এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “শ্বেতাঙ্গ বিদ্রোহ বা White Mutiny বলতে কী বোঝো? শ্বেতাঙ্গ বিদ্রোহ কী ইলবার্ট বিল বিরোধী আন্দোলন নামে পরিচিত?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “শ্বেতাঙ্গ বিদ্রোহ বা White Mutiny বলতে কী বোঝো? শ্বেতাঙ্গ বিদ্রোহ কী ইলবার্ট বিল বিরোধী আন্দোলন নামে পরিচিত?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের চতুর্থ অধ্যায় “সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

শ্বেতাঙ্গ বিদ্রোহ বা White Mutiny বলতে কী বোঝো?
ইলবার্ট বিলের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের ব্যারিস্টার ব্রনসনের নেতৃত্বে ইংরেজরা একটি প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তোলে। ব্রিটেনের বিখ্যাত সংবাদপত্র Englishman এই বিলের তীব্র সমালোচনা করে। ইলবার্ট বিলের বিরুদ্ধে ইংরেজদের এই প্রতিবাদ আন্দোলন White Mutinty বা শ্বেতাঙ্গ বিদ্রোহ নামে পরিচিত।
শ্বেতাঙ্গ বিদ্রোহ কী ইলবার্ট বিল বিরোধী আন্দোলন নামে পরিচিত?
1873 খ্রিস্টাব্দের ফৌজদারি আইন অনুসারে ইউরোপীয় বা শ্বেতাঙ্গ অপরাধীদের বিচার করার ক্ষমতা ভারতীয় বিচারপতিদের ছিল না, একমাত্র ইউরোপীয় বিচার-পতিরাই ইউরোপীয় (শ্বেতাঙ্গ) অপরাধীদের বিচার করতে পারতেন।
1883 খ্রিস্টাব্দে ভাইসরয় লর্ড রিপনের আইন সচিব কোর্টনি পি. ইলবার্ট ভারতীয় ও ইউরোপীয় বিচারপতিদের মধ্যে জাতিগত বৈষম্য দূর করে সমতুল্য মর্যাদা ও সমক্ষমতা দানের জন্য একটি আইনের খসড়া বা বিল তৈরি করেন, এই খসড়া আইন ‘ইলবার্ট বিল’ (Ilbert Bill) নামে খ্যাত; এই খসড়া আইনে বলা হয় যে ভারতীয় বিচারপতিরাও শ্বেতাঙ্গদের বিচার করতে পারবেন।
ইলবার্ট বিল প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপীয় বিচারপতিরা কেসুয়িক, মিলার, ব্রানসন প্রমুখের নেতৃত্বে ‘ডিফেন্স অ্যাসোসিয়েশন’ গঠন করে তুমুল আন্দোলন শুরু করেন,যা ‘শ্বেতাঙ্গ বিদ্রোহ’ (White Mutiny) বা ইলবার্ট বিল বিরোধী আন্দোলন নামে খ্যাত।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
শ্বেতাঙ্গ বিদ্রোহ (White Mutiny) কী?
এটি ছিল ইলবার্ট বিলের (Ilbert Bill) বিরুদ্ধে কলকাতায় ব্রিটিশ শ্বেতাঙ্গদের (ইউরোপীয়রা) একটি তীব্র প্রতিবাদ আন্দোলন। এই বিলে ভারতীয় বিচারকদের শ্বেতাঙ্গ অপরাধীদের বিচার করার অধিকার দেওয়ার প্রস্তাব ছিল।
ইলবার্ট বিল কী?
1883 সালে ভাইসরয় লর্ড রিপনের আইন সচিব কোর্টনি পি. ইলবার্ট এই বিল প্রস্তাব করেন। এতে ভারতীয় বিচারকদেরও শ্বেতাঙ্গদের বিচার করার সমান অধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।
শ্বেতাঙ্গরা কেন ইলবার্ট বিলের বিরোধিতা করেছিল?
ব্রিটিশরা মনে করত যে ভারতীয় বিচারকরা শ্বেতাঙ্গদের ন্যায্য বিচার করতে পারবেন না। তারা জাতিগত শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখতে চেয়েছিল এবং ভারতীয়দের সমান ক্ষমতা দিতে চায়নি।
ডিফেন্স অ্যাসোসিয়েশন (Defence Association) কী?
ইলবার্ট বিলের বিরোধিতার জন্য ইউরোপীয়রা ডিফেন্স অ্যাসোসিয়েশন গঠন করে। এই সংগঠনের নেতৃত্বে ছিলেন ব্যারিস্টার ব্রানসন, কেসুয়িক ও মিলার প্রমুখ।
শ্বেতাঙ্গ বিদ্রোহের ফলাফল কী ছিল?
ব্রিটিশ সরকার চাপের মুখে ইলবার্ট বিল সংশোধন করে। শেষ পর্যন্ত একটি সমঝোতা হয়, যেখানে শ্বেতাঙ্গদের বিচারের সময় জুরিতে অর্ধেক ইউরোপীয় সদস্য রাখার শর্ত দেওয়া হয়।
ইলবার্ট বিল বিরোধী আন্দোলন কেন “শ্বেতাঙ্গ বিদ্রোহ” নামে পরিচিত?
এটি মূলত ব্রিটিশ শাসকদেরই নিজেদের সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ছিল বলে একে “শ্বেতাঙ্গ বিদ্রোহ” বলা হয়।
ইলবার্ট বিল ভারতীয়দের মধ্যে কী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল?
এই বিল ভারতীয়দের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছিল, কিন্তু শ্বেতাঙ্গদের প্রতিবাদে তারা হতাশ হয়। এটি ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
ইলবার্ট বিলের বিরোধিতা ঘটনার ঐতিহাসিক গুরুত্ব কী?
এটি ব্রিটিশ শাসনে জাতিগত বৈষম্য ও ঔপনিবেশিক মানসিকতা প্রকাশ করে। এটি ভারতীয়দের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করে এবং পরবর্তীকালে জাতীয় আন্দোলনে প্রেরণা দেয়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “শ্বেতাঙ্গ বিদ্রোহ বা White Mutiny বলতে কী বোঝো? শ্বেতাঙ্গ বিদ্রোহ কী ইলবার্ট বিল বিরোধী আন্দোলন নামে পরিচিত?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “শ্বেতাঙ্গ বিদ্রোহ বা White Mutiny বলতে কী বোঝো? শ্বেতাঙ্গ বিদ্রোহ কী ইলবার্ট বিল বিরোধী আন্দোলন নামে পরিচিত?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের চতুর্থ অধ্যায় “সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।