γ-রশ্মি ও X-রশ্মির তুলনা করো।

Souvick

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “γ-রশ্মি ও X-রশ্মির তুলনা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “γ-রশ্মি ও X-রশ্মির তুলনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

γ-রশ্মি ও X-রশ্মির তুলনা করো।

γ-রশ্মি ও X-রশ্মির তুলনা করো।

γ-রশ্মি ও X-রশ্মির সাদৃশ্য –

  • উভয়ই এক প্রকার তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ।
  • উভয়েরই বেগ আলোর বেগের সমান।
  • উভয়ই তড়িৎ ও চৌম্বকক্ষেত্র দ্বারা বিক্ষিপ্ত হয় না।
  • উভয়ই ফোটোগ্রাফিক প্লেটে ক্রিয়া করে ও বেরিয়াম প্ল্যাটিনোসায়ানাইড প্রলেপে পড়ে প্রতিপ্রভার সৃষ্টি করে।
  • উভয়েরই আয়নায়ন ও ভেদন ক্ষমতা আছে।
  • কেলাসের দ্বারা উভয় রশ্মিরই অপবর্তন ঘটানো সম্ভব।

γ-রশ্মি ও X-রশ্মির বৈসাদৃশ্য –

γ-রশ্মিX-রশ্মি
γ-রশ্মি নিঃসরণ পরমাণুর একটি নিউক্লিয় ঘটনা। তেজস্ক্রিয় বিঘটনের দরুন উদ্দীপ্ত দুহিতা নিউক্লিয়াস সুস্থির অবস্থায় ফিরে আসার সময় γ-রশ্মি নিঃসৃত হয়।X-রশ্মি নিঃসরণ পরমাণুর একটি কক্ষীয় ঘটনা। এক কক্ষীয় শক্তিস্তর থেকে অন্য কক্ষীয় শক্তিস্তরে ইলেকট্রনের সংক্রমণের দরুন X-রশ্মি নিঃসৃত হয়।
γ-রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য অপেক্ষাকৃত কম, কম্পাঙ্ক অপেক্ষাকৃত বেশি।X-রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য অপেক্ষাকৃত বেশি, কম্পাঙ্ক অপেক্ষাকৃত কম।
γ-রশ্মির শক্তি অপেক্ষাকৃত বেশি।X-রশ্মির শক্তি অপেক্ষাকৃত কম।
γ-রশ্মির আয়নায়ন ক্ষমতা ও ভেদন ক্ষমতা অপেক্ষাকৃত বেশি।X-রশ্মির আয়নায়ন ক্ষমতা ও ভেদন ক্ষমতা অপেক্ষাকৃত কম।
γ-রশ্মির নিঃসরণ বাহ্যিক প্রভাবের ওপর নির্ভর করে না। এই রশ্মি স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিঃসৃত হয়।X-রশ্মির নিঃসরণ বাহ্যিক প্রভাবের ওপর নির্ভর করে।
ভারী নিউক্লিয়াসের খুব কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় উচ্চ শক্তিসম্পন্ন γ-রশ্মি ইলেকট্রন-পজিট্রন যুগ্ম উৎপাদন করতে পারে।X-রশ্মি তা পারে না।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

γ-রশ্মি এবং X-রশ্মির সবচেয়ে বড় মৌলিক পার্থক্য কী?

তাদের উৎপত্তির স্থান। γ-রশ্মি পরমাণুর নিউক্লিয়াস থেকে নির্গত হয়, সাধারণত তেজস্ক্রিয় ক্ষয়ের সময়। অন্যদিকে, X-রশ্মি পরমাণুর ইলেকট্রন কক্ষপথ বা একটি উচ্চ-শক্তি ইলেকট্রন যখন কোনো লক্ষ্যবস্তুর উপর আঘাত করে তখন নির্গত হয়।

কোন রশ্মির ভেদন ক্ষমতা বেশি এবং কেন?

γ-রশ্মির ভেদন ক্ষমতা বেশি। কারণ এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য অত্যন্ত ছোট এবং শক্তি বেশি হওয়ায় এটি পদার্থের মধ্য দিয়ে সহজেই প্রবেশ করতে পারে। X-রশ্মির তুলনায় সাধারণত এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য অপেক্ষাকৃত বড় ও শক্তি কম থাকে, তাই তার ভেদন ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কম হয়।

γ-রশ্মি এবং X-রশ্মি কি একে অপরের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়?

কিছু ক্ষেত্রে (যেমন ক্যান্সারের রেডিওথেরাপি বা শিল্পে বস্তুর ভিতরে ফাটল বা ত্রুটি দেখা) উভয়ই ব্যবহার করা হয়, তবে তারা সম্পূর্ণরূপে বিনিমেয় নয়। ব্যবহার নির্বাচন করা হয় প্রয়োজনীয় শক্তি, ভেদনক্ষমতা ও নির্গমনের নিয়ন্ত্রণযোগ্যতার ওপর ভিত্তি করে। উদাহরণস্বরূপ, চিকিৎসায় নিয়ন্ত্রিতভাবে X-রশ্মি তৈরি করা γ-রশ্মির চেয়ে সহজ।

কোন রশ্মির আয়নায়ন ক্ষমতা বেশি?

উভয়েরই আয়নায়ন ক্ষমতা আছে, কিন্তু আপেক্ষিকভাবে X-রশ্মি প্রতি একক পাথ দৈর্ঘ্যে বেশি আয়নায়ন করতে পারে। কারণ X-রশ্মি পদার্থের সঙ্গে তুলনামূলক বেশি মিথস্ক্রিয়া করে; γ-রশ্মির শক্তি বেশি হলেও তা পদার্থের মধ্য দিয়ে সহজেই চলে গিয়ে প্রতি একক দূরত্বে কম আয়ন তৈরি করে।

γ-রশ্মি কীভাবে তৈরি করা হয়?

γ-রশ্মি স্বাভাবিকভাবে তেজস্ক্রিয় উপাদান (যেমন ইউরেনিয়াম, রেডিয়াম ইত্যাদি) এর ক্ষয়ে আনে নির্গত হয়। পরীক্ষাগারে এটিকে পারমাণবিক রিঅ্যাক্টর বা কণা ত্বরক (particle accelerator) এর মাধ্যমে উচ্চ-শক্তির নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার ফলস্বরূপও উৎপন্ন করা যায়।

X-রশ্মি কীভাবে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়?

X-রশ্মি সাধারণত একটি X-রশ্মি নলে (X-ray tube) তৈরি করা হয়। এতে একটি ক্যাথোড থেকে নির্গত উচ্চ-গতির ইলেকট্রনকে টাংস্টেনের মতো ধাতব লক্ষ্যবস্তুর উপর ত্বরিত করে আঘাত করানো হয়। সেই সংঘর্ষে ইলেকট্রনের গতিশক্তি X-রশ্মি হিসেবে নির্গত হয়।

কোন রশ্মি ইলেকট্রন–পজিট্রন জোড়া (pair production) তৈরি করতে পারে?

মাত্রা অনুযায়ী শুধুমাত্র উচ্চ-শক্তিসম্পন্ন γ-রশ্মি এমন(pair production) জোড়া তৈরি করতে পারে, এবং তা তখনই সম্ভব যখন γ-ফোটনের শক্তি পর্যাপ্ত বেশি (এবং সাধারণত একটি ভারী নিউক্লিয়াসের খুব কাছ দিয়ে গেলে) যাতে একটি ইলেকট্রন–পজিট্রন জোড়া গঠিত হয়। সাধারণত X-রশ্মির শক্তি এ ধরণের প্রক্রিয়ার জন্য যথেষ্ট থাকে না।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “γ-রশ্মি ও X-রশ্মির তুলনা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “γ-রশ্মি ও X-রশ্মির তুলনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

একটি জৈব যৌগের আণবিক সংকেত C₂H₄O₂। যৌগটি জলে দ্রাব্য এবং যৌগটির জলীয় দ্রবণে NaHCO₃ যোগ করলে CO₂ নির্গত হয়। জৈব যৌগটিকে শনাক্ত করো। জৈব যৌগটির সঙ্গে ইথানলের বিক্রিয়া শর্ত ও সমিত রাসায়নিক সমীকরণসহ লেখো।

C₂H₄O₂ সংকেতের একটি জৈব যৌগ NaHCO₃-এর সাথে CO₂ গ্যাস দেয়। যৌগটি শনাক্ত করো ও ইথানলের সাথে এর বিক্রিয়ার শর্তসহ সমীকরণ দাও।

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণস্থল উল্লেখ করে এর প্রধান কাজগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা করো।

ইনসুলিন হরমোনের প্রধান কাজগুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

হরমোনের ফিডব্যাক নিয়ন্ত্রণ কাকে বলে? উদাহরণসহ হরমোনের ফিডব্যাক নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

প্রাণীদেহের বিভিন্ন কাজ নিয়ন্ত্রণে হরমোনের ভূমিকা সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।

প্রাণী হরমোনের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা করো।