অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – বনভোজনের ব্যাপার

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের বনভোজনের ব্যাপার অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে বনভোজনের ব্যাপার অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় বনভোজনের ব্যাপার অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই বনভোজনের ব্যাপার অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

এই গল্পটি নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় রচিত একটি হাস্যরসাত্মক গল্প। গল্পটিতে বর্ণিত হয়েছে বন্ধুদের একটি দলের বনভোজনের ঘটনা। বন্ধুরা বনভোজনে যাওয়ার জন্য অনেক আয়োজন করে। কিন্তু বনভোজনে গিয়ে তাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বৃষ্টি, পতঙ্গের উপদ্রব, খাবার নষ্ট হওয়া ইত্যাদি সমস্যার কারণে তাদের বনভোজন তেমন আনন্দদায়ক হয় না।

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় রচিত “পটলডাঙার টেনিদা” বাংলা সাহিত্যের এক অসাধারণ সৃষ্টি। টেনিদা চরিত্রটি শুধু শিশু-কিশোরদের কাছেই নয়, সকল বয়সের পাঠকের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়।

টেনিদা একজন মজাদার, পেটুক এবং অল্পসাহসী ছেলে। তার বীরত্বকাহিনী শুনে পাঠকেরা মুগ্ধ হলেও, পরে বুঝতে পারে যে তার বেশিরভাগ বীরত্বই মিথ্যা। এই মিথ্যা বীরত্বকাহিনী এবং টেনিদার অদ্ভুত রসবোধই পাঠকদের মনে আনন্দের সঞ্চার করে।

বনভোজনের পরিকল্পনা, যাত্রাপথের বর্ণনা এবং বাগানবাড়িতে পৌঁছে টেনিদা ও তার বন্ধুদের দুষ্টুমি – এই সবকিছুই অত্যন্ত জীবন্তভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে গল্পে। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের সরস বর্ণনার মাধ্যমে পাঠক যেন সরাসরি সেই বনভোজনে অংশগ্রহণ করছে বলে মনে হয়।

“পটলডাঙার টেনিদা” শুধু একটি মজার গল্পই নয়, এটি বন্ধুত্ব, সাহস এবং সততার মতো মূল্যবোধেরও শিক্ষা দেয়। রসসমৃদ্ধ এবং চিত্তগ্রাহী বর্ণনার জন্য এই গল্পটি বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ হয়ে থাকবে।

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – বনভোজনের ব্যাপার

বনভোজনের ব্যাপার অধ্যায়ের লেখক পরিচিতি

বিংশ শতকের বাংলা উপন্যাস ও ছোটোগল্পের বিশিষ্ট লেখক নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে দিনাজপুরের বালিয়াডাঙ্গিতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁদের আদি নিবাস বাংলাদেশের বরিশালের বাসুদেবপাড়া। তাঁর আসল নাম তারকনাথ, কিন্তু নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় নামে লেখা শুরু করেন এবং এই নামেই পরিচিত হন। ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে এমএ পাস করেন। বাংলা সাহিত্যে ছোটোগল্প বিষয়ে গবেষণার জন্য ডিলিট উপাধি পান। কলকাতার সিটি কলেজে কিছুদিন অধ্যাপনার পর কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার কাজে যোগ দেন এবং অল্পদিনেই কৃতি অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। ছাত্রজীবনে কবিতা রচনায় ব্রতী হলেও পরে গল্প, উপন্যাস, নাটক প্রভৃতি রচনায় বিশিষ্টতার পরিচয় দেন। সমালোচনা ও সাংবাদিকতায় কৃতিত্ব দেখান। ‘বসুমতি’ পত্রিকার পক্ষ থেকে সংবাদসাহিত্যের জন্য প্রথম পুরস্কার পান। পরে ‘দেশ’ পত্রিকায় নিয়মিত ‘সুনন্দ’ ছদ্মনামে মজাদার রচনায় পাঠকহৃদয় জয় করেন। কয়েকটি চিত্রনাট্য রচনাতেও তাঁর কৃতিত্বের পরিচয় আছে। তাঁর ‘উপনিবেশ’ (তিন খণ্ড), ‘বীতংস’ (গল্পগ্রন্থ), ‘সূর্যসারথি’, ‘তিমিরতীর্থ’, ‘আলোর সরণি’, ‘শিলালিপি’, ‘বৈতালিক’, ‘ইতিহাস’, ‘একতলা’, ‘পদসঞ্চার’, ‘সম্রাট ও শ্রেষ্ঠী’ প্রভৃতি রচনাকর্ম বাংলা সাহিত্যের সম্পদ। ছোটোদের জন্য টেনিদার কীর্তি সমন্বিত রচনাগুলি সমস্ত শ্রেণির পাঠককে মুগ্ধ করে। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের ৮ নভেম্বর তাঁর লোকান্তর ঘটে।

বনভোজনের ব্যাপার অধ্যায়ের উৎস

বনভোজনের ব্যাপার গল্পটি ‘টেনিদা সমগ্র’ গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত।

বনভোজনের ব্যাপার অধ্যায়ের পাঠপ্রসঙ্গ

বাংলা সাহিত্যে অসাধারণ সৃষ্টি পটলডাঙার টেনিদা চরিত্র।। এই চরিত্র নির্মাণের মধ্য দিয়ে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় অমরত্ব পেয়েছেন। সমস্ত শ্রেণির পাঠক তথা শিশু ও কিশোরদের কাছে ভীষণ প্রিয় এই চরিত্রটি। মজাদার, পেটুক এবং দুঃসাহস দেখানোর প্রয়াস-তা যে যথার্থ নয়-সেটা যখন বোঝা যায়, তখন পাঠকচিত্ত অনাবিল আনন্দে ভরে যায়। বনভোজনের পরিকল্পনা, যাত্রাপথের বর্ণনা এবং বাগানবাড়িতে পৌঁছোনোর পর কীভাবে বনভোজন ফলভোজনে সমাপ্ত হল-তার জীবন্ত চিত্র অঙ্কিত। সরস বর্ণনার গুণে গল্পটি শেষ হয়েও শেষ না হওয়ার রেশ থেকে যায়। এজন্য পাঠ্যগল্পটি রসসম্পৃক্ত ও চিত্তগ্রাহী সম্পদ হয়ে থাকবে।

বনভোজনের ব্যাপার অধ্যায়ের বিষয়সংক্ষেপ

হাবুল সেন, টেনিদা, ক্যাবলা বনভোজনের রান্নার আলোচনায় তৎপর ছিল। হাবুল কয়েকটি ভালো খাবারের প্রসঙ্গ তুললে ভোজনরসিক টেনিদার উৎসাহের অবধি নেই। বক্তা প্যালা অতি সাধারণমানের প্রতিদিনের জীবনযাপনের মতো রান্নার প্রসঙ্গ উত্থাপন করলে টেনিদা ক্রুদ্ধ হয় এবং ক্যাবলার বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হাবুল তৎপর হয় এবং আলোচনার মধ্য দিয়ে ঠিক হয়-পিকনিকের জন্যে ভালো রান্না না হলে চলে না।

খরচের বহর দেখে আলোচনা বাতিল হয় এবং শেষপর্যন্ত চড়ুইভাতিতে খিচুড়ির পরিকল্পনা অনুযায়ী কে কী আনবে তা চূড়ান্ত হয়। খিচুড়ির সঙ্গে ডিমভাজা ভীষণ জমবে এবং রাজহাঁসের বড়ো ডিম আনার দায়িত্ব পড়ে প্যালার উপর। পরে ভন্টাদের বাড়ি থেকে ডিম আনতে গিয়ে প্যালা রাজহাঁসের ঠোক্কর খেয়ে পালিয়ে আসে। পরের দিন সকালে মার্টিন রেলে শ্যামবাজার স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু হয়, কিন্তু টেনিদার জারিজুরিতে লেডিকেনির হাঁড়ি শেষ হয়ে যায়। যাত্রাপথের নানা সংকটের কারণে মাদ্রাজি হাঁসের ডিম ভেঙে শেষ হয়। আচারের অবস্থাও তথৈবচ এবং রসগোল্লার হাঁড়ি যায় ভেঙে। সব আয়োজন পণ্ড হয়ে যায়।

নির্দিষ্ট বাগানে পৌঁছে শুরু হয় রান্নার আয়োজন। টেনিদা নিজে কাজ করে না, বরং সকলকে ফরমাশ করিয়ে কাজ হাসিল করে। কাঁচা তেলে মাছ দেওয়ায় মাছ ভেঙে শেষ। বাগানের গাছে পাকা জলপাই দেখে সবাই লোভাসক্ত হয়ে ওঠে। কাঁঠাল গাছের মাথায় বাঁদরের দল দেখা যায়। রান্নার আয়োজন সম্পূর্ণ হয়ে ওঠে না। বেলা বেড়ে যাওয়ায় সবাই ভীষণ ক্ষুধার্ত। পুকুরের ঘাটে চারজন শোকার্ত হয়ে বসে থাকে এবং চড়ুইভাতির চারটে বেজে যায় অর্থাৎ সর্বাংশ পণ্ড হয়। পরিশেষে প্যালা বাগানের জলপাই পাকার সংবাদ দিলে ক্ষুধার্ত টেনিদার নেতৃত্বে সবাই পাকা জলপাই-এর সন্ধানে ছুটে যায়।

বনভোজনের ব্যাপার অধ্যায়ের নামকরণ

সাহিত্যের সমস্ত শাখায় নামকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নামকরণে সাহিত্যকর্মের গভীর বিষয়টি পাঠকের ভাবনায় এসে যায় এবং পাঠক বিষয়ের গভীরে সহজে প্রবেশ করতে পারে। বনভোজন বা পিকনিকের আলোচনা থেকে শুরু করে অর্থের অভাবে ভীষণ ভালো ভালো রান্না থেকে সরে সাধারণভাবে আনন্দ উপভোগের প্রয়াস গল্পে আছে। যুক্তি-তর্ক-বিবেচনা ইত্যাদি নিয়েই কাহিনি বর্ণিত। টেনিদার অদ্ভুত ভাবনায় সঙ্গীদের মধ্যে তৎপরতা শুরু হয়। বনভোজনের জন্য নির্দিষ্ট দিনে শ্যামবাজার থেকে মার্টিন রেলে বাগুইআটি পেরিয়ে চারটে স্টেশন পরে এক বাগানবাড়িতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। প্যালার রাজহাঁসের ডিম সংগ্রহের প্রয়াস, রাজহাঁসের কামড় খাওয়া এবং ট্রেন থেকে নেমে যাত্রাপথে নানা সংকট, কীভাবে অতিক্রম হয়-তা ভেবে মজার পরিবেশ তৈরি হয়। বনভোজনের আনন্দ পাওয়ার অভিপ্রায়ের সম্মিলিত প্রয়াসে গল্পের পরিণতিতে দেখা যায়, খিচুড়ি রান্নার আয়োজন শুরু হয়। হাবুল, প্যালা বাগানের পাকা জলপাই খেয়ে ক্ষুধা নিবৃত্তি করে। পরে টেনিদার খিচুড়ি রান্নার কথা মনে পড়ায় দ্রুত এসে দেখে যায় একটা গোদা বাঁদর নারকেল গাছে হেলান দেওয়া ঘুমন্ত টেনিদার পিঠ চুলকে দিচ্ছে। আর চার-পাঁচটা বাঁদর মুঠো মুঠো চাল-ডাল মুখে পুরছে। চিৎকার করলে বাঁদরগুলো চাল-ডাল-আলুর পুঁটলি নিয়ে কাঁঠাল গাছের মাথায় উঠে যায়। বনভোজন আর হয় না, শোকাহত সবাই খিদের হাত থেকে বাঁচতে পাকা জলপাই-এর সন্ধানে ছুটে যায়। বনভোজনের প্রচেষ্টা এবং তার নির্মম পরিণতির দিক গল্পে বর্ণিত হওয়ায় নামকরণটি যথার্থ সার্থক-তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

বনভোজনের ব্যাপার অধ্যায়ের শব্দার্থ ও টীকা

পোলাও – ভালো চাল ও ঘি ইত্যাদি দিয়ে তৈরি একপ্রকার খাবার। ডিমের ডালনা – ডিম দিয়ে তৈরি একপ্রকার সুস্বাদু পদ। কালিয়া – মাছ দিয়ে তৈরি একপ্রকার মশলাদার মুখরোচক রান্না। মাংসের কোর্মা – মাংস দিয়ে তৈরি এক বিশেষ প্রকার রান্না। মাংসকে মশলাদার করে রন্ধন করা হয়। নোলা – জিভ; লালসা; লোভ। মুর্গ মুসল্লম – ‘মুর্গ’ ফারসি শব্দ। মুরগির কারি রান্নাকে বলা হয়। বিরিয়ানি – ‘পল’ অর্থাৎ মাংস মেশানো ভাতকে বিরিয়ানি বলে। মশলদা দোসে – মশলা ধোসা। সামি কাবাব – মাংস দিয়ে তৈরি একপ্রকার পদ। এ ক্ষেত্রে মাংসকে পুড়িয়ে সুস্বাদু করা হয়। শুক্তো – কাঁচাকলা, পেঁপে, উচ্ছে প্রভৃতি সহযোগে প্রস্তুত তিক্তস্বাদ ব্যঞ্জনবিশেষ। বাটি চচ্চড়ি – বাটির মধ্যে তৈরি একপ্রকার তরকারি। কুমড়োর ছোকা – এক বিশেষ প্রকার ব্যঞ্জন। গাঁদাল – গন্ধযুক্ত একপ্রকার গাছের পাতা। বাসক পাতা – বাসক পাতা সর্দির পক্ষে ভীষণ উপকারী। এর রস মধু মিশিয়ে খেলে সর্দিকাশিতে খুব উপকার হয়। কুঁদরু – পটলের মতো দেখতে এক ধরনের ছোটো সবজি। ঠেকুয়া – ছাতু দিয়ে তৈরি বিস্কুটের মতো দেখতে একপ্রকার খাবার। পিকনিক – চড়ুইভাতি। চৈইত্যা – চটে (পূর্ববঙ্গের উচ্চারণ)। যাইত্যাছ – যাচ্ছ (পূর্ববঙ্গ বা বাংলাদেশের উচ্চারণ)। পোলাপান – ছেলে। গাড়ল – বোকা; মূর্খ। নিসিন্দ – সন্তুষ্ট। ঠাট্টা – মজা বা কৌতুক পরিবেশন। বিচ্ছিরি – বাজে। বেরসিক – রস নেই যার বা নীরস। বাবুর্চি – যিনি রান্না করেন। জুতসই – ঠিকমতো বা যথার্থ। গালপাট্টা – চাপদাড়ি; দুই গালজোড়া দাড়ি। হাতসাফাই – হাতের কৌশল। লেডিকেনি – একপ্রকার মিষ্টান্ন। জানা যায়, লর্ড ক্যানিং-এর স্ত্রী বাংলায় এলে তাঁর সম্মানে একপ্রকার মিষ্টান্ন তৈরি হয়। ক্যানিং-এর স্ত্রীর সম্মানে নির্মিত রসময় মিষ্টান্নটি পরে লেডিকেনি নামে পরিচিত হয় বাঙালিদের কাছে। লিস্টি – তালিকা। হাঁড়িমুখ – গোমড়ামুখ বা বিরক্তিপূর্ণ মুখ। সাবাড় – শেষ বা সমাপ্ত। ডাঁট – অহংকার। রীতিমতো – পর্যাপ্ত; যথেষ্ট। রাজকীয় – রাজার মতো বা বিলাস সমন্বিত। চালিয়াতি – ফন্দিবাজি। ব্যাজার – বিরক্ত। গেরো – বিপদ। পাকড়ালাম – ধরলাম। খলিফা – ওস্তাদ। সাবড়ে – শেষ করে। খুপরি – ছোটো কক্ষ বা ঘর; খোপ। বদখত – বিশ্রি; কুৎসিত আকৃতির। ফেরেববাজ – ধাপ্পাবাজ; জোচ্চোর। ভাঁড়ারঘর – ভাণ্ডার; যেখানে খাবার ও অন্যান্য রান্নার জিনিস মজুত করা হয়। সাফ – পরিষ্কার। সাবাড় – শেষ; সমাপ্ত। পুঁটলি – গাঁঠরি; কাপড়ে বাঁধা দ্রব্যসমূহ। কুঁকড়ে – সংকুচিত হয়ে। পণ্ড – বরবাদ; শেষ। আচার – তেল-সরষে দিয়ে জারিত আম বা অন্যান্য ফল। সান্ত্বনা – আশ্বাস। দ্রাক্ষাফল – আঙুর ফল। খাট্টা – টক। অষ্টরম্ভা – অলীক বস্তু; ফাঁকি। কলম্বাস – একজন প্রসিদ্ধ ইউরোপীয় নাবিক। ইনি ‘আমেরিকা’, ‘ত্রিনিদাদ’ প্রভৃতি আবিষ্কার করেন। অমৃত – ভীষণ সুস্বাদু অর্থে ব্যবহৃত। ঊর্ধ্বশ্বাসে – শ্বাস উপরে তুলে; এখানে ভীষণ দ্রুত চলে যাওয়া অর্থে ব্যবহৃত। পাষাণ – পাথর এখানে নিষ্ঠুর অর্থে ব্যবহৃত। মন্ত্রমুগ্ধ – আচ্ছন্ন; সম্মোহিত। আরাম – প্রশান্তি। গোদা – ভীষণ মোটা অর্থে ব্যবহার করা হয়। তরিবত – ভীষণ যত্নের সঙ্গে। শোকসভা – শোক প্রকাশের সভা (এখানে নিস্তব্ধতা অর্থে ব্যবহৃত)। স্তব্ধ – শব্দহীন। অগত্যা – অন্য উপায় না থাকায়। ইউরেকা – আবিষ্কারের আনন্দজনিত উল্লাসধ্বনি।

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের সৃষ্ট টেনিদা চরিত্র বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ। শিশু, কিশোর, প্রাপ্তবয়স্ক – সকলেরই মন জয় করে নিয়েছে এই অসাধারণ চরিত্র। টেনিদার মজাদার গল্প, অফুরন্ত পেটুকিমি এবং দুঃসাহসের ভান – সব মিলিয়ে পাঠকদের মনে গেঁথে যায় এক অমলিন আনন্দের সঞ্চার।

বনভোজনের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে যাত্রাপথের বর্ণনা, বাগানবাড়িতে পৌঁছানোর পরের ঘটনা – সবকিছুই জীবন্ত চিত্রের মতো ফুটে ওঠে গল্পে। সরস বর্ণনার মাধ্যমে পাঠকদের মনে টেনিদা ও তার বন্ধুদের অভিযানের ছবি অঙ্কিত হয়।

এই গল্প শুধু একটি বনভোজনের বর্ণনা নয়, বরং বন্ধুত্ব, সাহস, এবং আনন্দের এক অমূল্য সংমিশ্রণ। টেনিদা চরিত্রের মাধ্যমে লেখক তুলে ধরেছেন জীবনের নানা দিক, যা পাঠকদের মনে দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলে।

সুতরাং, বলা যায়, ‘পটলডাঙার টেনিদা’ কেবল একটি গল্প নয়, বরং বাংলা সাহিত্যের এক অমর সৃষ্টি, যা পাঠকদের মনে চিরকাল বিদ্যমান থাকবে।

Share via:

মন্তব্য করুন