এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “চিত্রসহ একটি সরল ক্যামেরার গঠন বর্ণনা করো ও প্রতিবিম্ব গঠনের রেখাচিত্র প্রদর্শন করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “চিত্রসহ একটি সরল ক্যামেরার গঠন বর্ণনা করো ও প্রতিবিম্ব গঠনের রেখাচিত্র প্রদর্শন করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের পঞ্চম অধ্যায় “আলো“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

চিত্রসহ একটি সরল ক্যামেরার গঠন বর্ণনা করো ও প্রতিবিম্ব গঠনের রেখাচিত্র প্রদর্শন করো।
সরল ক্যামেরা –
একটি সরল ক্যামেরা নিম্নলিখিত অংশের সমন্বয়ে গঠিত –

- আলো নিরুদ্ধ প্রকোষ্ঠ – কাপড় বা চামড়ার তৈরি এই প্রকোষ্ঠটি এমনভাবে তৈরি যাতে প্রয়োজনমতো ক্যামেরার বাক্সের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি বা হ্রাসের জন্য কাপড় বা চামড়াতে কয়েকটি ভাঁজ দেওয়া থাকে। এর মধ্যে আলোর প্রতিফলন বন্ধ করার জন্য কালো রং করা থাকে।
- লেন্স – আলো নিরুদ্ধ প্রকোষ্ঠের সামনে একটি অপেরণমুক্ত অভিসারী লেন্স সমবায় (L) বসানো থাকে যা লক্ষ্যবস্তুর সদ্, অবশীর্ষ ও ক্ষুদ্র প্রতিবিম্ব গঠন করে।
- ডায়াফ্রাম বা স্টপ – ক্যামেরার ডায়াফ্রামের সাহায্যে লেন্সের উন্মেষের পরিবর্তন ঘটানো যায়। কয়েকটি ধাতব পাত দিয়ে এই ছিদ্রযুক্ত পর্দা তৈরি করা হয় এবং ছিদ্রটির ব্যাসকে লেন্সের ফোকাস দৈর্ঘ্যের ভগ্নাংশে প্রকাশ করা হয় যাকে লেন্সের f-সংখ্যা বলে।
- শাটার – এর সাহায্যে ক্যামেরার মধ্যে আলোকরশ্মির প্রবেশের সময় নিয়ন্ত্রণ করা হয়। কম আলোয় ছবি তুলতে হলে আলোক সম্পাতের সময় বাড়াতে হয় এবং উজ্জ্বল আলোর মধ্যে আলোক সম্পাতের সময় খুব অল্প হলেও চলে।
- পর্দা – ক্যামেরার আলোকনিরুদ্ধ বাক্সের যে দিকে লেন্স থাকে তার বিপরীত দিকের প্রান্তে পর্দা রাখা হয়। এটি ঘষা কাচের তৈরি হয়। সরল ক্যামেরার ক্ষেত্রে পর্দার ওপর স্পষ্ট প্রতিবিম্ব দেখার পরেই ক্যামেরায় ফোটোগ্রাফিক প্লেট বসানো হয়।
- ফোটোপ্লেট বা ফিল্ম – এটি একটি কাচের প্লেট যার ওপর সিলভার ব্রোমাইডের একটি অবদ্রবের আস্তরণ দেওয়া থাকে। এটি আলোকসংবেদী রাসায়নিক পদার্থ যার ওপর বস্তু থেকে আগত আলোকরশ্মি আপতিত হলে প্লেটের সিলভার ব্রোমাইডের রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে ও নেগেটিভ ছবি তৈরি হয়।
- স্লাইড – এটি একটি কাঠের চ্যাপটা বাক্স যাতে একটি মুখ রাখা হয় এবং আলোকনিরুদ্ধ এই বাক্সে ফোটোপ্লেট রেখে মুখটি একটি চলনক্ষম শাটারের সাহায্যে বন্ধ করা হয়। ছবি তোলার সময় শাটার সরানো থাকে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
সরল ক্যামেরা কী?
সরল ক্যামেরা হল একটি মৌলিক আলোক যন্ত্র যা একটি অভিসারী লেন্স ও আলোকনিরুদ্ধ প্রকোষ্ঠের সাহায্যে বস্তুর সদ্, অবশীর্ষ ও ক্ষুদ্র প্রতিবিম্ব গঠন করে।
সরল ক্যামেরার প্রধান অংশগুলি কী কী?
সরল ক্যামেরার প্রধান অংশগুলি হল –
1. আলোকনিরুদ্ধ প্রকোষ্ঠ,
2. অভিসারী লেন্স,
3. ডায়াফ্রাম বা স্টপ,
4. শাটার,
5. পর্দা (ঘষা কাচ),
6. ফোটোপ্লেট বা ফিল্ম,
7. স্লাইড।
লেন্সের কাজ কী?
লেন্স বস্তু থেকে আগত আলোকরশ্মিকে অভিসৃত করে পর্দার উপর স্পষ্ট প্রতিবিম্ব গঠন করে।
সরল ক্যামেরার ডায়াফ্রাম বা স্টপ কীভাবে কাজ করে?
ডায়াফ্রাম লেন্সের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করা আলোর পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। এটি লেন্সের f-সংখ্যা দ্বারা প্রকাশিত হয়।
সরল ক্যামেরায় শাটার কেন গুরুত্বপূর্ণ?
শাটার ক্যামেরায় আলোক প্রবেশের সময় নিয়ন্ত্রণ করে। কম আলোয় বেশি সময় এবং উজ্জ্বল আলোয় কম সময় আলো প্রবেশ করতে দেওয়া হয়।
সরল ক্যামেরায় পর্দা কীভাবে ব্যবহার করা হয়?
ঘষা কাচের পর্দায় প্রতিবিম্ব ফেলা হয় এবং স্পষ্ট প্রতিবিম্ব দেখা হলে ফোটোপ্লেট বসানো হয়।
সরল ক্যামেরায় ফোটোপ্লেট কীভাবে কাজ করে?
ফোটোপ্লেট সিলভার ব্রোমাইড দ্বারা আবৃত থাকে যা আলোর সংস্পর্শে এসে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে নেগেটিভ ছবি তৈরি করে।
সরল ক্যামেরায় প্রতিবিম্বের বৈশিষ্ট্য কী?
সরল ক্যামেরায় প্রতিবিম্বের বৈশিষ্ট্য হল প্রতিবিম্ব সদ্ (বাস্তব), অবশীর্ষ (উল্টো) ও বস্তুর চেয়ে ছোট হয়।
সরল ক্যামেরা ও ডিজিটাল ক্যামেরার পার্থক্য কী?
সরল ক্যামেরা ও ডিজিটাল ক্যামেরার পার্থক্য হল –
1. সরল ক্যামেরায় ফিল্ম ব্যবহার করা হয়, ডিজিটাল ক্যামেরায় সেন্সর।
2. সরল ক্যামেরায় প্রতিবিম্ব সরাসরি দেখা যায় না, ডিজিটাল ক্যামেরায় স্ক্রিনে দেখা যায়।
সরল ক্যামেরার ব্যবহার কোথায় হয়?
মৌলিক আলোক শিক্ষা, ফোটোগ্রাফির প্রাথমিক ধারণা প্রদর্শন এবং ঐতিহাসিক ফোটোগ্রাফিতে ব্যবহার হত।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “চিত্রসহ একটি সরল ক্যামেরার গঠন বর্ণনা করো ও প্রতিবিম্ব গঠনের রেখাচিত্র প্রদর্শন করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “চিত্রসহ একটি সরল ক্যামেরার গঠন বর্ণনা করো ও প্রতিবিম্ব গঠনের রেখাচিত্র প্রদর্শন করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের পঞ্চম অধ্যায় “আলো“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন