আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক বাংলার সপ্তম পাঠের প্রথম বিভাগ, ‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান,’ থেকে কিছু পাঠ্যাংশের ব্যাকরণ নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো প্রায়ই পরীক্ষায় আসতে পারে। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হবে।

নিম্নরেখ পদগুলির কারক ও অকারক সম্পর্ক এবং বিভক্তি ও অনুসর্গ নির্দেশ করো।
প্রথম শ্রেণির পাঠকদের বিজ্ঞানের সঙ্গে পূর্ব পরিচয় নেই।
উত্তর – পাঠকদের – কর্তৃকারক, ‘এর’ বিভক্তি।
ছেলেবেলায় আমাকে ব্রহ্মমোহন মল্লিকের বাংলা জ্যামিতি পড়তে হয়েছিল।
উত্তর – ছেলেবেলায় – অধিকরণকারক, ‘য়’ বিভক্তি। আমাকে – কর্মকারক, ‘কে’ বিভক্তি।
পাশ্চাত্য দেশের শিক্ষার্থীর চেয়ে তাকে বেশি চেষ্টা করতে হয় না।
উত্তর – শিক্ষার্থীর চেয়ে – অপাদানকারক, ‘চেয়ে’ অনুসর্গ।
এই কারণে পাশ্চাত্য পাঠকের তুলনায় তার পক্ষে একটু বেশি চেষ্টা আবশ্যক।
উত্তর – কারণে – নিমিত্তকারক, ‘এ’ বিভক্তি।
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চায় এখনও নানা রকম বাধা আছে।
উত্তর – বিজ্ঞানচর্চায় – অধিকরণকারক, ‘য়’ বিভক্তি।
বিশ্ববিদ্যালয়-নিযুক্ত সমিতি বিস্তর ইংরেজি শব্দ বজায় রেখেছেন।
উত্তর – সমিতি – কর্তৃকারক, ‘শূন্য’ বিভক্তি।
ইউরোপ আমেরিকায় পপুলার সায়েন্স লেখা সুসাধ্য এবং সাধারণে তা সহজেই বোঝে।
উত্তর – আমেরিকায় – অধিকরণকারক, ‘য়’ বিভক্তি। সাধারণে – কর্তৃকারক, ‘এ’ বিভক্তি।
এই রকম ভুল লেখা সাধারণ পাঠকের পক্ষে অনিষ্টকর।
উত্তর – পাঠকের পক্ষে – নিমিত্তকারক, ‘পক্ষে’ অনুসর্গ।
নিম্নলিখিত বাক্যগুলিতে যে সমাসবদ্ধ পদ আছে তা বেছে নিয়ে তার ব্যাসবাক্য-সহ সমাস নির্ণয় করো।
অল্পবয়স্ক ছেলেমেয়ে এবং অল্পশিক্ষিত বয়স্ক লোক এই শ্রেণিতে পড়ে।
উত্তর – অল্পবয়স্ক – বয়স অল্প যার (সাধারণ বহুব্রীহি)। ছেলেমেয়ে – ছেলে ও মেয়ে (দ্বন্দ্ব সমাস)। অল্পশিক্ষিত – অল্প শিক্ষিত যে (সাধারণ কর্মধারয়)।
যারা ইংরেজি জানে এবং ইংরেজি ভাষায় অল্পাধিক বিজ্ঞান পড়েছে।
উত্তর – অল্পাধিক – অল্প এবং অধিক (দ্বন্দ্ব সমাস)।
কয়েকজন বিদ্যোৎসাহী লেখক নানা বিষয়ের পরিভাষা রচনা করেছিলেন।
উত্তর – বিদ্যোৎসাহী – বিদ্যায় উৎসাহ যার (বহুব্রীহি)।
একই ইংরেজি সংজ্ঞার বিভিন্ন প্রতিশব্দ রচিত হয়েছে।
উত্তর – প্রতিশব্দ – শব্দের সদৃশ (প্রায়) (অব্যয়ীভাব)।
কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকলন খুব বড়ো নয় …
উত্তর – বিশ্ববিদ্যালয়ের – বিশ্ববিদ্যার নিমিত্ত আলয় (নিমিত্ত তৎপুরুষ) সেখানের।
তখন বৈজ্ঞানিক সাহিত্য রচনা সুসাধ্য হবে।
উত্তর – সুসাধ্য – সু (সুন্দর) ভাবে সাধ্য (উপসর্গ তৎপুরুষ)।
Sensitized paper -এর অনুবাদ স্পর্শকাতর কাগজ অতি উৎকট।
উত্তর – স্পর্শকাতর – স্পর্শ দ্বারা কাতর (করণ তৎপুরুষ)।
… তাঁরা এ বিষয়ে অবহিত না হলে তাঁদের লেখা জনপ্রিয় হবে না।
উত্তর – জনপ্রিয় – জনগণের প্রিয় যা (সাধারণ কর্মধারয়)।
নির্দেশ অনুযায়ী বাক্য পরিবর্তন করো।
এই রকম সামান্য জ্ঞান থাকলেও সুশৃঙ্খল আধুনিক বৈজ্ঞানিক তথ্য তারা কিছুই জানে না। (যৌগিক বাক্যে)
উত্তর – এই রকম সামান্য জ্ঞান তাদের থাকতে পারে কিন্তু সুশৃঙ্খল আধুনিক বৈজ্ঞানিক তথ্য তারা কিছুই জানে না।
যে লোক আজন্ম ইজার পরেছে তার পক্ষে হঠাৎ ধুতি পরা অভ্যাস করা একটু শক্ত। (সরল বাক্যে)
উত্তর – আজন্ম ইজার পরা লোকের পক্ষে হঠাৎ ধুতি পরা অভ্যাস করা একটু শক্ত।
ছেলেবেলায় আমাকে ব্রহ্মমোহন মল্লিকের বাংলা জ্যামিতি পড়তে হয়েছিল। (না-বাচক বাক্যে)
উত্তর – ছেলেবেলায় আমি ব্রহ্মমোহন মল্লিকের বাংলা জ্যামিতি ছাড়া অন্য জ্যামিতি পড়িনি।
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চায় এখনও নানারকম বাধা আছে। (প্রশ্নবোধক বাক্যে)
উত্তর – বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চায় এখনও কি নানারকম বাধা নেই?
এই দোষ থেকে মুক্ত না হলে বাংলা বৈজ্ঞানিক সাহিত্য সুপ্রতিষ্ঠিত হবে না। (হ্যাঁ-বাচক বাক্যে)
উত্তর – এই দোষ থেকে গেলে বাংলা বৈজ্ঞানিক সাহিত্যের সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়া অসম্ভব হবে।
এরকম বর্ণনা বাংলা ভাষায় প্রকৃতিবিরুদ্ধ। (প্রশ্নবাচক বাক্যে)
উত্তর – এরকম বর্ণনা কি বাংলা ভাষায় প্রকৃতিবিরুদ্ধ নয়?
যদি বার বার কোনো বিষয়ের বর্ণনা দিতে হয় তবে অনর্থক কথা বেড়ে যায়, তাতে পাঠকের অসুবিধা হয়। (সরল বাক্যে)
উত্তর – বার বার কোনো বিষয়ের বর্ণনা দিতে হলে অনর্থক কথা বেড়ে গিয়ে পাঠকের অসুবিধা হয়।
নির্দেশ অনুযায়ী বাচ্য পরিবর্তন করো।
প্রথম শ্রেণির পাঠকদের বিজ্ঞানের সঙ্গে পূর্ব পরিচয় নেই। (কর্তৃবাচ্যে)
উত্তর – প্রথম শ্রেণির পাঠকরা বিজ্ঞানের সঙ্গে পূর্ব পরিচিত নন।
অনেকরকম স্থূল তথ্যও তাদের জানা থাকতে পারে। (কর্তৃবাচ্যে)
উত্তর – অনেকরকম স্থূল তথ্যও বোধহয় তারা জানে।
এইরকম সামান্য জ্ঞান থাকলেও সুশৃঙ্খল আধুনিক বৈজ্ঞানিক তথ্য তারা কিছুই জানে না। (কর্মবাচ্যে)
উত্তর – এইরকম সামান্য জ্ঞান থাকলেও সুশৃঙ্খল আধুনিক বৈজ্ঞানিক তথ্য তাদের কিছুই জানা নেই।
ছেলেবেলায় আমাকে ব্রহ্মমোহন মল্লিকের বাংলা জ্যামিতি পড়তে হয়েছিল। (কর্তৃবাচ্যে)
উত্তর – ছেলেবেলায় আমি ব্রহ্মমোহন মল্লিকের বাংলা জ্যামিতি পড়েছিলাম।
পাশ্চাত্য দেশের শিক্ষার্থীর চেয়ে তাকে বেশি চেষ্টা করতে হয় না। (কর্তৃবাচ্যে)
উত্তর – পাশ্চাত্য দেশের শিক্ষার্থীর চেয়ে সে বেশি চেষ্টা করে না।
অনেক লেখক তাঁদের বক্তব্য ইংরেজিতে ভাবেন এবং যথাযথ বাংলা অনুবাদে প্রকাশ করবার চেষ্টা করেন। (কর্মবাচ্যে)
উত্তর – অনেক লেখকের দ্বারা তাঁদের বক্তব্য ইংরেজিতে ভাবা হয় এবং যথাযথ বাংলা অনুবাদে প্রকাশ করবার চেষ্টা করা হয়।
এই কথাটি সকল লেখকেরই মনে রাখা উচিত। (কর্তৃবাচ্যে)
উত্তর – এই কথাটি সকল লেখকই মনে রাখবেন।
আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক বাংলার সপ্তম পাঠের প্রথম বিভাগ, ‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান,’ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পাঠ্যাংশের ব্যাকরণ নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এ ধরনের প্রশ্ন প্রায়ই পরীক্ষায় দেখা যায়। আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। যদি কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকে, তবে আপনারা টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। এছাড়া, এই পোস্টটি আপনার পরিচিতদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন