এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “দেশীর রাজ্য দফতর কেন গঠিত হয়েছিল? অথবা, দেশীর রাজ্য দফতর বলতে কী বোঝ? দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তির দলিল বলতে কী বোঝায়?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “দেশীর রাজ্য দফতর কেন গঠিত হয়েছিল? অথবা, দেশীর রাজ্য দফতর বলতে কী বোঝ? দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তির দলিল বলতে কী বোঝায়?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের অষ্টম অধ্যায় “উত্তর-ঔপনিবেশিক ভারত: বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব (1947-1964)“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

দেশীর রাজ্য দফতর কেন গঠিত হয়েছিল?
অথবা, দেশীর রাজ্য দফতর বলতে কী বোঝ?
মাউন্টব্যাটেনের প্রস্তাবনায় দেশীয় রাজ্যগুলিকে তাদের স্বাধীন অস্তিত্ব রক্ষা অথবা ভারত ও পাকিস্তান যেকোন একটি ডোমিনিয়ানে যোগদানের স্বাধীনতা দেওয়া হলেও ভারত রাষ্ট্রের পক্ষে এই বিরাট সংখ্যক দেশীয় রাজ্যের স্বাধীন অস্তিত্ব মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না। বস্তুতপক্ষে, ভারতরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা, সুষ্ঠ যোগাযোগ ব্যবস্থা, জাতীয় সংহতি, অর্থনৈতিক বিকাশ প্রভৃতির পক্ষে দেশীয় রাজ্যগুলির স্বাধীন অস্তিত্ব অন্তরায় স্বরূপ ছিল। তাই দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তির উদ্যোগকে সফল করার জন্য সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের নেতৃত্বে ‘দেশীর রাজ্য দফতর’ নামে একটি স্বতন্ত্র দফতর গঠন করা হয়।
দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তির দলিল বলতে কী বোঝায়?
ভারতের স্বাধীনতালাভের পরবর্তীকালে বিভিন্ন দেশীয় রাজ্য যে চুক্তি পত্রের মাধ্যমে ভারত ইউনিয়ানে যোগদান করে, তা ভারতভুক্তির দলিল বা ইনস্ট্রুমেন্ট অফ অ্যাকসেশন নামে পরিচিত। স্বাধীন ভারতের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল এবং তাঁর সচিব ভি. পি. মেননের নেতৃত্বে এই চুক্তি পত্র রচিত হয়। এতে বিশাল পরিমাণ ভাতা, খেতাব ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধার প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে দেশীয় রাজ্যগুলিকে ভারত ইউনিয়নে যোগদান করানোর ব্যবস্থা করা হয়।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
ভারতভুক্তির দলিল (ইনস্ট্রুমেন্ট অফ অ্যাকসেশন) বলতে কী বোঝায়?
ভারতভুক্তির দলিল হল সেই চুক্তিপত্র, যার মাধ্যমে স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে দেশীয় রাজ্যগুলি (Princely States) ভারতীয় ইউনিয়নে যোগদান করে। এই দলিলে রাজ্যগুলির শাসকরা ভারত সরকারের কাছে প্রতিরক্ষা, বৈদেশিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থার দায়িত্ব অর্পণ করেন। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ও ভি. পি. মেননের নেতৃত্বে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
দেশীয় রাজ্যগুলি কেন ভারতভুক্ত হয়েছিল?
1. ভারত সরকার রাজন্যবর্গকে ভাতা, খেতাব ও অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
2. স্বাধীন থাকলে রাজ্যগুলির নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে শঙ্কা ছিল।
3. ভারতের জাতীয় সংহতি, যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একীভূতকরণ জরুরি ছিল।
কোন পদ্ধতিতে দেশীয় রাজ্যগুলি ভারতভুক্ত হয়?
1. ইনস্ট্রুমেন্ট অফ অ্যাকসেশন (ভারতভুক্তির দলিল) – রাজ্যগুলি তিনটি বিষয়ে (প্রতিরক্ষা, বৈদেশিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ) কেন্দ্রের অধীন হয়।
2. স্ট্যান্ডস্টিল অ্যাগ্রিমেন্ট – সাময়িকভাবে পূর্বের শাসনব্যবস্থা বহাল রাখা হত।
3. ভৌগোলিক একত্রীকরণ – হায়দ্রাবাদ, জুনাগড়ের মতো রাজ্যগুলিকে সামরিক বা কূটনৈতিক চাপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ভারতভুক্তি প্রক্রিয়ায় সর্দার প্যাটেল ও ভি. পি. মেননের ভূমিকা কী ছিল?
1. সর্দার প্যাটেল (প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) – রাজন্যবর্গকে সমঝোতায় আনার কূটনৈতিক নেতৃত্ব দেন।
2. ভি. পি. মেনন (প্রশাসনিক সচিব) – চুক্তি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দায়িত্বে ছিলেন।
দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তির ঐতিহাসিক তাৎপর্য কী?
1. ভারতের ভৌগোলিক ঐক্য রক্ষা পায়।
2. সাংবিধানিক একতা প্রতিষ্ঠিত হয় (রাজ্যগুলি ধীরে ধীরে রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়)।
3. জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সংহতি শক্তিশালী হয়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “দেশীর রাজ্য দফতর কেন গঠিত হয়েছিল? অথবা, দেশীর রাজ্য দফতর বলতে কী বোঝ? দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তির দলিল বলতে কী বোঝায়?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “দেশীর রাজ্য দফতর কেন গঠিত হয়েছিল? অথবা, দেশীর রাজ্য দফতর বলতে কী বোঝ? দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তির দলিল বলতে কী বোঝায়?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের অষ্টম অধ্যায় “উত্তর-ঔপনিবেশিক ভারত: বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব (1947-1964)” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন