তেজস্ক্রিয় দূষণ কাকে বলে? তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে মানবদেহে কী ধরনের ক্ষতি হয়?

Souvick

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “তেজস্ক্রিয় দূষণ কাকে বলে? তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে মানবদেহে কী ধরনের ক্ষতি হয়?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “তেজস্ক্রিয় দূষণ কাকে বলে? তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে মানবদেহে কী ধরনের ক্ষতি হয়?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

তেজস্ক্রিয় দূষণ কাকে বলে? তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে মানবদেহে কী ধরনের ক্ষতি হয়?

তেজস্ক্রিয় দূষণ কাকে বলে?

তেজস্ক্রিয় দূষণ – পরমাণু চুল্লি, চিকিৎসাক্ষেত্রে এবং ল্যাবরেটরিতে ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় মৌলের আইসোটোপগুলি থেকে নির্গত তেজস্ক্রিয় কণা এবং পরমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের ফলে ওর ভস্মগুলি পরিবেশে ছড়িয়ে যে দূষণ ঘটায় তাকে তেজস্ক্রিয় দূষণ বলে।

তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে মানবদেহে কী ধরনের ক্ষতি হয়?

তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ফলে মানবদেহে সাধারণত দুই ধরনের ক্ষতি হয় –

  • প্যাথোলজিক্যাল – প্যাথোলজিক্যাল ক্ষতির ক্ষেত্রে দেহের যে অংশে বিকিরণ পড়ে সেই অংশের কোশগুলি ধ্বংস হয়। ফলে লিউকোমিয়া জাতীয় রোগ বা ক্যানসার হতে পারে।
  • জেনেটিক – জেনেটিক ক্ষতি আরও মারাত্মক। এতে জনন কোশের জিনগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে এই রোগ বংশানুক্রমিকভাবে চলতে থাকে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

তেজস্ক্রিয় দূষণ কী?

তেজস্ক্রিয় দূষণ হল পরিবেশে তেজস্ক্রিয় পদার্থের (রেডিওআইসোটোপ) অবাঞ্ছিত উপস্থিতি। এটি প্রধানত পারমাণবিক চুল্লি, পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ, চিকিৎসা বিজ্ঞান ও গবেষণাগারে ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় পদার্থ থেকে নির্গত ক্ষতিকর কণা দ্বারা ঘটে থাকে, যা বায়ু, মাটি ও পানি দূষিত করে।

তেজস্ক্রিয় দূষণের প্রধান উৎসগুলো কী কী?

তেজস্ক্রিয় দূষণের প্রধান উৎসগুলো হল –
1. পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুর্ঘটনা (যেমন – চেরনোবিল, ফুকুশিমা)।
2. পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা ও বিস্ফোরণ।
3. চিকিৎসাক্ষেত্রে রেডিওথেরাপি ও ইমেজিংয়ে ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় পদার্থ।
4. গবেষণাগারে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
5. খননকৃত ইউরেনিয়াম ও থোরিয়ামের অবশিষ্টাংশ।

তেজস্ক্রিয় বিকিরণ মানবদেহে কী ধরনের ক্ষতি করে?

তেজস্ক্রিয় বিকিরণ মানবদেহে মূলত দুই ধরনের ক্ষতি করে –
1. প্যাথোলজিক্যাল ক্ষতি – বিকিরণের সংস্পর্শে আসা দেহের নির্দিষ্ট অংশের কোষ ধ্বংস হয়ে যায়। এর ফলে লিউকেমিয়া (রক্তের ক্যান্সার), থাইরয়েড ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার ইত্যাদি রোগ হতে পারে।
2. জেনেটিক ক্ষতি – এটি অত্যন্ত মারাত্মক। এতে মানুষের জনন কোষ (শুক্রাণু ও ডিম্বাণু)-এর জিন বা DNA ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ক্ষতি বংশানুক্রমিকভাবে পরবর্তী প্রজন্মে সঞ্চারিত হতে পারে এবং জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে।

তেজস্ক্রিয় দূষণ পরিবেশে কীভাবে ছড়ায়?

তেজস্ক্রিয় পদার্থ বাতাসের মাধ্যমে বায়ুতে, বৃষ্টির পানির সাথে মাটিতে এবং নদী-নালা, ভূগর্ভস্থ পানি বা সমুদ্রের পানিতে মিশে দূষণ ছড়াতে পারে। দূষিত খাদ্য বা পানি গ্রহণের মাধ্যমেও এটি মানবদেহে প্রবেশ করতে পারে।

তেজস্ক্রিয় দূষণ থেকে কীভাবে নিজেকে রক্ষা করা যায়?

কিছু পদক্ষেপের মাধ্যমে ঝুঁকি কমানো সম্ভব –
1. দূষিত এলাকা থেকে দূরে সরে যাওয়া (দূরত্ব বজায় রাখা)।
2. আশ্রয় নেওয়া (কংক্রিটের ভবনের ভিতরে থাকা)।
3. দূষণের সময় মুখোশ পরা বা নাক-মুখ কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা।
4. সম্ভাব্য দূষিত খাবার ও পানি এড়িয়ে চলা।
5. কর্তৃপক্ষের দেওয়া নির্দেশিকা মেনে চলা।

তেজস্ক্রিয় দূষণের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কী?

তেজস্ক্রিয় দূষণের প্রভাব বহু বছর, এমনকি কয়েক দশক ধরে থাকতে পারে। এটি পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে, মাটি ও পানিকে দীর্ঘ সময়ের জন্য বাসযোগ্যতার অনুপযুক্ত করে তোলে এবং ক্যান্সারের হার বাড়িয়ে দেয়। জেনেটিক ক্ষতির প্রভাব বহু প্রজন্ম ধরে দেখা যেতে পারে।

তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা মাপার একক কী?

তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা সাধারণত সিভার্ট (Sv) এককে মাপা হয়। এটি বিকিরণের জৈবিক প্রভাব নির্দেশ করে। স্বল্প মাত্রাকে প্রায়ই মিলিসিভার্ট (mSv) এ প্রকাশ করা হয়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “তেজস্ক্রিয় দূষণ কাকে বলে? তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে মানবদেহে কী ধরনের ক্ষতি হয়?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “তেজস্ক্রিয় দূষণ কাকে বলে? তেজস্ক্রিয় বিকিরণ থেকে মানবদেহে কী ধরনের ক্ষতি হয়?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসকে শনাক্ত করবে কীভাবে?

হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসকে শনাক্ত করবে কীভাবে?

দেখাও যে H₂S গ্যাস অম্লধর্মী। অথবা, দেখাও যে H₂S দ্বি ক্ষারীয় অ্যাসিড?

দেখাও যে H₂S গ্যাস অম্লধর্মী। অথবা, দেখাও যে H₂S দ্বি ক্ষারীয় অ্যাসিড?

হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসকে শুষ্ক করতে গাঢ় H₂SO₄ বা অনার্দ্র ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড ব্যবহার করা হয় না কেন?

হাইড্রোজেন সালফাইড শুষ্ক করতে কেন গাঢ় H₂SO₄ বা অনার্দ্র CaCl₂ ব্যবহার করা হয় না?

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসকে শনাক্ত করবে কীভাবে?

দেখাও যে H₂S গ্যাস অম্লধর্মী। অথবা, দেখাও যে H₂S দ্বি ক্ষারীয় অ্যাসিড?

হাইড্রোজেন সালফাইড শুষ্ক করতে কেন গাঢ় H₂SO₄ বা অনার্দ্র CaCl₂ ব্যবহার করা হয় না?

হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস প্রস্তুতিতে গাঢ় HNO₃ ব্যবহার করা হয় না কেন?

হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস প্রস্তুতিতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ব্যবহার করা হয় না কেন?