আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘মিশন নির্মল বাংলা অভিযান‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করব। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় এই রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। একবার ভালোভাবে আয়ত্ত করলে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি — যেকোনো ক্লাসের পরীক্ষাতেই তোমরা এই রচনার প্রশ্নের উত্তর সহজেই লিখতে পারবে!

মিশন নির্মল বাংলা অভিযান সম্পর্কে একটি প্রবন্ধ রচনা করো।
[রচনা সংকেত – ভূমিকা, শুরুর কথা, কর্মসূচি, বাস্তবায়ন, উপসংহার]
ভূমিকা –
জীবন শুধুই আপন গতিতে চলা একটা নদী নয়। জীবন আসলে এক ‘হয়ে ওঠা’। যত্ন দিয়ে, পরিচর্যা দিয়ে গড়ে তোলা এক নির্মাণ। ‘নির্মল বাংলা অভিযান’ এই সার্থক জীবন গড়ার জন্য এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
শুরুর কথা –
2014 সালের 15 আগস্ট কেন্দ্রীয় সরকার স্বচ্ছ ভারত অভিযানের ঘোষণা করেছিল। এই অভিযানের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছিল ওই বছরেরই 2 অক্টোবর। এই প্রকল্পকে ভিত্তি করেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিজেদের মতো করে চালু করেছে ‘নির্মল বাংলা অভিযান’। মূলত এক স্বচ্ছ পরিবেশ গড়ে তোলাই ছিল লক্ষ্য। গ্রামীণ এলাকায় সুস্থ জীবন নিশ্চিত করাও ছিল উদ্দেশ্য। শিশুমৃত্যু এবং শিশুর অসুস্থতা কমানোও ছিল এই অভিযানের প্রাথমিক লক্ষ্য। তারজন্য উন্মুক্ত শৌচকর্ম বন্ধ করা দরকার। হাত ধোয়ার মতো পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস গড়ে তোলা দরকার। বর্জ্য পদার্থের ভালো ব্যবস্থা করা দরকার। এই সবকিছুই এই কর্মসূচির আওতায় আনা হয়। যুগ যুগ ধরে চলে আসা অভ্যাসের বিরুদ্ধে নির্মল বাংলা অভিযান এক কঠিন লড়াই।
কর্মসূচি –
নির্মল বাংলা অভিযানের প্রধান লক্ষ্যই হল উন্মুক্ত শৌচালয় ব্যবহার বন্ধ করা। “শৌচাগারে শৌচ করবো/স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলব।” -এই স্লোগানকে সামনে রেখে কাজ করা হয়। প্রত্যেক পরিবার যাতে নিজস্ব শৌচালয় পায়, তা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। প্রত্যেক স্কুল-কলেজে ছাত্রছাত্রীদের জন্য আলাদা শৌচালয় গড়ে তোলাও লক্ষ্য। সেই শৌচালয় ব্যবহার করাও নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি নির্দেশে বলা হয়েছে, সব অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শৌচালয় বানাতে হবে। বাচ্চাদের তা ব্যবহার করতে শেখাতে হবে। এলাকাভিত্তিক শৌচালয়ও বানাতে হবে। এই শৌচালয় গৃহহীন, পথচারী এবং রাস্তায় কাজ করা মানুষের জন্য। বাজার, হাট, বাস স্ট্যান্ড ইত্যাদি জায়গাতেও শৌচালয় বানাতে হবে। পরিষ্কার জলের ব্যবস্থা করাও লক্ষ্য। স্কুলে স্কুলে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলাও লক্ষ্য।
বাস্তবায়ন –
পশ্চিমবাংলায় নির্মল বাংলা অভিযান প্রকল্প দ্রুত সাফল্য পাচ্ছে। 2014 সালেই নদিয়া জেলাকে মুক্ত শৌচালয়হীন জেলা ঘোষণা করা হয়েছে। মাত্র 18 মাসে সেখানে 3,47,000 শৌচালয় বানানো হয়েছে। হুগলি, হাওড়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ইত্যাদি জেলাতেও প্রকল্পের উন্নতি ভালো। মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি ব্লকের আপ্লেসি গ্রামকে মুক্ত শৌচালয়হীন গ্রাম বানানো হয়েছে। বীরভূমের খয়রাশোল গ্রাম পঞ্চায়েতে স্বনির্ভর গোষ্ঠী উদ্যোগ নিয়েছে। গ্রামবাসীদের শৌচালয় বানানোর জন্য জমি দেওয়া হয়েছে। এভাবে জনসচেতনতা বাড়ছে। নির্মল বাংলা গড়ার লক্ষ্যে মানুষ এগিয়ে আসছে।
উপসংহার –
আধুনিকতা আর প্রগতি আসে মানুষের চেতনা থেকে। সুস্থ ও সচেতন জাতি ছাড়া প্রগতি অসম্ভব। ‘নির্মল বাংলা অভিযান’ এই লক্ষ্যে এক রক্তপাতহীন যুদ্ধ। আগামী প্রজন্মকে এক সুস্থ ও সুন্দর পৃথিবী দেওয়াই তার লক্ষ্য।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘মিশন নির্মল বাংলা অভিযান‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করেছি। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় ‘মিশন নির্মল বাংলা অভিযান‘ রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন