এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ভারতের ইক্ষু উৎপাদক রাজ্যগুলির পরিচয় দাও।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের কৃষি” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের ইক্ষু উৎপাদক রাজ্যগুলির পরিচয় দাও।
ইক্ষু বা আখ একটি শর্করা জাতীয় অর্থকরী ফসল। ইক্ষু উৎপাদনে ভারত পৃথিবীতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। 2017-2018 খ্রিস্টাব্দের তথ্য অনুসারে এদেশে ইক্ষু উৎপাদনের পরিমাণ ছিল 37.69 কোটি টন।

ভারতের ইক্ষু উৎপাদক রাজ্য ও উল্লেখযোগ্য জেলা বা অঞ্চলগুলি হল –
উত্তরপ্রদেশ –
2017-2018 খ্রিস্টাব্দে উত্তরপ্রদেশ ভারতের মোট 17.71 কোটি টন ইক্ষু উৎপাদন করে প্রথম স্থান অধিকার করে। এ রাজ্যের পাহাড়ি অংশ বাদ দিয়ে প্রায় সর্বত্রই ইক্ষুর চাষ হয়। পাললিক মৃত্তিকাযুক্ত অঞ্চল, উপযুক্ত জলবায়ু, জলসেচের ব্যবস্থাপনা ও সারের ব্যবহার প্রভৃতির দ্বারা উত্তরপ্রদেশ ইক্ষু উৎপাদনে প্রথম স্থান অধিকার করে। এ রাজ্যের ইক্ষু উৎপাদক অঞ্চলগুলি হল – মোরাদাবাদ, আলিগড়, বারাণসী, জৌনপুর, সাজাহানপুর, ফৈজাবাদ প্রভৃতি।
মহারাষ্ট্র –
বর্তমানে মহারাষ্ট্র ভারতের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইক্ষু উৎপাদক রাজ্য। 2017-2018 খ্রিস্টাব্দে এ রাজ্যের মোট ইক্ষু উৎপাদনের পরিমাণ ছিল 8.31 কোটি টন। মহারাষ্ট্রের উল্লেখযোগ্য ইক্ষু উৎপাদক জেলাগুলি হল – শোলাপুর, সাতারা, নাসিক, কোলাপুর, পুনে, আহমেদনগর প্রভৃতি। ভারতের প্রধান 100টি ইক্ষু উৎপাদক জেলার মধ্যে 30টিই মহারাষ্ট্রে অবস্থিত।
কর্ণাটক –
2017-2018 খ্রিস্টাব্দে কর্ণাটক ভারতের মোট 2.83 কোটি টন ইক্ষু উৎপাদন করে তৃতীয় স্থান অধিকার করে। প্রধানত জলসেচনের মাধ্যমেই এরাজ্যে ইক্ষুর চাষ করা হয়। কর্ণাটকের উল্লেখযোগ্য ইক্ষু উৎপাদক জেলাগুলি হল – বেলারি, শিমাগো, কোলার, বেলগাঁও প্রভৃতি।
অন্যান্য রাজ্য –
- তামিলনাড়ুর মাদুরাই, তিরুচিরাপল্লি, আর্কট, কোয়েম্বাটোর।
- অন্ধ্রপ্রদেশ – পূর্ব ও পশ্চিম গোদাবরী অববাহিকা অঞ্চল, কৃষ্ণা নদী অববাহিকা অঞ্চল, শ্রীকাকুলাম, বিশাখাপত্তনম। এ ছাড়া ভারতের অন্যান্য ইক্ষু উৎপাদক রাজ্যগুলি হল – গুজরাট, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, বিহার প্রভৃতি।
ভারতের উল্লেখযোগ্য ইক্ষু উৎপাদক রাজ্যসমূহ (2017-2018) –
রাজ্য | উৎপাদন (কোটি টন) |
উত্তরপ্রদেশ | 17.71 |
মহারাষ্ট্র | 8.31 |
কর্ণাটক | 2.83 |
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
ইক্ষু বা আখ কী?
ইক্ষু বা আখ একটি শর্করা জাতীয় অর্থকরী ফসল, যা থেকে চিনি, গুড় ও ইথানল উৎপাদন করা হয়।
ইক্ষু উৎপাদনে বিশ্বে ভারতের স্থান কী?
ইক্ষু উৎপাদনে ভারত বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে (প্রথম স্থানে ব্রাজিল)।
ভারতের শীর্ষ ইক্ষু উৎপাদক রাজ্য কোনটি?
উত্তরপ্রদেশ (2017-18 সালে 17.71 কোটি টন উৎপাদন)।
মহারাষ্ট্রের ইক্ষু উৎপাদনের বৈশিষ্ট্য কী?
মহারাষ্ট্র দ্বিতীয় বৃহত্তম ইক্ষু উৎপাদক রাজ্য (8.31 কোটি টন)। এখানে শোলাপুর, সাতারা, নাসিক, আহমেদনগর প্রধান উৎপাদক জেলা।
কর্ণাটকে ইক্ষু চাষ কীভাবে হয়?
কর্ণাটকে প্রধানত জলসেচনের মাধ্যমে ইক্ষু চাষ হয়। এ রাজ্যের উল্লেখযোগ্য জেলা — বেলারি, শিমোগা, বেলগাঁও।
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ইক্ষু উৎপাদক রাজ্যগুলি কী কী?
গুজরাট, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, বিহার প্রভৃতি রাজ্যেও ইক্ষুর চাষ হয়।
ইক্ষু চাষের জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত কী?
ইক্ষু চাষের জন্য প্রয়োজনীয় শর্তগুলি হলো –
1. উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু (21°C-27°C)।
2. পর্যাপ্ত সেচের সুবিধা।
3. উর্বর দোআঁশ বা পলি মাটি।
ভারতের মোট ইক্ষু উৎপাদন কত?
2017-18 সালে ভারতের মোট ইক্ষু উৎপাদন ছিল 37.69 কোটি টন।
ইক্ষু থেকে উৎপাদিত প্রধান পণ্য কী?
চিনি, গুড়, মোলাসেস, ইথানল, জৈব জ্বালানি ইত্যাদি।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ভারতের ইক্ষু উৎপাদক রাজ্যগুলির পরিচয় দাও।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের কৃষি” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন