জগদীশচন্দ্র বসু কে ছিলেন? জগদীশচন্দ্র বসু সম্পর্কে টীকা লেখো।

Rahul

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “জগদীশচন্দ্র বসু কে ছিলেন? জগদীশচন্দ্র বসু সম্পর্কে টীকা লেখো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “জগদীশচন্দ্র বসু কে ছিলেন? জগদীশচন্দ্র বসু সম্পর্কে টীকা লেখো।“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের পঞ্চম অধ্যায় “বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

জগদীশচন্দ্র বসু কে ছিলেন? জগদীশচন্দ্র বসু সম্পর্কে টীকা লেখো।
Contents Show

জগদীশচন্দ্র বসু কে ছিলেন?

জগদীশচন্দ্র বসু ছিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপক এবং বিজ্ঞানী। তিনি বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ আবিষ্কার করেন। তা ছাড়া তিনি এও প্রমাণ করেন যে, উদ্ভিদের চেতনা এবং প্রাণ আছে। এক্ষেত্রে তিনি ক্রেসকো-গ্রাফ যন্ত্র আবিষ্কার করেন।

জগদীশচন্দ্র বসু সম্পর্কে টীকা লেখো।

জগদীশচন্দ্র বসুর ভূমিকা –

জগদ্বিখ্যাত প্রথম বাঙালি বিজ্ঞানী স্যার জগদীশচন্দ্র বসু। তিনি বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় উদ্ভাবন করেছেন এবং বিজ্ঞানে অভূতপূর্ব অবদান রেখেছেন। একই সাথে তিনি একজন সাহিত্যিকও ছিলেন।

জগদীশচন্দ্র বসুর জন্ম ও শিক্ষাজীবন –

জগদীশচন্দ্র বসুর জন্ম ময়মনসিংহে 1858 সালের 30 নভেম্বর। তাঁর বাবার বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরের রাঢ়িখাল গ্রামে। তিনি ময়মনসিংহ জিলা স্কুলে পড়াশোনা করেন। এরপর কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল থেকে 1874 সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। 1878 সালে এফ.এ. এবং 1880 সালে বিজ্ঞান শাখায় বিএসসি পাস করে তিনি ডাক্তারি পড়তে যান বিলাতে। এক বছর ডাক্তারি পড়ার পর তিনি 1881 সালে ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। সেখান থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন তিনি।

জগদীশচন্দ্র বসুর কর্মজীবন –

1885 সালে তিনি দেশে ফিরে এসে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। পাশাপাশি বিজ্ঞানের মৌলিক গবেষণার কাজ করতে থাকেন। 1916 সালে অবসর গ্রহণের পর তিনি ‘ইমেরিটাস প্রফেসর’ পদ লাভ করেন।

জগদীশচন্দ্র বসুর আবিষ্কার –

বিনা তারে শব্দ প্রেরণের ‘ক্রিস্টাল রিসিভার’ নামক বেতারযন্ত্র তিনি আবিষ্কার করেন। তিনি বেশি পরিচিতি লাভ করেন ‘গাছেরও প্রাণ আছে’ – এ সত্য প্রমাণ করে। আবিষ্কার করেন গাছ বেড়ে ওঠার যন্ত্র ‘ক্রেসকোগ্রাফ’। এছাড়া আবিষ্কার করেন গাছের দেহের উত্তেজনার বেগ মাপার যন্ত্র ‘রিজোনাস্ট রেকর্ডার’। তাঁর গবেষণার প্রধান ক্ষেত্র ছিল ‘বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ’ ও ‘অদৃশ্য আলোকের ধর্ম’। তাঁর এসব নির্ভুল আবিষ্কারে চমৎকৃত হন বিজ্ঞানী আইনস্টাইন, বিজ্ঞানী অলিভার লজ ও লর্ড কেলভিন।

জগদীশচন্দ্র বসুর উপাধি লাভ –

লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় 1896 সালে তাঁকে ডিএসসি ডিগ্রি প্রদান করে। এরপর ভারত সরকার ‘নাইট’ ও ব্রিটিশ সরকার ‘সিএসই’ উপাধি দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় 1935 সালে তাঁকে ডিএসসি ডিগ্রি প্রদান করে। বিজ্ঞান শিক্ষা ও চর্চার ক্ষেত্রে তাঁর সফলতা ছিল গ্যালিলিও ও নিউটনের সমকক্ষ।

জগদীশচন্দ্র বসুর উপসংহার –

কর্মজীবন থেকে অবসর গ্রহণের দুই বছর পর জগদীশচন্দ্র বসু কলকাতায় ‘জগদীশচন্দ্র বসু বিজ্ঞান মন্দির’ প্রতিষ্ঠা করেন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি সেখানে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এই সফল বিজ্ঞানী ও বাঙালির গৌরব 1937 সালের 23 নভেম্বর গিরিডিতে মৃত্যুবরণ করেন।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

জগদীশচন্দ্র বসুর জন্ম কবে ও কোথায় হয়েছিল?

তাঁর জন্ম 1858 সালের 30 নভেম্বর ময়মনসিংহে (বর্তমান বাংলাদেশে)। তাঁর পৈতৃক বাড়ি ছিল মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরের রাঢ়িখাল গ্রামে।

জগদীশচন্দ্র বসুর শিক্ষাজীবন কেমন ছিল?

1. তিনি ময়মনসিংহ জিলা স্কুল ও কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে পড়াশোনা করেন।
2. 1879 সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি পাস করেন।
3. পরে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন।

জগদীশচন্দ্র বসুর প্রধান আবিষ্কারগুলি কী কী?

জগদীশচন্দ্র বসুর প্রধান আবিষ্কারগুলি হল –
1. বেতার তরঙ্গ (রেডিও ওয়েভ) নিয়ে গবেষণা (মার্কোনির আগেই)।
2. উদ্ভিদের প্রাণ আছে তা প্রমাণের জন্য ক্রেসকোগ্রাফ যন্ত্র আবিষ্কার।
3. ক্রিস্টাল রিসিভার (বিনা তারে শব্দ প্রেরণের যন্ত্র) তৈরি।
4. বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা।

জগদীশচন্দ্র বসু কোথায় অধ্যাপনা করতেন?

তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে কাজ করতেন (1885-1916)।

জগদীশচন্দ্র বসু কী উপাধি পেয়েছিলেন?

1. নাইটহুড (স্যার) উপাধি পান ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে।
2. ডিএসসি ডিগ্রি পান লন্ডন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

জগদীশচন্দ্র বসু বিজ্ঞান মন্দির কী?

তিনি 1917 সালে কলকাতায় “বসু বিজ্ঞান মন্দির” প্রতিষ্ঠা করেন, যা একটি গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।

জগদীশচন্দ্র বসুর মৃত্যু কবে হয়?

তিনি 1937 সালের 23 নভেম্বর গিরিডিতে মৃত্যুবরণ করেন।

জগদীশচন্দ্র বসুকে কেন স্মরণ করা হয়?

তিনি বিজ্ঞান ও গবেষণায় ভারতের গৌরব, বিশেষ করে উদ্ভিদ বিজ্ঞান ও পদার্থবিজ্ঞানে তাঁর অবদানের জন্য।

জগদীশচন্দ্র বসুর বইগুলির নাম কী?

তাঁর কিছু বিখ্যাত বই হলো –
1. “Response in the Living and Non-living”
2. “The Nervous Mechanism of Plants”
3. “অব্যক্ত” (বাংলায় লেখা তাঁর বিজ্ঞানবিষয়ক প্রবন্ধ সংকলন)।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “জগদীশচন্দ্র বসু কে ছিলেন? জগদীশচন্দ্র বসু সম্পর্কে টীকা লেখো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “জগদীশচন্দ্র বসু কে ছিলেন? জগদীশচন্দ্র বসু সম্পর্কে টীকা লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের পঞ্চম অধ্যায় “বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

দেশীয় রাজ্য বলতে কী বোঝো? দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তিকরণের ক্ষেত্রে ভারত সরকার কী ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল?

দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তিকরণের ক্ষেত্রে ভারত সরকার কী ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল?

ভারত-বিভাজনের অনিবার্যতার কারণ বিশ্লেষণ করো।

ভারত বিভাজনের অনিবার্যতার কারণ বিশ্লেষণ করো।

দেশীয় রাজ্যগুলি সম্পর্কে জাতীয় কংগ্রেসের মনোভাব ঠিক কী ছিল, তাই নিয়ে আলোচনা করো।

দেশীয় রাজ্যগুলি সম্পর্কে জাতীয় কংগ্রেসের মনোভাব আলোচনা করো।

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

উত্তর ভারতের নদনদীর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তিকরণের ক্ষেত্রে ভারত সরকার কী ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল?

ভারত বিভাজনের অনিবার্যতার কারণ বিশ্লেষণ করো।

ভাঙ্গর ও খাদার বলতে কি বোঝো? ভাঙ্গর ও খাদারের মধ্যে পার্থক্য

দেশীয় রাজ্যগুলি সম্পর্কে জাতীয় কংগ্রেসের মনোভাব আলোচনা করো।