কীভাবে প্রভাবিত করে?
বায়ু দূষণ তামার ক্ষয়ের গতি বাড়িয়ে দেয়। যদি বাতাসে সালফার ডাই-অক্সাইড (SO₂) গ্যাসের মতো অম্লীয় দূষক উপস্থিত থাকে, তবে তা তামার সাথে বিক্রিয়া করে কপার সালফেট তৈরি করে, যা প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হওয়া বেসিক কপার কার্বনেটের চেয়ে ভিন্ন এবং ক্ষয় প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “তামা ক্ষয়প্রাপ্ত হয় কীভাবে?” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।





মন্তব্য করুন