মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – বিষয়সংক্ষেপ

Rahul

আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞানের তৃতীয় অধ্যায় “বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ” অধ্যায়ের ‘কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ‘ বিভাগের বিষয়সংক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য বা আপনি যদি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন, তাহলে আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি যে এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হবে।

কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – বিষয়সংক্ষেপ
কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – বিষয়সংক্ষেপ

বিষয়সংক্ষেপ

  • মানব পপুলেশনে নানারকম জিনঘটিত বংশগত রোগ লক্ষ করা যায়। যেমন – থ্যালাসেমিয়া, হিমোফিলিয়া ও বর্ণান্ধতা।
  • থ্যালাসেমিয়া অটোজোমাল জিনঘটিত প্রচ্ছন্ন একটি রোগ। এটি প্রধানত দু-প্রকার – আলফা (α) থ্যালাসেমিয়া ও বিটা (β) থ্যালাসেমিয়া। আবার, রোগের তীব্রতা অনুযায়ীও এই দুইপ্রকার থ্যালাসেমিয়াকেই দু-ভাগে ভাগ করা যায়। যথা – থ্যালাসেমিয়া মেজর ও থ্যালাসেমিয়া মাইনর। থ্যালাসেমিয়া মেজর রোগটি তীব্র প্রকৃতির। পক্ষান্তরে থ্যালাসেমিয়া মাইনর রোগটির তীব্রতা কম।
  • থ্যালাসেমিয়া রোগে হিমোগ্লোবিনের গ্লোবিন প্রোটিন উৎপাদন ব্যাহত হয়। ফলে অ্যানিমিয়া দেখা যায়। এ ছাড়াও থ্যালাসেমিয়া রোগীদের দেহে রক্তসঞ্চারণের জন্য অতিরিক্ত লোহা জমে যায় ও হাড়ের বিকৃতি ঘটে।
  • হিমোফিলিয়া হল মানুষের একটি X ক্রোমোজোম সংযোজিত প্রচ্ছন্ন জিনঘটিত রোগ। এই রোগে রক্ততঞ্চনকারী ফ্যাক্টর তৈরি হয় না বলে কেটে গেলে অনবরত রক্তক্ষরণ হয়।
  • তীব্রতা অনুযায়ী হিমোফিলিয়া রোগটি তিন প্রকারের হয়। যথা –
    • মৃদু হিমোফিলিয়া (তঞ্চন ফ্যাক্টর স্বাভাবিকের 5-50% অবধি থাকে)।
    • মধ্যম হিমোফিলিয়া (রক্ততঞ্চনকারী ফ্যাক্টর স্বাভাবিকের 1-5% অবধি থাকে)।
    • তীব্র হিমোফিলিয়া (রক্ততঞ্চনকারী ফ্যাক্টর স্বাভাবিকের 1% এরও কম থাকে)।
  • রক্ততঞ্চনে সাহায্যকারী ফাক্টরের ওপর নির্ভর করে তিনপ্রকার হিমোফিলিয়া দেখা যায়। যথা – হিমোফিলিয়া A বা ক্লাসিক হিমোফিলিয়া, হিমোফিলিয়া B বা ক্রিস্টমাস রোগ এবং হিমোফিলিয়া C।
  • বর্ণান্ধতাও মানুষের একটি X ক্রোমোজোম সংযোজিত প্রচ্ছন্ন জিনঘটিত রোগ, যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তি লাল, সবুজ বা নীল বর্ণ চিনতে পারে না।
  • বর্ণান্ধতার লক্ষণ অনুযায়ী একে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা –
    • প্রোটোনোপিয়া বা লাল বর্ণান্ধতা (লাল বর্ণ চিনতে পারে না)
    • ডিউটেরানোপিয়া বা সবুজ বর্ণান্ধতা (সবুজ বর্ণ চিনতে পারে না)
    • ট্রাইটানোপিয়া বা নীল বর্ণান্ধতা (নীল বর্ণ চিনতে পারে না)। নীল বর্ণান্ধতার জন্য দায়ী জিনটি 7 নং ক্রোমোজোমে অর্থাৎ অটোজোমে অবস্থান করে।
  • থ্যালাসোমিয়া, হিমোফিলিয়া ও বর্ণান্ধতা রোগগুলির সঞ্চারণ জেনেটিক ক্রস দ্বারা নির্ণয় করা যায়।
  • জিনগত রোগ, বিশেষত থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে বিবাহপূর্বে জেনেটিক কাউন্সেলিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোগী বা রোগগুলির বাহকদের সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে রোগটির হওয়ার সম্ভাবনা নির্ণয় করে একজন জেনেটিক কাউন্সিলার সেই সংক্রান্ত পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞানের তৃতীয় অধ্যায় “বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ” অধ্যায়ের ‘কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ‘ বিভাগের বিষয়সংক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য বা আপনি যদি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন তাহলে আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি যে এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া, আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জন যার এটি প্রয়োজন হবে তার সাথে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ-কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ-মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

দেশীর রাজ্য দফতর কেন গঠিত হয়েছিল? দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তির দলিল বলতে কী বোঝায়?

দেশীর রাজ্য দফতর কেন গঠিত হয়েছিল?

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

দেশীর রাজ্য দফতর কেন গঠিত হয়েছিল?

ভারতের জনজীবনে নদনদীর প্রভাব আলোচনা করো।

উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের নদনদীর পার্থক্য লেখো।