এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “1857 খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের পর/মহারানির ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার কীভাবে দেশীয় রাজাদের ক্ষোভকে প্রশমিত করতে চেয়েছিল? মহারানির ঘোষণাপত্রকে ‘রাজনৈতিক ধাপ্পাবাজি/’প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অধ্যায়’ বলা হয়েছে কেন?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “1857 খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের পর/মহারানির ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার কীভাবে দেশীয় রাজাদের ক্ষোভকে প্রশমিত করতে চেয়েছিল? মহারানির ঘোষণাপত্রকে ‘রাজনৈতিক ধাপ্পাবাজি/’প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অধ্যায়’ বলা হয়েছে কেন?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের চতুর্থ অধ্যায় “সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

1857 খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের পর/মহারানির ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার কীভাবে দেশীয় রাজাদের ক্ষোভকে প্রশমিত করতে চেয়েছিল?
1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ জনিত উত্তাল পরিস্থিতির পর ব্রিটিশ সরকার 1858 খ্রিস্টাব্দে ঘোষিত মহারানির ঘোষণা পত্রের মাধ্যমে দেশীয় রাজাদের সঞ্চিত ক্ষোভকে প্রশমিত করতে চেয়েছিল। বলা হয় যে, দেশীয় রাজারা দত্তক পুত্র গ্রহণের অধিকার ফিরে পাবেন; তাদের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পূর্বতন সকল চুক্তি ও সন্ধির শর্তাদি যথাযথভাবে মেনে চলা হবে; দেশীয় রাজাদের অধিকার, সম্মান, মর্যাদা ও রাজ্যসীমা অক্ষুণ্ণ থাকবে প্রভৃতি।
মহারানির ঘোষণাপত্রকে ‘রাজনৈতিক ধাপ্পাবাজি/প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অধ্যায়’ বলা হয়েছে কেন?
সাধারন ভারতবাসীর কাছে মহারানির ঘোষণাপত্র আসলে ছিল গালভরা প্রতিশ্রুতির সংকলন মাত্র। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য-প্রণোদিত এই ঘোষণায় যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তার প্রায় কোনোটিই ভবিষ্যতে রক্ষিত হয়নি। ভারতবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য ন্যায় বিচার ও প্রতিনিধিত্ব মূলক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের কোনো প্রচেষ্টা এতে ছিল না। বাস্তবিকই শাসকের নাম ফলকের পরিবর্তন ব্যতীত শাসনের চরিত্রগত কোনোরূপ পরিবর্তন সাধিত হয়নি। তাই মহারানির ঘোষণাপত্রকে ‘রাজনৈতিক ধাপ্পাবাজি’/’প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অধ্যায়’ বলা হয়েছে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
মহারানির ঘোষণাপত্রে দেশীয় রাজাদের কী কী সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল?
মহারানির ঘোষণাপত্রে দেশীয় রাজাদের সুবিধা –
1. দত্তক পুত্র গ্রহণের অধিকার পুনরুদ্ধার।
2. পূর্বের সমস্ত চুক্তি ও সন্ধি মেনে চলার নিশ্চয়তা।
3. রাজাদের মর্যাদা, অধিকার ও রাজ্যসীমা অক্ষুণ্ণ রাখা।
মহারানির ঘোষণাপত্রের মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?
ব্রিটিশ সরকার বিদ্রোহ দমনের পর দেশীয় রাজা ও জনগণের অসন্তোষ কমাতে এবং ব্রিটিশ শাসনের বৈধতা বজায় রাখতে এই ঘোষণাপত্র জারি করেছিল।
মহারানির ঘোষণাপত্র কি ভারতীয়দের স্বার্থ রক্ষা করেছিল?
না, ঘোষণাপত্রে শুধু রাজনৈতিক শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছিল, কিন্তু ভারতীয়দের স্বায়ত্তশাসন বা স্বার্থ রক্ষার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। বরং ব্রিটিশ শাসন আরও কেন্দ্রীভূত হয়েছিল।
মহারানির ঘোষণাপত্রের পর ব্রিটিশ শাসনে কী পরিবর্তন আসে?
1. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটিয়ে সরাসরি ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের অধীনে ভারত শাসিত হয়।
2. ভারত সচিব ও গভর্নর জেনারেলের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
3. দেশীয় রাজ্যগুলিকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনস্থ করে রাখা হয়।
মহারানির ঘোষণাপত্র (1858) কী এবং কেন এটি জারি করা হয়েছিল?
1857 সালের মহাবিদ্রোহের পর ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় রাজন্যবর্গ ও জনসাধারণের অসন্তোষ দূর করতে 1858 সালের 1 লা নভেম্বর মহারানি ভিক্টোরিয়ার নামে এই ঘোষণাপত্র জারি করে। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশীয় রাজাদের সমর্থন আদায় ও ব্রিটিশ শাসনের বৈধতা প্রতিষ্ঠা করা।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “1857 খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের পর/মহারানির ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার কীভাবে দেশীয় রাজাদের ক্ষোভকে প্রশমিত করতে চেয়েছিল? মহারানির ঘোষণাপত্রকে ‘রাজনৈতিক ধাপ্পাবাজি/’প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অধ্যায়’ বলা হয়েছে কেন?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “1857 খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের পর/মহারানির ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার কীভাবে দেশীয় রাজাদের ক্ষোভকে প্রশমিত করতে চেয়েছিল? মহারানির ঘোষণাপত্রকে ‘রাজনৈতিক ধাপ্পাবাজি/’প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অধ্যায়’ বলা হয়েছে কেন?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের চতুর্থ অধ্যায় “সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।