এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ভারতে তুলা চাষের সমস্যাগুলি লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের কৃষি” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতে তুলা চাষের সমস্যাগুলি লেখো।
তুলা একটি তন্তুজ এবং বাণিজ্যিক ফসল। ভারতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে তুলার চাষ হলেও এর কিছু কিছু সমস্যা রয়েছে। যেমন –
- উচ্চশ্রেণির তুলার অভাব – ভারতে উৎপাদিত তুলার অধিকাংশই ক্ষুদ্র আঁশযুক্ত। এখানে উচ্চমানের দীর্ঘ আঁশযুক্ত তুলার চাষ কম হয়। বর্তমানে জলসেচ ব্যবস্থার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে পাঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাট, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ ও কেরলে দীর্ঘ আঁশযুক্ত তুলার চাষ শুরু হয়েছে।
- হেক্টর প্রতি তুলার উৎপাদন কম – মিশর, সুদান, পাকিস্তান প্রভৃতি দেশের তুলনায় ভারতে হেক্টর প্রতি তুলার উৎপাদন কম।
- আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির অভাব – উন্নত কৃষি পদ্ধতি ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রয়োগ কম হওয়ায়, ভারতে তুলা চাষ বেশি উন্নতি লাভকরেনি।
- বিভিন্ন প্রকার পোকার উপদ্রব – ভারতে তুলা চাষের প্রধান সমস্যা হল বিভিন্ন ধরনের পোকার আক্রমণ। বলউইভিল নামক পোকার আক্রমণ তুলা চাষের ব্যাপক ক্ষতি করে।
- সঠিক বিপণন ব্যবস্থার অভাব – ভারতবর্ষে তুলার সঠিক বিপণন ব্যবস্থা না থাকায় চাষিরা তুলা চাষে খুব বেশি আগ্রহী নন। মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট প্রভৃতি রাজ্যে তুলা চাষের অনুকূল পরিবেশ থাকলেও সেখানকার তুলা চাষিরা সঠিক বিপণন মূল্য না পাওয়ায় তুলা চাষে তেমন উৎসাহী নন।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
ভারতে তুলা চাষের প্রধান সমস্যাগুলি কী কী?
ভারতে তুলা চাষের প্রধান সমস্যাগুলির মধ্যে রয়েছে —
1. উচ্চমানের (দীর্ঘ আঁশযুক্ত) তুলার অভাব।
2. হেক্টর প্রতি কম উৎপাদন।
3. আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির অভাব।
4. পোকামাকড়ের আক্রমণ (বিশেষত বলউইভিল পোকা)।
5. সঠিক বিপণন ব্যবস্থার অভাব।
ভারতে তুলার উৎপাদন কম হওয়ার কারণ কী?
ভারতে তুলার উৎপাদন কম হওয়ার কারণগুলি হলো —
1. অধিকাংশ তুলা ক্ষুদ্র আঁশযুক্ত, যা কম মূল্যবান।
2. উন্নত কৃষি প্রযুক্তির অভাব।
3. সেচের অপ্রতুলতা ও অনিয়মিত বৃষ্টিপাত।
4. পোকামাকড় ও রোগবালাইয়ের আক্রমণ।
ভারতে উচ্চমানের তুলার চাষ কোথায় হয়?
পাঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাট, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ ও কেরলে উন্নতমানের দীর্ঘ আঁশযুক্ত তুলার চাষ হয়।
তুলা চাষে পোকামাকড়ের প্রভাব কতটা ক্ষতিকর?
তুলা চাষে বলউইভিল, স্পোডোপ্টেরা (হেলিকোভারপা) প্রভৃতি পোকার আক্রমণ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে, যা উৎপাদন কমিয়ে দেয় এবং কৃষকের আর্থিক ক্ষতি ঘটায়।
তুলা চাষে বিপণন ব্যবস্থার সমস্যা কী?
ভারতে তুলা চাষিদের প্রায়ই ন্যায্য মূল্য পাওয়া যায় না। মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ ও গুজরাটের মতো রাজ্যগুলিতে বিপণন ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ায় কৃষকরা তুলা চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন।
তুলা চাষের উন্নতির জন্য কী করা উচিত?
তুলা চাষের উন্নতির জন্য প্রয়োজন —
1. উচ্চ ফলনশীল ও রোগ প্রতিরোধী বীজের ব্যবহার।
2. আধুনিক সেচ ও কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার।
3. সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা (IPM) প্রয়োগ।
4. সরকারি সহায়তা ও ভালো বিপণন ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
তুলা চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী জলবায়ু কী?
তুলা চাষের জন্য উষ্ণ ও শুষ্ক জলবায়ু (20°-30°C) প্রয়োজন, তবে পর্যাপ্ত সেচের ব্যবস্থা থাকতে হবে। ভারতে গুজরাট, মহারাষ্ট্র ও তেলেঙ্গানায় তুলা চাষের জন্য উপযুক্ত জলবায়ু রয়েছে।
তুলা চাষে জিএম (জিনগতভাবে পরিবর্তিত) বীজের ভূমিকা কী?
বিটি (Bt) তুলার মতো জিএম বীজ পোকামাকড় প্রতিরোধী, যা উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। তবে কিছু পরিবেশগত ও স্বাস্থ্যগত উদ্বেগ রয়েছে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ভারতে তুলা চাষের সমস্যাগুলি লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের কৃষি” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন