এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

ইলবার্ট বিল কী সংক্ষেপে লেখো। ইউরোপীয়রা ইলবার্ট বিলের বিরোধিতা করেছিল কেন?

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ইলবার্ট বিল কী সংক্ষেপে লেখো। ইউরোপীয়রা ইলবার্ট বিলের বিরোধিতা করেছিল কেন?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “ইলবার্ট বিল কী সংক্ষেপে লেখো। ইউরোপীয়রা ইলবার্ট বিলের বিরোধিতা করেছিল কেন?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের চতুর্থ অধ্যায় “সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

ইলবার্ট বিল কী সংক্ষেপে লেখো। ইউরোপীয়রা ইলবার্ট বিলের বিরোধিতা করেছিল কেন?

ইলবার্ট বিল কী সংক্ষেপে লেখো।

1873 সালে ফৌজদারি আইন জারি হয়। এই আইন জারি করার ফলে ভারতীয় বিচার ব্যবস্থায় একপ্রকার দ্বিচারিতা সৃষ্টি হয়েছিল। অর্থাৎ ইউরোপীয় বিচারকরা ভারতীয় অপরাধীদের বিচার করতে পারলেও ভারতীয় বিচারকরা ইউরোপীয় অপরাধীদের বিচার করতে পারত না। একমাত্র ইউরোপীয় বিচারকরাই ইউরোপীয় অপরাধীদের বিচার করতে পারত। ব্রিটিশ শাসিত ভারতের বিচার ব্যবস্থার এই বৈষম্য দূর করার উদ্দেশ্যে 1883 সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড রিপন তাঁর আইনসচিব কোর্টনি পি. ইলবার্টকে একটি বিল বা আইনের খসড়া রচনা করতে বলেন। এই বিলই ইলবার্ট বিল নামে পরিচিত।

এই বিলে ভারতীয় বিচারকদের আংশিক স্বাধীনতা প্রদান করা হয়েছিল। ভারতীয় বিচারপতিরা ইউরোপীয় অপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে সর্বাধিক 6 মাসের জেল ও 2000 টাকার বেশি জরিমানা করতে পারবেনা।

এই আংশিক স্বাধীনতাটুকুও ইউরোপীয় বিচারপতিরা মেনে নিতে পারেননি। ফলে শুরু হয়েছিল তুমুল হট্টগোল। ইউরোপীয়রা ইলবার্ট বিলের বিরুদ্ধে তুমুল আন্দোলন শুরু করেন, যা শ্বেত বিদ্রোহ নামে পরিচিত। বিল প্রত্যাহারের দাবিতে ইউরোপীয় আইনজীবী মিলার, ব্রানসন প্রমুখরা প্রতিবাদস্বরূপ যে সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন তার নাম “ডিফেন্স অ্যাসোসিয়েশন”। ইউরোপীয়দের আন্দোলনের প্রত্যুত্তরে ইলবার্ট বিলের সপক্ষে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ‘ভারতসভা’ প্রতি আন্দোলন গড়ে তোলে। কিন্তু ইউরোপীয়দের চাপের কাছে ব্রিটিশ সরকার নতি স্বীকার করতে বাধ্য হন। এরপর বিলটিকে এমনভাবে সংশোধন করা হয় যাতে ইলবার্ট বিলের আসল উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়। সংশোধনী বিলে বলা হয় যে ভারতীয় বিচারপতিরা ইউরোপীয় মনোনীত জুরির সাহায্য নিয়ে ইউরোপীয় অপরাধীদের বিচার করতে পারবেন।

ইলবার্ট বিল আন্দোলনের জন্যই ভারতীয়দের প্রতি ইউরোপীয়দের বর্ণবিদ্বেষের নগ্ন চিত্র জনসমক্ষে প্রকাশিত হয়ে পড়ে। ভারতীয়রা বুঝতে পারে যে ভারতীয়রা হল ইংরেজদের কাছে ঘৃণার পাত্র। ইংরেজদের সম্বন্ধে তাদের ভুল ধারণা ভেঙে যায় এবং তাঁরা দ্রুত রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত হতে উদ্যমী হন।

ইউরোপীয়রা ইলবার্ট বিলের বিরোধিতা করেছিল কেন?

ইলবার্ট বিলে ভারতীয় বিচারকরা ইউরোপীয়দের বিচারের অধিকার পেয়েছিল। লর্ড রিপনের এই পদক্ষেপ শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশের উগ্র জাত্যাভিমানে আঘাত হানে। প্রভু ব্রিটিশকে নেটিভ ভারতীয়দের কাছে বিচারপ্রার্থী হতে হবে-এই ঘটনা শ্বেতাঙ্গ সমাজ মনে প্রাণে মেনে নিতে পারেনি, তাই তারা ইলবার্ট বিলের বিরোধিতায় শামিল হয়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

ইলবার্ট বিল কে প্রস্তাব করেছিলেন?

ইলবার্ট বিলটি প্রস্তাব করেছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ ভাইসরয় লর্ড রিপন এবং এটি রচনা করেছিলেন তাঁর আইনসচিব কোর্টনি পি. ইলবার্ট

ইলবার্ট বিলের প্রধান বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

ইলবার্ট বিলের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল
1. ভারতীয় বিচারকরা ইউরোপীয়দের বিচার করতে পারবেন।
2. তবে, সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারত 6 মাসের কারাদণ্ড বা 2000 টাকা জরিমানা

ইউরোপীয়রা ইলবার্ট বিলের বিরোধিতা করেছিল কেন?

ইউরোপীয়রা মনে করত যে ভারতীয় বিচারকদের কাছে তাদের বিচার হওয়া তাদের মর্যাদার অবমাননা। তারা জাতিগত শ্রেষ্ঠত্ববোধে আঘাত পেয়ে এই বিলের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন করে, যা “শ্বেত বিদ্রোহ” নামে পরিচিত।

শ্বেত বিদ্রোহ কী?

ইলবার্ট বিলের বিরুদ্ধে ইউরোপীয়রা যে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছিল, তাকেই শ্বেত বিদ্রোহ বলা হয়। তারা “ডিফেন্স অ্যাসোসিয়েশন” গঠন করে বিল প্রত্যাহারের দাবি জানায়।

ভারতীয়রা ইলবার্ট বিলের সমর্থনে কী করেছিল?

সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে “ভারতসভা” ইলবার্ট বিলের সমর্থনে আন্দোলন গড়ে তোলে।

ইলবার্ট বিলের চূড়ান্ত ফলাফল কী ছিল?

ইউরোপীয়দের চাপের মুখে ব্রিটিশ সরকার বিলটি সংশোধন করে, যেখানে বলা হয় যে ভারতীয় বিচারকরা ইউরোপীয় জুরির সহায়তায় ইউরোপীয়দের বিচার করতে পারবেন।

ইলবার্ট বিলের ঐতিহাসিক গুরুত্ব কী?

ইলবার্ট বিলের ঐতিহাসিক গুরুত্ব –
1. এটি ভারতীয়দের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করে।
2. ব্রিটিশদের বর্ণবিদ্বেষ ও জাতিগত বৈষম্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
3. ভারতীয়রা বুঝতে পারে যে ব্রিটিশ শাসনে তাদের মর্যাদা সীমিত।

ইলবার্ট বিল কবে পাস হয়?

1884 সালে সংশোধিত রূপে এটি পাস হয়, কিন্তু এর মূল উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ইলবার্ট বিল কী সংক্ষেপে লেখো। ইউরোপীয়রা ইলবার্ট বিলের বিরোধিতা করেছিল কেন??” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “ইলবার্ট বিল কী সংক্ষেপে লেখো। ইউরোপীয়রা ইলবার্ট বিলের বিরোধিতা করেছিল কেন?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের চতুর্থ অধ্যায় “সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন