এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “টেস্টোস্টেরন হরমোনকে ‘অ্যান্ড্রোজেন হরমোন’ বলা হয় কেন? টেস্টোস্টেরনের প্রভাবে পুরুষদেহে প্রকাশিত গৌণ যৌন লক্ষণগুলি উল্লেখ করো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞানের প্রথম অধ্যায় “জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়” -এর “প্রাণীদের সাড়াপ্রদান ও রাসায়নিক সমন্বয়-হরমোন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

টেস্টোস্টেরন হরমোনকে ‘অ্যান্ড্রোজেন হরমোন’ বলা হয় কেন?
অ্যান্ড্রোজেন (Androgen) শব্দটির উৎপত্তি গ্রিক শব্দ ‘Andro’ থেকে যার অর্থ হল ‘পুরুষোচিত লক্ষণ’। টেস্টোস্টেরন হরমোনটি পুরুষদেহের শুক্রাশয়ের লেডিগের আন্তরকোশ থেকে ক্ষরিত হয়ে পুরুষদের গৌণ যৌন লক্ষণের বিকাশ ঘটায়, স্পার্মাটোজেনেসিস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শুক্রাণু উৎপাদন এবং শুক্রাণুর আয়ু বাড়াতে সাহায্য করে। পুরুষদেহের যাবতীয় যৌন আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে বলে টেস্টোস্টেরন হরমোনকে ‘অ্যান্ড্রোজেন হরমোন’ বলে।
টেস্টোস্টেরনের প্রভাবে পুরুষদেহে প্রকাশিত গৌণ যৌন লক্ষণগুলি উল্লেখ করো।
টেস্টোস্টেরনের প্রভাবে পুরুষদেহে প্রকাশিত গৌণ যৌন লক্ষণগুলি হল –
- ভারী কণ্ঠস্বর,
- গোঁফ ও দাড়ি গজানো,
- পেশিবহুল দেহ,
- শ্রোণিদেশে, বক্ষদেশে ও বাহুমূলে লোমের আবির্ভাব,
- মুখে ব্রণ,
- ঘর্মক্ষরণ বেড়ে যাওয়া।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
টেস্টোস্টেরন শুধু পুরুষদের দেহেই তৈরি হয় কি?
না, টেস্টোস্টেরন পুরুষদের দেহে প্রধানত শুক্রাশয়ে তৈরি হলেও নারীদের দেহেও ডিম্বাশয় ও অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি থেকে অল্প পরিমাণে তৈরি হয়। নারীদেহে এটি হাড় ও পেশির স্বাস্থ্য, মেজাজ এবং লিবিডো (যৌনেচ্ছা) নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে গলে কী সমস্যা হয়?
পুরুষদের ক্ষেত্রে নিম্ন টেস্টোস্টেরনের লক্ষণের মধ্যে থাকতে পারে –
1. ক্লান্তি ও শক্তিহীনতা,
2. পেশির ভর ও শক্তি কমে যাওয়া,
3. মেদ বাড়া,
4. যৌন ইচ্ছা (লিবিডো) হ্রাস,
5. মনমরা ভাব ও অবসাদ,
6. স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ কমে যাওয়া।
মহিলাদের দেহে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বেশি হলে কী হয়?
নারীদেহে টেস্টোস্টেরনের আধিক্য দেখা দিলে নিম্নলিখিত লক্ষণ দেখা দেয় –
1. মুখে ও শরীরে অতিরিক্ত লোম গজানো (হিরসুটিজম),
2. মুখে ব্রণ,
3. চুল পড়া (পুরুষত্বহীন টাক),
4. স্বর ভারী হওয়া,
5. অনিয়মিত ঋতুস্রাব।
টেস্টোস্টেরন হরমোনের প্রধান কাজগুলো কী কী?
পুরুষে – গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্যের বিকাশ (কণ্ঠস্বর ভারী, দাড়ি গজানো, পেশি গঠন), শুক্রাণু উৎপাদন, যৌন ইচ্ছা ও আচরণ নিয়ন্ত্রণ, হাড় ও পেশির স্বাস্থ্য রক্ষা।
নারীতে – লিবিডো, হাড়ের ঘনত্ব, পেশির শক্তি ও মেজাজ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
টেস্টোস্টেরন হরমোন থেরাপি (TRT) কি নিরাপদ?
চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে এবং সঠিক ডোজে নিলে এটি নিরাপদ হতে পারে। তবে এর সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে রক্তের ঘনত্ব বেড়ে যাওয়া (পলিসাইথেমিয়া), প্রস্টেট সমস্যা, হৃদরোগের ঝুঁকি ইত্যাদি। তাই নিয়মিত মনিটরিং জরুরি।
টেস্টোস্টেরন হরমোনের উৎপাদনে কোন গ্রন্থিগুলো জড়িত?
প্রধান উৎস (পুরুষ) – শুক্রাশয়ের লেডিগ কোষ।
অন্যান্য উৎস – অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি (পুরুষ ও নারী উভয়ের), নারীদের ডিম্বাশয়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “টেস্টোস্টেরন হরমোনকে ‘অ্যান্ড্রোজেন হরমোন’ বলা হয় কেন? টেস্টোস্টেরনের প্রভাবে পুরুষদেহে প্রকাশিত গৌণ যৌন লক্ষণগুলি উল্লেখ করো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞানের প্রথম অধ্যায় “জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়” -এর “প্রাণীদের সাড়াপ্রদান ও রাসায়নিক সমন্বয়-হরমোন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।





মন্তব্য করুন